অনলাইন ডেস্ক ॥ সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সুতরাং দেশে টিকার কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, করোনা আনপ্রেডিক্টেবল। কখন যে কোন দিকে মোড় নেবে বলা মুশকিল। কাজেই আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করোনার সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সড়ক মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ মোকাবিলার পরে এখন দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। প্রাণহানি বাড়ছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি স্টাবল, এই কথা বলা যায় না।
তিনি বলেন, সংক্রমণ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। মৃত্যু ৩০, ৩৫ বা ৪০’র কোটায় আছে। করোনা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে করোনা টিকা দিতে পারছে না। তারপরও অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টার কোনও কমতি নেই। ইনশা আল্লাহ অন্যান্য দেশ থেকে সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারবো। সেই ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, টিকার সংকট নিয়ে বিরোধী দল যেটা বলে আসছে সেটা আমাদের সৃষ্টি হবে না।
কাদের বলেন, রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ রূপ নিয়েছে। সেখানে হাসপাতালে অক্সিজেনের এবং বেডের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেটা সরবরাহ করছে। ভারতে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো, সেই অবস্থা আমাদের সৃষ্টি হয় নাই। কারণ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তিনি ঝড়ের সময়ও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। করোনা আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে এটা তার মাথায় আছে। এজন্য তিনি সব বিষয়ে যথাযথ নজর রাখছেন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে আঞ্চলিক লকডাউন দিচ্ছেন। করোনা বিষয়ে সরকারের সচেতনতা এবং সতর্কতা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, তারা আসলে বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করেন।
তিনি আরও বলেন, বাজেটেও প্রণোদনা প্যাকেজ রয়েছে। এই টাকা কোথায় থেকে আসছে? এটা কি বিরোধী দল দিচ্ছে? এটাতো সরকারি কোষাগার থেকে জনগণকে দিচ্ছে সরকারই। আমরা প্রথম ঢেউ অতিক্রম করেছি, দ্বিতীয় ঢেউও অতিক্রম করতে চলেছি। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এতে একজন মানুষও অনাহারে মারা গেছেন বলে আমাদের জানা নেই। সরকার অন্যান্য দেশের তুলনায় সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। এটা বিএনপিকে আর কতটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে এমন প্রশ্ন তোলেন কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না। তারা কানে লাগিয়েছে তুলো। কিছুই শুনতে পায় না। তাদের চোখে ঠুলি। চোখেও দেখতে পায় না। ভালো কিছু তাদের চোখে পড়ে না। শুধু সমালোচনার জন্য দিনরাত বিষোদগার করছে।
তিনি বলেন, ‘টিকা সংকট ও করোনা মোকাবিলা নিয়ে বিএনপি সমালোচনা করলেও সরকার করোনা সংকট মোকাবিলায় যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে। বিএনপি সরকারের ভালো উদ্যোগের প্রশংসা না করে, অকারণে সমালোচনা করছে। কিন্তু এ দুঃসময়ে তারা জনগণের পাশে নেই।’
বিএনপি দেশে গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেওয়ার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে পারে না, তাদের মুখে এটি মানায় না। আন্দোলনের নামে দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’