নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালী পৌরসভার শত শত কোটি টাকা লুটপাট নিয়ে লুকোচুরির অবসান ঘটেছে। অবশেষে সকল দাপ্তরিক সমস্যা কাটিয়ে নিবির অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। সম্প্রতি পটুয়াখালী পৌরসভার সকল অনিয়ম দূর্নিতীর বিস্তারিত তথ্য এবং কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক। এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে পটুয়াখালী পৌর হিসাব রক্ষক শাহিনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় আদালতের জামিনে নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন শহিন।
পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফ হোসেন গত ২৯ আগষ্ট পটুয়াখালী পৌর সভায় বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়ে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করেন, পটুয়াখালী পৌরসভার ঠিকাদারী কাজের অনিয়ম, পানি শাখা, হিসাব-পরিচ্ছন্ন শাখা, প্রকৌশল শাখার সকল অনিয়ম, দূর্নীতি, বিস্তারিত বিবরণ চেয়ে চিঠি দেন। এর আগে ৬ আগষ্ট পৌরসভার কাছে তথ্য চাওয়া হলে তা না দেয়ায় দ্বিতীয়বার ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৯ আগষ্ট দ্বিতীয় দফায় চিঠি দেয়া হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী পৌরসভার সকল অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগ এনে পটুয়াখালী দুদক কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন আব্দুল হামিদ নামে এক ব্যক্তি। দুদকে দেয়া ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশন অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (তদন্ত) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সচিবকে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
ওই বছরের ৪ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ.কে.এম আনিছুজ্জামান বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। ৩০ এপ্রিল বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহরিয়া ইসলাম ১৬ মে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাফিজকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরে ৭ জুন বরিশাল স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালকের এক আদেশে প্রত্যাহার করে নেয় তদন্ত সংশিলষ্ট সকল কাগজপত্র।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে দেয়া ওই আদেশে বলা হয় পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকাল্পে অন্তত ২শ কোটি টাকা আত্মসাতের আদেশটি অনিবার্য কারনবশত প্রত্যাহার করা হলো। এরপর ওই তদন্ত এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এমনি পটুয়াখালী দুদক কার্যালয় এ সম্পর্কে অবগত নয় বলে দাবী করে পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার।
এদিকে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার পৌরসভার হিসাব রক্ষক এস.এম শাহিনের অর্জিত ২,৭৪,৭৪,৩৫০ টাকার সম্পদে অসঙ্গতি পাওয়ায় বিষয় উল্লেখ করেন, প্রাথমিক ভাবে শাহিনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ,৭৪ লাখ,৭৪ হাজার,৩৫০ টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলা নং-২০/১৯। যার তদন্ত চলমান।