স্টাফ রিপোর্টার ॥ কথাসাহিত্যিক মকবুলা মনজুর আর নেই। তিনি শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। মকবুলা মনজুর দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে, দুই ছেলেসহ বহু স্বজন-অনুরাগী ও পাঠক রেখে গেছেন।
শুক্রবার রাতে মকবুলা মনজুরের মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের সভাপতি দিলারা মেসবাহ বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে শয্যাশয়ী ছিলেন। শুক্রবার উত্তরায় তার বাসভবনেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বলেন, মকবুলা মনজুর নিভৃতচারী কথাসাহিত্যিক। আজীবন লড়াই করে গেছেন। কিন্তু কখনও নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। লেখিকা সংঘের সব আয়োজনে তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েই ছুটে আসতেন। সাহিত্যের প্রতি তার অনুরাগ এমনই ছিল।
মকবুলা মনজুর ১৯৩৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার মুগবেলাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মিজানুর রহমান ও মায়ের নাম মাহমুদা খাতুন। বাবা মিজানুর রহমান লেখালেখি করতেন।
তৎকালীন মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংকে (বর্তমান রূপালী ব্যাংক) অফিসার হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়া। তাই প্রায় অর্ধেক বেতনে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে তিনি ইউনিভার্সিটি উইমেন্স কলেজ ও সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি তিনি প্রায় ২৫ বছর সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকার ফিচার সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া দৈনিক আজাদ পত্রিকার ফিচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মকবুলা মনজুর রচিত উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে কালের মন্দিরা, আর এক জীবন, অবসন্ন গান, আত্মজা ও আমরা, প্রেম এক সোনালী নদী, বাউল বাতাস, ছায়াপথে দেখা, সায়াহ্ন যূথিকা, নক্ষত্রের তলে। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার শ্রেষ্ঠগ্রন্থ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।