প্রেমময় নিষ্পাপ পুরীতে শিহরণ জাগানো প্রেমের গল্প সুলতানা বিবিয়ানা। এখানে নায়ক সুলতান এক রহস্যময় চরিত্রের মানুষ। সিনেমার শুরুতে দর্শক তার চরিত্রের আদি অন্ত খুঁজতে থাকবে। আঁচলের ব্যক্তিগত অভিমত, যে সব অঞ্চলে এই সিনেমার কাজ বা শূটিং হয়েছে সে সব অঞ্চলে আমি এবারই প্রথম গিয়েছি। অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতির রূপ দেখেছি, দেখেছি নদীর পাড়ের মানুষদের স্নিগ্ধ ও সংগ্রমের জীবন। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনে প্রথম। সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত ও পেশাগত বিবেচনায় আমি খুবই সন্তুষ্ট
সব্যসাচী দাশ
যাযাবর যুবক সুলতান। এ পথ ও পথ ঘুরে বেড়ানোই যার স্বভাব। অজানা কারণে সে এক দিন ফুলের রাজ্যে এসে উপস্থিত। ছেলেটির মায়া ভরা দুটি চোখ। বুকভরা প্রেম। ফুলের প্রতি সুলতানের ভীষণ ভালবাসা, ফুল বাগানের মালি আফাজকে মায়ায় বেঁধে ফেলে। ফুল পাগল প্রকৃতি প্রেমিক সুলতান স্থির হয়ে যায়, ফুলের সমারোহে। থেকে যায় তার ভালগার রাজ্যে। শুরু হয় তার প্রকৃতির সঙ্গে দিনযাপন।
বাগানে পাখি আসবে, মনভোলানো সুর তুলবে। গাছে গাছে ফুলে ফুলে বাহারি রঙের শোভা ছারাবে এটাই তো চিরচরিত। স্বাভাবিক নিয়মে এ ক্ষেত্রে ঘটছেও তাই। ফুল বাগানে পাখি এলো, কিন্তু সে পাখি মানুষরূপী পাখি। নাম তার সোনালী। প্রকৃতির মতো উদার চোখ। ফুল তুল্য মিষ্টি হাসি। চলাফেরায় অপরূপ ছন্দ। যাযাবরের মন ভুলে গেল। সে ডুবে গেল সোনালী পাখির ডানায়। সকাল বিকাল সোনালীর আনাগোনা দিন দিন সুলতানকে বিমোহিত করতে থাকে। কখন লুকিয়ে, কখন সম্মুখে দেখতে থাকে অপরূপ পাখিটিকে। তবে সবধান! সে কিন্তু বাগান মালিক ‘আনাল’ কন্যা। হোক সে মালিক কন্যা তাতে কি, সুলতান তার পরশ পেতে চায়। কাছাকাছি থাকতে চায়। অপরদিকে সুলতানের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করে আজন্মের ডুব দেয় সোনালী। কে পায় তাদের... এমনি মিষ্টি প্রেমের রোমাঞ্চকর গল্প সুলতানা বিবিয়ানা। আগামীকাল সারাদেশে একযোগে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এই সিনেমা। সিনেমার সার্বিক দিক নিয়ে কথা হয় নায়ক বাপ্পী চৌধুরী ও নায়িকা আঁচলের সঙ্গে। সুলতানা বিবিয়ানা সম্পকে দু-জনের মত অভিন্ন ‘এটা একটা দারুণ গল্পের সিনেমা’ চলচ্চিত্রটির বিশেষ দিক সম্পর্কে জানতে চাইলে আঁচল বলেন, ভালবাসা এবং ফুল একটি রোমান্টিক বাক্যের শুরু এবং শেষ, তার মানে একটি ছাড়া অন্যটি একরকম অসম্পূর্ণ। সিনেমার গল্পের শুরু এক ফুল নগরীতে যেখানে কেবল ফুল আর ফুল। যেন ফুলের সমুদ্র। এমনি প্রেমময় নিষ্পাপ পুরীতে শিহরণ জাগানো প্রেমের গল্প সুলতানা বিবিয়ানা। এখানে নায়ক সুলতান এক রহস্যময় চরিত্রের মানুষ। সিনেমার শুরুতে দর্শক তার চরিত্রের আদি অন্ত খুঁজতে থাকবে। আঁচলের ব্যক্তিগত অভিমত, যে সব অঞ্চলে এই সিনেমার কাজ বা শুটিং হয়েছে সে সব অঞ্চলে আমি এবারই প্রথম গিয়েছি। অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতির রূপ দেখেছি, দেখেছি নদীর পাড়ের মানুষদের স্নিগ্ধ ও সংগ্রমের জীবন। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনে প্রথম। সবমিলিয়ে ব্যক্তিগত ও পেশাগত বিবেচনায় আমি খুবই সন্তুষ্ট। অপর দিকে নায়ক বাপ্পী বলেন, ‘এ যাবত আমার অভিনীত চরিত্র থেকে সুলতান ভিন্ন। এখানে সুলতান অতিমাত্রায় প্রেমিক, সে ফুল ভালবাসে, বাগানের মালিক কন্যা সোনালীকে ভালবাসে। এমন কম্বিনেশন আগে অন্য চরিত্রে ঘটেনি। কাউকে গভীরভাবে ভালবাসলে সে ভালবাসা গিয়ে পৌঁছায় পছন্দের মানুষটির দৃষ্টি পড়ে এমন সব কিছুর ওপর। যেমন বাড়ির গাছ, ফুলের বাগান, পুকুর ঘাট এমনকি পোষা প্রাণীটাও হয়ে ওঠে অত্যন্ত প্রিয়। এমনি হৃদয় নিংড়ানো প্রেমময় ভালবাসা, প্রতিবাদ, দ্বান্দ্বিক জীবন সংগ্রাম সব মিলিয়ে গল্পের কোন অপূর্ণতা নেই বললেই চলে।’ আঁচলের সঙ্গে অভিনয়ের বোঝাপড়ার বিষয়ে বাপ্পী বলেন, ওর সঙ্গে আমার অভিনয়ের বোঝাপড়া খুবই চমৎকার। সুলতানা বিবিয়ানা বাপ্পী-আঁচল জুটির অষ্টম সিনেমা। শুটিং হয়েছে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, যশোর, ঝিনাইদহ ও কক্সবাজারের মতো একাধিক নয়নাভিরাম মনোরম দৃশ্যে। বাপ্পী-আঁচল ছাড়াও কুখ্যাত ডাকাত ‘মজনু’ চরিত্রে দেখা যাবে জনপ্রিয় অভিনেতা অমিত হাসানকে, ফুলবাগানের মালিক ‘আনাল’ চরিত্রে আছেন বর্তমান অভিনয় শিল্পের অভিভাবকতুল্য অভিনেতা মামুনুর রশিদ। আর বাগানের মালী চরিত্রে দেখা যাবে শহিদুজ্জামান সেলিমের মতো গুণী অভিনেতাকে। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন উদীয়মান পরিচালক হিমেল আশরাফ খান, কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন প্রয়াত ফারুক হোসেন এবং প্রযোজনা করেছে ভর্সেটাইল মিডিয়া। সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন হাবিব ওয়াহিদ, ন্যান্সি, ইমরান, পড়শি ও আকাশ সেনের মতো এই সময়ের জননন্দিত কণ্ঠশিল্পীরা। রোমান্টিক গানের কথা খুব সুন্দর চিত্রায়ণ এই সিনেমার শ্রী অলঙ্কৃত করেছে। সুলতানা বিবিয়ানা নিয়ে বাপ্পী-আঁচল বেশ আশাবাদী কারণ এই সিনেমার গল্প দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করার মতোই চমৎকার। তাদের বিবরণ অনুযায়ী গল্পের ক্লইমেক্স দারুণ। দর্শকদের জন্য আরও ম্যাসেজ তারা দিতে চান কিন্তু, সিনেমার মঙ্গলের জন্য তা বলা ঠিক হবে না, যা জানা হয়নি তা দেখতে চোখ রাখতে হবে রূপালী পর্দায়।
ছবি : আরিফ আহমেদ