ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

করোনা সংক্রমণ বাড়ছে ॥ ফের লকডাউনে যাচ্ছে ইউরোপ

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনা সংক্রমণ বাড়ছে ॥ ফের লকডাউনে যাচ্ছে ইউরোপ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ব্রিটেনে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউরোপে সংক্রমণ বাড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ফের লকডাউনে যাচ্ছে ইউরোপ। স্পেনে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় রাজধানী মাদ্রিদের কিছু এলাকায় ফের লকডাউন জারি করা হয়েছে। জার্মানিতেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় সোমবার থেকে লকডাউন তুলে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ভারতে করোনায় একদিনে এক হাজার ২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ডে এক শ’ দিন পর প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মর্ডানা জানিয়েছে, চলতি ২০২০ সালেই তারা দুই কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন বাজারে আনবে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, এএফপি, রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে, স্ট্রেইট টাইমস ও ওয়ার্ল্ডোমিটার ডট ইনফোর। ওয়ার্ল্ডোমিটারের মতে, সারাবিশ্বে শনিবার পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তিন কোটি ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৪ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩২৬ জন হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ৪৩৪৫ জন। এখনও চিকিৎসাধীন আছেন ৭৪ লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ জন। যাদের মধ্যে ৬১ হাজার ৪৬৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১৫ হাজার ১০২ জন। যা একদিনে আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বরেকর্ড। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৪৬৫ জন। এদিকে মার্কিন টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মর্ডানা ঘোষণা দিয়েছে, ২০২০ সাল শেষ হওয়ার আগেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের দুই কোটি ডোজ তৈরির পথে রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ কোটি থেকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তারা। শীঘ্রই মহামারী শেষ হওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। টিকা ও চিকিৎসাকেই কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি টিকার বড় আকারের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। মডার্নার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তারা ২৫ হাজার ২৯৬ জন স্বেচ্ছাসেবীকে টিকা দিয়েছে। তাদের লক্ষ্য ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে টিকাটির পরীক্ষা চালানো। যুক্তরাষ্ট্রকে সবার আগে ১০ কোটি ডোজ টিকা দেয়ার চুক্তি করে রেখেছে মডার্না। এর বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে টিকা সরবরাহের জন্য আলোচনা করে রেখেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সুইজারল্যান্ডের লোনজা গ্রুপ ও স্পেনের ল্যাবরেটরিজ ফার্মাকের সঙ্গে টিকা তৈরিতে কাজ করছে মডার্না। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে দুটি কোম্পানি থেকে সাড়ে তিন কোটি থেকে চার কোটি ডোজ টিকা ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেতে পারে। মডার্নার পক্ষ থেকে জরুরী অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টার কথা বলা হচ্ছে। তাদের টিকা যদি কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কার্যকর হয় তবে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মানুষের ওপর জরুরীভিত্তিতে প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে মডার্নার প্রধান নির্বাহী স্টেফান ব্যানসেল বলেন, তাদের টিকা কার্যকর কি না এর ফলাফল নবেম্বরের মধ্যেই জানা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের হার কমতে থাকায় তাত্ত্বিকভাবে টিকা পরীক্ষার ফল পেতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এফডিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন টিকা যদি কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের কম সুরক্ষা দিতে সক্ষম হয় তবে তার অনুমোদন দেয়া হবে না। শঙ্কিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ॥ ব্রিটিশ সরকারের সায়েন্টিফিক এ্যাডভাইজরি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিজের (স্যেজ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্রিটেনে প্রতিদিন ২ থকে ৭ শতাংশ হারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এই গতি আরও দ্রুততর হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন পরিস্থিতির মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করছে ব্রিটেন। তিনি এ নিয়ে শঙ্কিত। স্যেজের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্রিটিনে এ পর্যন্ত কেবল ৬ শতাংশ মানুষের শরীরে এ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সংক্রমণের হার (আর-ফিগার) ১ দশমিক ১ থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৪ হয়েছে। ওপেন ইউনিভার্সিটির ফলিত পরিসংখ্যানের এমিরেটাস প্রফেসর কেভিন ম্যাকনওয়ে সর্বশেষ ‘আর’ ফিগারকে নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বলে বর্ণনা