স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই বছর আগে যে মঞ্চে প্রতিপক্ষের কাছে তিন গোলে হেরেছিল, এবারের মোকাবেলায় সেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে হারের ব্যবধানটা একটু কম হবে বা ড্র হবে, এমনটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির কোন মিলই খুঁজে পাওয়া গেল না বুধবার। বরং বিশাল ব্যবধানে হেরে গিয়ে বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল। বলা হচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কথা।
থাইল্যান্ডের চনবুরি স্টেডিয়ামে তারা শক্তিশালী জাপানের কাছে হেরে গেছে ৯-০ গোলে! ফলে এএফসি অনুর্ধ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় নিল এবং ২০২০ সালে ভারতে অনুষ্ঠেয় ফিফা অ-১৭ নারী বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে নাম লেখানো থেকেও বঞ্চিত হলো। তাও এক ম্যাচ হাতে রেখেই।
দু’বছর আগেও একই টুর্নামেন্টে এই জাপানের কাছেই ৩-০ গোলে হেরেছিলো গোলাম রব্বানী ছোটনের ছোটনের শিষ্যারা।
দুই বছর আগে একই টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বে এই জাপানেরই মুখোমুখি হয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী। সেবার তাদের কাছে অনেক কম গোলেই হেরেছিল বাংলাদেশ। কোচ ছোটন জানিয়েছিলেন গত দুই বছরে আরও উন্নতি হয়েছে মেয়েদের। তারা খেলেছে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে-বাংলাদেশের মেয়েদের যতটা না উন্নতী হয়েছে,তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উন্নতি করেছে দূরপ্রাচ্যের দেশ জাপান। তার প্রতিফলন দেখা গেছে চনবুরির মাঠে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা।
খেলার প্রথমার্ধেই বিজয়ী দল ৫-০ গোলে এগিয়ে যায়। পরের অর্ধে করে আরও ৪ গোল। বাংলাদেশ গোল করার দু-একটি সুযোগ পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় সেগুলোর একটিও কাজে লাগাতে পারেনি।
পুরো ম্যাচেই গতিশীল ও আক্রমণাত্নক ফুটবল খেলে জাপান। শুরু থেকেই চেপে ধরে বাংলাদেশকে। ফলে প্রথম মিনিট থেকেই প্রচণ্ড চাপে পড়ে যায় মারিয়ারা। জাপানের দ্রুতগতির ফুটবলের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা।
নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় ওই ম্যাচটি এখন নিছকই আনুষ্ঠানিকতা সারার ম্যাচ বাংলাদেশের। কারণ টানা দুই হারে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা।
গ্রুপের সেরা দুই দল খেলবে নকআউট স্টেজে। দুই ম্যাচে এক জয় আর এক ড্র’তে ৪ পয়েন্ট নিয়ে জাপান আর আগেই তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করে থাইল্যান্ড এগিয়ে গেছে সেই দৌড়ে। বাংলাদেশ যেহেতু দুই ম্যাচে হেরেছে তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হবার কোন সম্ভাবনা তাদের নেই। কারণ পরের ম্যাচে মুখোমুখি হওয়া থাইল্যান্ডও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যেই জিতবে তারাই এগিয়ে যাবে নকআউটে পৌঁছার পথে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাপানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিলো অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে ২০১৭ সালে এএফসি অনুর্ধ্ব ১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশীপের চুড়ান্ত পর্বে খেলেছিলো বাংলাদেশ দল। সেবারও ভরাডুবি হয়েছিলো ছোটনের শিষ্যাদের। সেবার গ্রুপ ‘বি’তে প্রথম ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার কাছে ৯-০ গোলের হারে শুরু, এরপর জাপানের কাছে ৩-০ এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-২ গোলে হেরেছিলো তারা।