আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে খাদ্য শস্য বলতে আমরা ধানকেই বুঝে থাকি। ধানকে এদেশের জাতীয় সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইরির মাসিক মুখপত্র রাইস টুডে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনের লিখেছে, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বলতে মূলত ধান বা চালের নিরাপত্তাকেই বোঝায়। ক্রিশ্চিয়ান সাইন্স মনিটর পত্রিকায় ২০১৫ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, অতীতের তীব্র খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ বর্তমানে উদীয়মান অর্থনীতির নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে কেবল চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন বা খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমেই অতীতের তলাবিহীন ঝুড়ি এখন শক্ত ভিত্তির উদ্বৃত্ত খাদ্যের বাংলাদেশ; যা সম্ভব হয়েছে ধান গবেষণার অর্জিত সাফল্যের কারণেই। এ অর্জনের ইতিবাচক মূল্যায়ন দেশে যেমন হচ্ছে তেমনি হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিম-লেও। শুধু বাংলাদেশের ১৬ থেকে ১৮ কোটি মানুষের প্রধান আহার নয়, ধান থেকে পাওয়া চালকে প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী। বিশ্বের শতকরা ৬০ ভাগ লোকের খাবার চাল বা চাল থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন খাদ্যপণ্য। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান খাদ্য ভাত বিশ্বের ৯০ ভাগ ধান উৎপাদন ও ব্যবহার হয়ে থাকে এশিয়া অঞ্চলে এ কারণে বলা হয়, রাইস ইজ লাইফ ইন এশিয়া।
বর্তমান স্বয়ংসম্পূর্ণতা বা উদ্বৃত্ত উৎপাদন একদিনে অর্জিত হয়নি এর পেছনে রয়েছে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, ধান বিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কৃষকের নিরলস পরিশ্রম। প্রশ্ন হচ্ছে এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা টেকসই হবে কিনা? কারণ টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের বড় চ্যালেঞ্জ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, ক্রমহ্রাসমান সম্পদ (কৃষিজমি, শ্রমিক, পানি ইত্যাদি) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত (বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা প্রভৃতি) এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি সুচিন্তিত পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ। সম্প্রতি ব্রিতে অনুষ্ঠিত ২৩ ধান গবেষণা ও সম্প্রসারণ কর্মশালায় জরাব ঠরংরড়হ ভড়ৎ ইধহমষধফবংয: ২০৫০ ধহফ ইবুড়হফ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নানা সুপারিশ উঠে আসে। এর মধ্যে রয়েছে আগামী দিনের চালের সঠিক মাথাপিছু চাহিদা নিরূপণ, সীমিত সম্পদের যৌক্তিক ব্যবহার এবং খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত যুগোপযোগী ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের দিকনির্দেশনা। বৈশ্বিক হিসেবে, বিশ্বের ১৬ কোটি হেক্টর ধানি জমিতে ৪৭ কোটি টন চাল উৎপন্ন হয়। ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের যে জনসংখ্যা হবে তার চাহিদা পূরণ করতে প্রয়োজন হবে আরও ২৫ ভাগ বাড়তি উৎপাদন। ইউএনডিরি একটি গবেষণায় বলা হেেচ্ছ, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ২.৮৫ ভাগ এবং ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে শতকরা ১.২২ ভাগে। এই হিসেবে বাংলাদেশে ২০৫০ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২১ কোটি ৫৪ লাখ এবং স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে অর্থাৎ ২০১৭ সালে ২৪ কোটি ২৮ লাখে এসে স্থিতিশীল হবে। অর্থাৎ সর্বোপরি ২৫ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা নিশ্চিত করার চিন্তা মাথায় রেখে বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে মাথাপিছু চালের চাহিদা বছরে জনপ্রতি ১৪৮ কেজি। যা খাদ্যের বহুমুখিতা ও খাদ্যাভাসের পরির্বতনের দরুন প্রতিবছর ০.৭% হারে কমছে। সে হিসেবে ২০৪০ সাল নাগাদ মাথাপিছু চালের চাহিদা কমে জনপ্রতি প্রান্তিক সীমা (ঞযৎবংযড়ষফ খবাবষ) । ১৩৩ কেজিতে দাঁড়াবে। এজন্য ২০৫০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা বাড়লেও খাদ্যের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কমবে। এছাড়া মোট উৎপাদনের শতকরা ২৫ ভাগ পশুখাদ্য, বীজ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও অপচয় বাবদ ব্যয় হয়।
