অনলাইন ডেস্ক ॥ কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা মনে করি ভারতের সাথে আমাদের কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা করার অনেক সুযোগ আছে। আগে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল, দুর্ভিক্ষের দেশ ছিল। সারা পৃথিবী থেকে আমরা খাদ্য সংগ্রহ করতাম, কখনও আমাদের সাহায্য হিসেবে নিতে হতো, কখনও আমদানি করতে হতো। এখন আমাদের সেইভাবে বিদেশের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সাবলম্বী হয়েছি।’
আজ রবিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাসের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতেরও গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আজ শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু শিল্পায়ন করতে হলে স্থানীয় বাজার বড় করতে হবে। সেটা নির্ভর করবে গ্রামীণ অর্থনীতি কীভাবে আরও বড় হয়, আরও চাঙ্গা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন চাচ্ছি বাংলাদেশের কৃষিকে বাণিজিকীকরণ করা, আধুনিকীকরণ করা। এই ক্ষেত্রে ভারত প্রযুক্তির দিক থেকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে, আমরা তাদের সহযোগিতা নিতে পারি। আমরাও তাদের অনেক প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা দিতে পারি। আলোচনা করলাম কৃষিক্ষেত্রে আমরা আরও কীভাবে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে পারি।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে যেসব কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় সেগুলো বাংলাদেশে সহজে আনা যায়। ফলমূল, শাক-সবজি; এগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণ, আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করা নিয়ে আলোচনা করেছি। উনিও আমাদের বলেছেন, তার অবস্থান থেকে আমাদের সহযোগিতা করবেন।’
‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের এই সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং ভবিষ্যতে অর্থনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।’ বলেন আব্দুর রাজ্জাক।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের কো-অপারেশনে কৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। আমরা কোভিডের মধ্যে দেখেছি বোরো খুব ভালো হয়েছে। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরাও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং উদ্বৃত্ত। যারা কোভিডে খুব অ্যাফেকটেড হয়েছে তারা যাতে খাদ্যাভাবে কোনো কষ্ট না হয় সেই দিকে বাংলাদেশের প্রচুর অর্জন। তো বাংলাদেশে কীভাবে এই সফলতা এসেছে সেই বিষয়ে কথা হচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘কত ইনোভেটিভ জিনিস করা হয়েছে কৃষিখাতে যাতে বাংলাদেশ এই জায়গায় পৌঁছেছে, যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। কৃষিখাত এমন একটি এরিয়া আমাদের মনে হয় যেখানে প্রচুর কো-অপারেশন হতে পারে। কারণ আমাদের একটা লোকেশনের সুবিধা আছে। অনেক কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। সুতরাং অ্যাগ্রো প্রসেসিং, ডেইরি- এগুলো সহযোগিতার খুব গুরুত্বপূর্ণ খাত।’
‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মধ্যে অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং আমরা চিহ্নিত করেছি ভবিষ্যৎ সহযোগিতার খাত হিসেবে।’
রিভা গাঙ্গুলি বলেন, আগামী বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বছর। কারণ মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর, আর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেরও ৫০ বছর। আর এ বছরও মুজিববর্ষ। তো বিভিন্নভাবে আমরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি, একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের।