অনলাইন ডেস্ক ॥ আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বের হয়ে যাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এখন আর ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের যোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল। জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের ওই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আর এর অংশ নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বোরেলের পক্ষে তার মুখপাত্র বলেছেন, ২০১৮ সালের মাসে জেসিপিওএ থেকে একতরফাভাবে সরে যায় যুক্তরাষ্ট্র এবং এরপর থেকে জেসিপিওএ’র আর কোনও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেনি তারা। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে আর জেসিপিওএ’র অংশ বলে ধরা যায় না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র জেসিপিওএ’র অংশগ্রহণকারীদের জন্য সংরক্ষিত প্রক্রিয়া অবলম্বন করার মতো অবস্থানে নেই।
২০১৫ সালে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। এ চুক্তির আওতায় ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত থাকা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এগিয়ে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। শর্তসাপেক্ষে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছিল জাতিসংঘও। ওই চুক্তি অনুসারে একটি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী অক্টোবরে।
ট্রাম্প প্রশাসন চায় ইরানের ওপর এ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াতে। তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব পাস করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত ওই প্রস্তাবে ১১টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে। আর এর পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র দু’টি করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ডমিনিকান রিপাবলিক প্রস্তাবটির পক্ষে এবং চীন ও রাশিয়া এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। বাকি কোনো দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি।
নিরাপত্তা পরিষদের এ ভোটে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিত্রহীন হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে এখনও আশা ছাড়েনি ট্রাম্প প্রশাসন।
জাতিসংঘে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পরমাণু ইস্যুতে ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা আগামী সপ্তাহেই দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: আল জাজিরা।