বর্তমান সরকারের জনবান্ধব কৃষিনীতি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- সার এবং তেলের দাম কমানো, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ সুবিধা বৃদ্ধি কৃষিতে প্রণোদনা প্রদান, সার বিতরণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, উন্নতমানের ধানের বীজ সরবরাহ, বিভিন্ন ঘাত সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন ইত্যাদি গ্রহণের ফলে বিগত বছরগুলোয় চালের উৎপাদন ৩.৪ লাখ টন হারে বেড়েছে। বর্তমানে চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন। গতিশীলতার এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে চালের উৎপাদন হবে ৪ কোটি ৭২ লাখ টন। বিপরীতে ২০৫০ সালে ২১ কোটি ৫৪ লাখ লোকের খাদ্য জাহিদা পূরণে চাল প্রয়োজন হবে ৪ কোটি ৪৬ লাখ টন। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের চালের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে দেশে ২৬ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এটাই আপাতত টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্য, যা সামনে রেখে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।
টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে প্রথম ও প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রথম ও প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমি। এটি মোকাবেলায় প্রয়োজন আধুনিক ধানের জাতগুলোর জেনেটিক গেইন ত্বরান্বিতকরণ। দেশে প্রতি বছর ধানি জমি কমছে ০.৮% হারে; ফলে চাষের জমি সম্প্রসারণের সুযোগ নেই। উৎপাদন বাড়াতে হবে উলম্বভাবে (ঠবৎঃরপধষ বীঢ়ধহংরড়হ)। বিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমানে মাঠপর্যায়ে আধুনিক জাতগুলোর গড় ফলন ৩.১৭ টন/ হেক্টর। অত্যাধুনিক ব্রিডিং কৌশল অবলম্বন ও মাঠপর্যায়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে গড় ফলন ৪.৮২ টন/ হেক্টর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। এতে প্রতিবছর জেনেটিক গেইস হবে ০.৪৪ টন/ হেক্টর। বর্ধিত জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা পূরণে উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি প্রয়োজন গবেষণা মাঠ ও কৃষক পর্যায়ে ফলনের পার্থক্য কমানো। বাংলাদেশে ধানের প্রকৃত ফলন ও সম্ভাব্য ফলনের পার্থক্য ০.৮৩ টন/ হেক্টর। উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ পার্থক্য প্রতি বছর ১.১৩৫% হারে হ্রাস করতে পারলে ২০৫০ সালে ৪৮ লাখ টন উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করা সম্ভব।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সীমিত ও ক্রমহ্রাসমান সম্পদের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। বর্তমান ০.৪% হারে ধানি জমি কমলে ও আমাদের মোট ধানি জমি ৬.২৯ মিলিয়ন হেক্টর নিশ্চিত করা গেলেই মোট চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ২.০-২.৪% পর্যন্ত বাড়াতে হবে। ধান ২০ সেমি নাড়া/ খড় রেখে কর্তনের পর তা চাষ দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলেই জমির জৈব পর্দাথের পরিমাণ ২.৪ উন্নীত করা সম্ভব। আরেকটি উপায় হচ্ছে ধানভিত্তিক শস্য বিন্যাসে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি, নতুন নতুন স্বল্পমেয়াদি জাতগুলো চাষের মাধ্যমে একই জমি থেকে বছরে অধিক পরিমাণে আয় করা। গবেষকরা বলছেন, শস্য চাষের নিবিড়তা ২০৫০ সাল নাগাদ ২২১% এর বেশি বাড়ানো সম্ভব হবে না। তৃতীয়ত চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ধান চাষে সেচ বা পানি সরবরাহের নিশ্চয়তা। ধান একটি পানি পছন্দকারী ফসল। আউশ ও আমন বৃষ্টিনির্ভর হলেও বোরো মৌসুমে ধানের জমি সেচের কাজে ব্যবহৃত হয় ভূগর্ভস্থ পানি যা ভবিষ্যৎ আশঙ্কার কারণ। কেননা; অনবরত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন ও ব্যবহারের কারণে ভবিষ্যতে সুপেষ পানির অভাব দেখা দিতে পারে। এজন্য বৃষ্টিনির্ভর আউশ ও আমনের আবাদ বাড়াতে হবে।