করেছেন। এ অবস্থায় নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে তাতে এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রীরা। তবে প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেছেন, তারা সবকিছু পর্যালোচনার মধ্যে রাখবেন। অক্সফোর্ডের কাছে ভ্যাক্সিন ম্যানুফ্যাকচারিং ইনোভেশন সেন্টারের অবকাঠামো পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কয়েক সপ্তাহ ধরে যে কথা বলে আসছি তা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। আমরা এখন দেখছি দ্বিতীয় দফার করোনা সংক্রমণের ঢেউ। আমরা এটা দেখতে পাচ্ছি ফ্রান্স, স্পেন ও ইউরোপজুড়ে। আমি এ নিয়ে ভীত ও শঙ্কিত। অনিবার্যভাবে আমরাও এই অবস্থার দিকে যাচ্ছি। ব্রিটেনের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স (ওএনএস) বলেছে, আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিগুণ হতে পারে। ব্রিটেনে এই সংখ্যা দিনে ৬০০০ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেছেন, তিনি দেশে আবার দ্বিতীয় লকডাউন চান না। যদিও লোকজনের উচিত সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ মেনে চলা। মাদ্রিদে আংশিক লকডাউন ॥ ইউরোপে আবার দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের অংশবিশেষ লকডাউনের আওতায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হয়েছে স্পেনে। আবারও মাদ্রিদ সবচেয়ে আক্রান্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। লকডাউনের কারণে সোমবার থেকে সেখানকার ৮ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের নির্বিঘেœ চলাচল সীমিত হয়ে পড়বে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হচ্ছে। একসঙ্গে বেশি মানুষ একত্রিত হতে পারবেন না। উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোর বেশিরভাগই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছে। সেখানে শীতকাল এগিয়ে আসছে। ফলে সংক্রমণ আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এ অবস্থায় মানুষজন ঘরের বাইরে চলাচল করলে তাতে আরও কঠিন অবস্থা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডব্লিউএইচও’র ইমার্জেন্সি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচীর প্রধান ড. মাইক রায়ান বলেছেন, সংক্রমণ বিস্তার রোধে আরও অনেক কাজ করতে হবে। এই মহামারীকে দমিয়ে রাখতে হবে। স্কুল খুলে দেয়ার বিষয়ে নিরাপত্তা আনতে হবে। সমাজের সবচেয়ে বিপন্ন মানুষগুলোকে সুরক্ষা দিতে হবে। ফের লকডাউনে ইউরোপ ॥ করোনার প্রথম ঢেউ সামলে কিছুদিন আগেই লকডাউন তুলে দিয়েছিল ইউরোপ। মাত্রই গতি ফিরতে শুরু করেছে সেখানকার অর্থনৈতিক কার্যক্রমে। কিন্তু এরমধ্যেই অঞ্চলটিতে আবারও বাড়তে শুরু হয়েছে সংক্রমণ। মহামারীর দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবেলায় দ্রুতই তাই বিধিনিষেধ ফিরিয়ে আনার পথে হাঁটছে ইউরোপীয় দেশগুলো। ইউরোপের মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুগেছে স্পেন। সোমবার থেকে আবারও লকডাউনে যাচ্ছে দেশটির রাজধানী মাদ্রিদ। স্পেনে ছয় লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৩০ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে মাদ্রিদে আক্রান্তের হার পুরো দেশের গড় আক্রান্তের হারের তুলানায় প্রায় দ্বিগুণ। মাদ্রিদের গবর্নর চিফ ইসাবেল ডায়াজ আয়ুসো বলেন, এখানে ৩৭ এলাকা আছে যেখানে সংক্রমণের হার খুব বেশি। গত ১৪ দিনে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজারের বেশি। মাদ্রিদের এই ৩৭ অঞ্চলে আবারও লকডাউন জারি করা হচ্ছে। বাসিন্দারা শুধু কর্মস্থল, স্কুল বা চিকিৎসার জন্য নিজের এলাকা থেকে বের হতে পারবেন। নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে একসঙ্গে সমবেত হতে পারবেন সর্বোচ্চ ছয়জন। সরকারী পার্কগুলো বন্ধ থাকবে এবং রাত ১০টার মধ্যেই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। স্পেনের মতো সংক্রমণ বাড়ছে ফ্রান্সেও। শুক্রবার সেখানে ১৩ হাজার ২১৫ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন যা মহামারী শুরুর পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড এবং আগেরদিনের তুলনায় অন্তত তিন হাজার জন বেশি। এদিন আক্রান্ত হয়েছেন ফরাসী অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মেয়ারও, যদিও শরীরে কোন উপসর্গ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মার্সেইল-নাইসের মতো শহরগুলোতে কঠোর বিধিনিষেধ ফিরিয়ে আনছে ফ্রান্স সরকার। ২২ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ব্রিটেনে। যা গত ৮ মে’র পর থেকে সর্বোচ্চ। দেশটিতে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ ‘অবশ্যম্ভাবী’ বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যে জন্য ইংল্যান্ডের উত্তরাংশের বেশিরভাগ এলাকায় লকডাউন দেয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে রেস্টুরেন্টের ভেতর খাওয়া-দাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনাবশ্যক ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইরিশ কর্তৃপক্ষ। জনসমাবেশে লোকসংখ্যা সর্বোচ্চ ১০০ জন থেকে কমিয়ে ৫০ জনে এনেছে ডেনমার্ক। বার-রেস্টুরেন্টগুলো দ্রুত বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকিয়াভিকে ছুটির দিনে বিনোদন কেন্দ্র ও পাবগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে। আমস্টারডাম-রটারডামসহ নেদারল্যান্ডসের অন্তত ছয়টি শহর ও অঞ্চলে বিধিনিষেধ জোরালো করা হয়েছে। গ্রিসের বৃহত্তর শহর এথেন্স অঞ্চলেও ফিরে আসছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। জার্মানিতে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ ॥ পুনরায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার এই দুইদিনে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দেশটিতে দুই হাজার ১৭৭ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন যা ২৩ এপ্রিলের পর সবচেয়ে বেশি। এপ্রিল মাসের পর থেকে জার্মানি করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়। এখন আবার তা উর্ধমুখী হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্পান ও গবেষণামন্ত্রী আনিয়া কার্লিকজেক জানান, সরকার আশা করছে আগামী বছরের শুরুর দিকে জনসংখ্যার একটি অংশের জন্য কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। ঝুঁকিপূর্ণ শর্টকাট পথ বেছে নেয়া হবে না বলেও জানান তারা। তারা বলেন, আমরা নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন চাই। সেক্ষেত্রে প্রথমটি হতে হবে এমন কোন কথা নেই। করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য জার্মান সরকার ৮০ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি বিশেষ গবেষণা তহবিল বরাদ্দ করেছে। যা মূলত জার্মানিতে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে নিয়োজিত বায়োএনটেক, কিউরভ্যাক ও আইডিটি বায়োলজিকা- এই তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন গবেষণা খাতে খরচ করার জন্য দেয়া হয়েছে। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ৭১ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই লাখ ৪১ হাজার ৩০০ মানুষ। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ হাজার ৪৬২ জন। ভারতে আরও ১২৪৭ মৃত্যু ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ২৪৭ জন মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছেন ৮৫ হাজার ৬১৯ জন। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ হাজার ৩৩৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৩ লাখ ৮ হাজার ১৪ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪২ লাখ ৮ হাজার ৪৩১ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৯৫ হাজার ৮৮০ জন। সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ২৮ শতাংশ। ইসরাইলে ফের লকডাউন ॥ ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কঠোর বিধি-নিষেধে ফেরার পাশাপাশি দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটেন। ইউরোপের মতো ইসরাইলেও দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন জারি করা হয়েছে। করোনার পুনরুত্থান ঠেকাতে কিছুদিনের বিরতি দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেশজুড়ে লকডাউন জারি করেছে ইসরাইল। করোনার বিস্তার রোধে ইহুদী নববর্ষের আগে ওই লকডাউন জারি করা হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে লকডাউন শুরু হয়ে বলবৎ থাকবে আগামী ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত। ইহুদী নববর্ষ রোশ হাশানা শুরুর আগে এই লকডাউনের বিরোধিতাও করেছেন দেশটির অনেক নাগরিক। নতুন নিয়মে ইসরাইলীরা নিজ বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। শুধু জরুরী কেনাকাটা, শরীর চর্চা এবং কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য নিজ এলাকা ত্যাগ করতে পারবেন। সীমিত পরিসরে কর্মস্থল সচল রাখা যাবে। জনসমাগম ও পারিবারিক অনুষ্ঠানেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। নতুন নিয়মে ১০ জনের বেশি মানুষ কোন অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকতে পারবেন না। থাইল্যান্ডে প্রথম মৃত্যু ॥ এক শ’ দিনের বেশি সময় পর করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়েছে দেশটির এক নাগরিকের। চলতি মাসে সংক্রমিত ওই ব্যক্তি বিদেশ থেকে ফেরেন বলে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন। লকডাউন উঠে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ॥ দীর্ঘ ৬ মাস পর সোমবার থেকে লকডাউন মুক্ত হতে যাচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ ৬ মাস লকডাউনে থাকা দেশটিতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সোমবার থেকে লকডাউন প্রথম স্তরে নামিয়ে এনে সবকিছু স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যোগাযোগ ও সব সীমানা ১ অক্টোবর থেকে খুলে দেয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ঠিক রাখতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা হবে বলে প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পরবর্তীতে বৈশ্বিক করোনা মহামারী ঠিক হলে সবদেশের সঙ্গে ফ্লাইট যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হবে। সোমবার থেকে মসজিদসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব ধর্মের রীতিনীতি পালন করতে আর কোন বাধা থাকবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। ফুটবল ক্রিকেটসহ সবধরনের খেলাধুলার জন্য আরোপিত বাধ্যবাধকতাও থাকছে না। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী শুরু হলে পাঁচ স্তরের লকডাউন নীতিমালা ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত ছয়মাসে পাঁচ স্তরের লকডাউন নীতিমালা ক্রমান্বয়ে শীতল করে সোমবার শেষ হবে সম্পূর্ণ লকডাউন। উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেলেও সুস্থতার হার ৯০ শতাংশ।
×