ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিএনপির বিশেষ আবেদনের ক্ষেত্রে সরকার কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না : কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

বিএনপির বিশেষ আবেদনের ক্ষেত্রে সরকার  কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না : কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, জিয়াউর রহমানের ছেলে তারেক লন্ডনে বসে হুকুম দেয় দেশ পরিচালনা করবে। তার সাহস নাই বাংলাদেশে আসার। তারেক অনেক দূর্নীতি, অন্যায় ও মানুষ খুন করেছে। সে জানে কখনও জেল থেকে বের হতে পারবে না। খালেদা জিয়া তারেকের মা। সেও এতিমের টাকা চুরি করে বর্তমানে জেলে আছে। কোন রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়া জেলে যায়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে জেলে পাঠায়নি। জেলে পাঠিয়ে আদালত। আর সেই আদালত খালেদা জিয়াকে জামিন দেয় না। এখানে সরকারের কি করার রয়েছে। বিএনপি এখন বলছে বিশেষ আবেদন করবে। তাদের বিশেষ আবেদনের ক্ষেত্রে সরকার কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। সরকারের একটি স্বাধীন অঙ্গ হলো বিচার বিভাগ। তারা যে সিদ্ধান্ত দিবে, তা সরকার মাথা পেতে নিবে। শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের গোপালপুর সূতী ভি এম পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি বারবার বলছে ঢাকা সিটি নির্বাচন সফল হবে না। তারা কারচুপির কথা প্রচার করছে। ইভিএম হচ্ছে সবচেয়ে আধুনিক, সর্বশেষ প্রযুক্তি। সেই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে এই দুই সিটি নির্বাচনে। বর্তমান সরকারের সততা নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন করছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ইভিএমএর মাধ্যমেই সুষ্ঠ ও সুন্দর হবে। তারা চায় আমরা বলে দেই বিএনপি জয়লাভ করবে। এটা আমরা করতে পারবো না। জনগন ও ভোটাররাই সকল ক্ষমতার মালিক। সেই ঢাকার সচেতন ভোটাররাই ঠিক করবে আগামীতে তাদের মেয়র কে হবে। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো নৈতিক চরিত্র তৈরি করা। নৈতিক শিক্ষা মানুষের মননে, অন্তরে আদর্শিক গুণাগুণ তৈরি করে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করা। অন্যের প্রতি সম্মান, স্নেহ, শ্রদ্ধাসৃষ্টি করা। সৃষ্টি ও মানুষের প্রতি দয়া মানবতা দেখানো। অপরের সুখ, শান্তি আপদে-বিপদে কাছে থাকা। শিক্ষা মানুষকে মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে জাগ্রত করে। মানুষ কতগুলো মানবীয় গুণাগুণ নিয়ে চলতে শিখে। এই শিক্ষাই জাতীকে উন্নত করে সমৃদ্ধ করে। শিক্ষার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করে দেশ প্রেম উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশকে জানতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে, আর্দশবান মানুষ হতে হবে। মানবতার মা বিশ্ব নেত্রীর কল্যানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে সরকার উচ্চ পর্যায়ে তারা তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। উন্নয়নশীল কিংবা নি¤œমধ্যম আয়ের দেশ যেভাবেই ভাবুন না কেনো বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে যেসকল অন্তরায় আছে সেগুলো ক্রমান্বয়ে দূরীভূত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্ষিতার জন্য। শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিবন্ধকতা সর্বাগ্রে দূর করে আলোর পথ বাংলাদেশ। আর সেই আলোয় আলোকিত হয়ে বাংলাদেশের সামনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ এর ‘এসডিজি’ এবং ২০৪১ এর স্বপ্নের ‘রূপকল্প’ বাস্তবে কার্যকরী হবে। দেশ চলে যাবে উন্নত দেশের কাতারে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশে উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তথ্য-প্রযুক্তি উন্নয়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবর্তন আসছে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টায়। তাঁদের হাত ধরেই দেশে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের আইটি সেক্টরকে সমৃদ্ধ করতে তথ্য মন্ত্রনালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যেই দেশের সর্বত্র আইটি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষিত যুবসমাজ আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষিত হচ্ছে। এরা প্রশিক্ষিত হয়ে নিজেদের বেকারত্ব দূর করতে পারবে ও দেশকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এইচ.টি ইমাম। তিনি বক্তব্যে বলেন, বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মকে জাতির পিতার আদর্শ সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। জাতির পিতার ছাত্র জীবনের ইতিহাস পড়তে হবে। কিভাবে বড় নেতা ও ভালো মানুষ হওয়া যায়। পড়ালেখার উদ্দেশ্য বড় আমলা হওয়া নয়, শেখ মুজিবের মতো ভালো মানুষ হওয়া। তোমরা জাতির পিতার আদর্শকে লালন করেই মানুষের মতো মানুষ হতে পারবে। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে চলতে পারলেই তোমরা বলতে পারবে আমরা বঙ্গবন্ধুর দেশের নাগরিক, আমরা বাঙালি। তোমরা পড়ালেখা করে জাতির পিতার মতো সাহসী নেতা হবে। পড়ালেখার পাশাপাশি জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে যারা নিজের জীবন দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। বাংলার সেই সাহসী বীর সন্তানদের ইতিহাস, সূর্য সেনের ও প্রীতিলতার ইতিহাস জানতে হবে এবং শিখতে হবে। তারা এদেশের বড় মনের মানুষ ও ত্যাগী নেতা ছিলেন। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়োহের এমপি, স্থানীয় এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক এ্যাডভোকেট আব্দুল গফুর, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুরুজ, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান প্রমুখ। এর আগে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যে-সাফল্যে শত বছরের অঙ্গিকার নিয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পুরো ক্যাম্পাস। এ সময় নানা বয়সী শিক্ষার্থীরা নাচ, গান এবং আড্ডায় মেতে উঠেন।
×