অনলাইন ডেস্ক ॥ মিয়ানমার এখন তাদের দেশে দুই জন নভেল করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ওই দুই জনই সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানিয়েছে।
এতোদিন পর্যন্ত মিয়ানমারই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র যারা বলে আসছিল, তাদের দেশে কোনো করোনাভাইরাস আক্রান্ত নেই। চীনের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকার পরও এমন দাবি করছিল তারা। যে চীনের উহান শহর থেকেই প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা ২৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, উভয়েই মিয়ানমারের নাগরিক এবং পরীক্ষায় তাদের দেহে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমনটি বলেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, “এই দুই রোগীর সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের শনাক্তে তদন্ত চলছে।”
গ্লোবাল নিউ লাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডধারী মিয়ানমারের চিন রাজ্যের তিদিমের ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি চলতি মাসের ১৩ তারিখে দেশে ফিরেছিল। ১৯ তারিখে তার প্রবল জ্বর হওয়ার পর সে চিকিৎসার জন্য অলাভজনক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থা পপুলেশন সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনালের শরণ নেয়।
পরে ২১ তারিখে তাকে তিদিম টাউনশিপ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়। তার মধ্যে কাশি বা শ্বাসকষ্টের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
২২ তারিখে ইয়াঙ্গুনের জাতীয় স্বাস্থ্য গবেষণাগারে নমুনা পাঠানোর পর ২৩ তারিখে পরীক্ষার ফলাফলে সে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত বলে দেখা যায়। এই রোগী সেরে উঠছে এবং তার প্রচণ্ড জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মতো কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি বলে তিদিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এখনো এই হাসপাতালেই আইসোলেশনে আছে সে।
অপরদিকে রবিবার ইংল্যান্ড থেকে ফিরে ২৬ বছর বয়সী মিয়ানমারের এক নাগরিক ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর তাকে নিকটবর্তী হলেগু শহরে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে হামাওবি শহরের একটি বৌদ্ধ মঠে স্থাপিত অপর একটি কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
মিয়ানমারে আসার পর থেকে তার প্রবল জ্বর বা শ্বাসকষ্ট, এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা যায়নি, কিন্তু সোমবার আসা পরীক্ষার ফলাফলে তিনি কভিড-১৯ এ আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হয়।
এরপর তাকে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠিয়ে কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এই দুই আক্রান্তের শনাক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে ‘প্যানিক’ কেনাকাটা শুরু হয়ে যায় আর ক্রেতারা বড় বড় সুপারমার্কেটগুলোতে ভিড় জমাতে শুরু করে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।