ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও মাঠে ॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও মাঠে ॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিতে আবারও মাঠে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বের লাখ লাখ শিশুর অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে নতুন জলবায়ু আন্দোলন। সুইডেনের শিক্ষার্থী জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থার্নবার্গের ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার মানববন্ধন শুরু করেছে। এসব মানববন্ধন থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দায়ী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বিশ্বের লাখ লাখ শিক্ষার্থী। শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপী শুরু আন্দোলন শেষ হবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকার স্কুল ও কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সমবেত হয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। ঢাকায় সেভ দ্য চিলড্রেন এবং গ্রীন বেভার এ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও স্কুল ক্যাবিনেট সদস্যরাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানানো হয় শিক্ষার্থীদের সমাবেশ থেকে। এ সময় দেশের পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান তারা। এছাড়া পরিবেশবিদরা এই সমাবেশে একাত্মতা জানিয়ে এখনই সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সমাবেশে গ্রীন সেভারের প্রেসিডেন্ট আহসান রনি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী রাষ্ট্রগুলোকে আরও সতর্ক হতে বলেন। অন্যথায় তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘শিশুরা বুঝতে পেরেছে বাঁচতে হলে তাদের নিজেদের রাস্তায় নামতে হবে।’ শুক্রবার অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রথম এই মিছিল শুরু হয়। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ শিশু এতে যোগ দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য আন্দোলনেই যোগ দিতে পারে ১১ লাখ শিশু-কিশোর। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। যোগ দেয়া আন্দোলনকর্মীদের বেশিরভাগই হবেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্বের পাঁচ হাজারেরও বেশি স্থানে এই আন্দোলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই আন্দোলন শুরু হয় এ্যাক্টিভিস্ট গ্রেটা থার্নবার্গের হাত ধরে। তিনিই প্রথম ক্লাস পালিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে প্রতিবাদ করতে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি বেশিরভাগ বড়রা এখনও বুঝতে পারে না জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলা কেবল আমাদের মতো তরুণদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা একটা নির্দিষ্ট কোন প্রজন্মের কাজ নয়। এটা আমাদের পুরো মানবজাতির দায়িত্ব। এদিন সিডনি থেকে শুরু করে সিউল ও সাও পাওলো পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিশু-কিশোররা তাদের পাঠ্যবই বন্ধ রেখে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্লাইমেট স্ট্রাইক হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে এই আন্দোলন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনকে বলা হচ্ছে ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এদিন ১১ লাখ শিশুর জড়ো হওয়ার কথা রয়েছে। ১৮০০ সরকারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের এদিন ক্লাস বাদ দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
×