ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

স্বামী পুলিশ হওয়ায় বিচার পাচ্ছেন না স্ত্রী শিউলী রাণী!

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ১২ এপ্রিল ২০২১

স্বামী পুলিশ হওয়ায় বিচার পাচ্ছেন না স্ত্রী শিউলী রাণী!

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ প্রেমের সম্পর্কের পর আইনগত ভাবে বিয়ে করে ৩ বছর থেকে ঘরসংসার করার পর স্বামী পুলিশ সদস্য যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে স্ত্রী শিউলী রানী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করে বিচারের আশায় এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু পুলিশ স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে স্ত্রী শিউলী নিগৃহিত হচ্ছেন সবখানেই। প্রশাসন স্বামী পুলিশ সদস্য মনোরঞ্জন বর্মনের চাকুরি রক্ষায় ব্যস্ত হলেও স্ত্রী শিউলী রানী নিরুপায় হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে দায়েরকৃত মামলা নম্বর ৯২/২০২। মামলা সুত্রে জানা গেছে, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সাদিশপুর গ্রামের দরিদ্র ব্রজেন্দ্রনাথ বর্মনের মেয়ের সাথে পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলাধীন সদর উপজেলার উৎকুর গ্রামের শান্তিচন্দ্র বর্মনের ছেলে পুলিশ সদস্য মনোরঞ্জন বর্মন চঞ্চলের পে্েরমর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই এক পর্যায় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। চঞ্চলের বিপি নং-৯৪১৩১৬০২৪৪, ব্যাচ নং-১২৮৯। বিয়ের পর থেকেই চঞ্চল শিউলীর পিতার নিকট থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রী ্িশউলিকে চাপ রদিতে শুরু করে। দরিদ্র পিতার নিকট থেকে যৌতুক এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চঞ্চল স্ত্রী শিউলীর ওপর বি্িভন্ন ভাবে শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। যৌতুক না পেয়ে ২০২১ সালের ১৮ মার্চ তার স্ত্রীকে পিতার বাড়িতে রেখে আসে। এর পর থেকে শিউলী রানী বিভিন্ন ভাবে তার স্বামীর সাথে সংসার করার জন্য যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোন সদুত্তর পায়নি। বরং তার স্বামী বা স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাবে তাকে হুমকি প্রদান অব্যাহত থাকে। পরে শিউলী রানী বাঁধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। স্বামী পুলিশ সদস্য হওয়ায় তদন্ত কার্যক্রমকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্তের নামে প্রশাসনের টাল বাহানায় দিশেহারা শিউলী রাণী ও তার দরিদ্র অসহায় মা বাবা। সোমবার বিকেলে এব্যাপারে পুলিশ সদস্য মনোরঞ্জন বর্মনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র জানায়, আদালত প্রথমে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেন। শিউলী রানীর স্বামী একজন পুলিশ সদস্য হওয়ায় মামলার তদন্ত কারী অফিসার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন রির্পোটটি ওই পুলিশ সদস্যের চাকরি রক্ষার্থে তদন্ত রির্পোটটি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের পক্ষেই দাখিল করেন বলে বাদীর অভিযোগ। এর পরে আদালতে নারাজী দিয়ে পূনরায় প্রতিবেদনের আবেদন করেন স্ত্রী শিউলী রানী। সর্বশেষ আদালত বদলগাছী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, উক্ত সহকারী কমিশনার ভুমি শিউলীকে না ডেকেই একতরফাভাবে শুধু পুলিশ সদস্য স্বামী মনোরঞ্জন বর্মন চঞ্চলকে ডেকে নিয়ে তার কথামত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে তদন্তের বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভুমি সুমন জিহাদি সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে স্বামী চঞ্চলের দোষ প্রমানিত হলে তো শিউলীর সংসার করা হবেনা। তার অর্থ তিনি বুঝিয়েছেন শিউলীর পরাজিত হওয়া দরকার। আবার তিনি বলেছেন, চঞ্চল তাকে নিয়ে সংসার করবেনা। যদি চঞ্চল দোষী হয় তাহলে তার চাকুির রক্ষা করা কঠিন হবে। এমন কি এই কর্মকর্তা রহস্যজনকভাবে তাদের বিয়ের সঠিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এখন প্রশাসনের বিভিন্ন মহল থেকে যদি চঞ্চলের চাকুরি রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে হকভাগ্য শিউলীর ভাগ্যে কি ঘটবে? সে প্রশ্নই এখন দেখা দিয়েছে।
×