নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের সাতানি সাদেকপুর গ্রামকে শতভাগ উন্নত চুলা ব্যবহারকারি গ্রাম মডেল ভিলেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম সোমবার উক্ত গ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। পরে প্রধান অতিথি উক্ত গ্রামের প্রধান সড়কের ধারে মডেল ভিলেজ শীর্ষক একটি ফলোক উন্মোচন করেন এবং উন্নত চুলা ব্যবহারকারিদের বসতবাড়িতে চুলা ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মধ্যে এই প্রথম একটি সাতানি সাদেকপুর গ্রামকে উন্নত চুলা ব্যবহারকারি মডেল ভিলেজ হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
এ উপলক্ষে ওই গ্রামে ছিন্নমুল মহিলা সমিতির উদ্যোগে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক মো. মুর্শীদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী, প্রাকটিক্যাল এ্যাকশনের শৈবাল বড়–য়া, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, বিটিভির জেলা প্রতিনিধি আবেদুর রহমান স্বপন, বাসস জেলা প্রতিনিধি সরকার শহিদুজ্জামান, সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর রহিমা খাতুন, চুলা ব্যবহারকারি সেলিনা আকতার, রহিমা বেগম, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সীমা আকতার ও জনি শেখ। এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নারী উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, এই গ্রামের ২৪১টি পরিবারের মধ্যে ১৭১ জনকে জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলা সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি ৭০টি পরিবার আগে থেকেই উন্নত চুলা ব্যবহার করে আসছে। উল্লেখ্য, উন্নত চুলার প্রচারণা ও কিশোর-কিশোরীদের অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ইউনিসেফের সহায়তা পুষ্ট প্রাকটিক্যাল এ্যাকশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় গাইবান্ধার ছিন্নমুল মহিলা সমিতি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর, সাহাপাড়া ও বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম ও ১০টি বিদ্যালয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে দু’জন করে ছাত্রছাত্রী উল্লেখিত ইউনিয়নের গ্রামবাসিদের উন্নত চুলা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং তাদের কাছে উন্নত চুলা বিক্রি বাবদ নির্ধারিত হারে কমিশন পেয়ে অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গাইবান্ধা জেলার একটি গ্রামকে মডেল ভিলেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যে গ্রামের শতভাগ মানুষকে ‘উন্নত চুলা’ (আইসিএস) ব্যবহার শুরু করেছে।