বিশ্বের কৃষি ব্যবস্থা আধুনিক হয়েছে। কৃষিতে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ও ধান চাষে আধুনিক জাত এবং প্রযুক্তির বিস্তার ও ব্যবহার বাড়াতে হবে। সেকেলে প্রযুক্তি আর প্রচলিত ধানের জাত দিয়ে এটা কখনোই সম্ভব নয়। যেমন; স্বল্পকালীন রোপা আমনে প্রচলিত জাত ব্রি ধান ৩৩ এবং ধান ৩৯ এর পরিবর্তে আধুনিক জাত ব্রি ধান ৬২, বি ধান ৬৬, ব্রি ধান ৭১ ও ব্রি ধান ৭২ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান ৪ চাষ করতে হবে। মধ্য মেয়াদি আমনে আগের জনপ্রিয় জাত বিআর ১১, ব্রি ধান ৩৭, বি ধান ৩৮ এর পরিবর্তে ব্রি ধান ৪৯ ও ব্রি ধান ৭০ এর চাষ করা যেতে পারে।
উত্তরের জেলাগুলোতে যেখানে বৃষ্টিনির্ভর স্বর্ণা জাতের প্রচলন রয়েছে সেখানে ব্রি উদ্ভাবিত আধুনিক আমন জাতসমূহ যেমনঃ ব্রি ধান ৬৬, ব্রি ধান ৭০, ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান৭২ জাতগুলো প্রবর্তন করা গেলে ফলনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এছাড়া অঞ্চলভেদে খরাসহনশীল ব্রি ধান ৫৬, ব্রি ধান ৬৬, ব্রি ধান ৭১, জলমগ্নতা সহনশীল ব্রি ধান ৫১ ও ব্রি ধান ৫২, লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি ধান ৪১, ব্রি ধান ৪৭, ব্রি ধান ৫৪ এবং ব্রি ধান ৭৩, বন্যাত্তোর বিআর ২২, বিআর ২৩ ব্রি ধান ৪১ এবং জোয়ারের পানি যেখানে জমে যায় সেসব এলাকায় ব্রি ধান ৪৪, ব্রি ধান ৭৬, ব্রি ধান ৭৭ চাষ করে কাক্সিক্ষত উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।
আবার বোরো মৌসুমে মেগা জাত (সর্বাধিক জনপ্রিয়) হিসেবে খ্যাত ব্রির জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান ২৮, ও ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে ও অনেক ভাল জাত বর্তমানে রয়েছে, যার মধ্যে ব্রি ধান ৫০, ব্রি ধান ৫৮ ব্রি ধান ৬০, ব্রি ধান ৬৩, ব্রি ধান ৭৪ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান ৩ উল্লেখযোগ্য। লবণাক্ততা প্রবণ এলাকার জন্য ব্রি ধান ৪৭ এর আধুনিক সংস্করণ ব্রি ধান ৬৭। আউশে পারিজা জামাইবাবু ও বিআর ২৬ এর পরিবর্তে যথাক্রমে ব্রি ধান ৪৮, ব্রি ধান ৬৫ এবং নেরিকা মিউটেন্ট প্রবর্তন করে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব।
শুধু কি নতুন জাত? বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন নতুন জাতের উপযোগী উৎপাদন প্যাকেজ। বেশ কয়েকটি প্রধান প্রধান রোগ ও বালাই প্রতিরোধ স্মার্ট ধানের জাত আছে বিজ্ঞানীদের হাতে। বিশ্বের সর্বপ্রথম জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত, এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান, ডায়াবেটিক ধানের জাত উদ্ভাবন এবং প্রো-ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইসের জাত উন্নয়ন করে সারা বিশ্বের সুনাম অর্জন করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা।
আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো গরু বা মহিষ দিয়ে হালচাষ এখন ইতিহাস। ধানের ক্ষেতে এখন শতভাগ কলের লাঙলের চাষ হয়। চারা রোপণ, আগাছা নিধন থেকে ধান কাটা ও মাড়াই সব কিছুতেই লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
ব্রি বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী ৩২টি কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছে এবং শ্রমিক সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত ৬০ ভাগ ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করছে।
উৎপাদনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো ভাল বীজ। কথায় বলে ভাল বীজে ভাল ফলন। ভাল বীজের অভাবে আমাদের কৃষকরা প্রায়শই প্রতারিত হন। বিষয়টি মাথায় রেখে ব্রি প্রতি বছর ১০০ টনের অধিক ব্রিডার (প্রজনন) বীজ উৎপাদন এবং বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষকের দোড়গোঁড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়া ব্রি থেকে ভিত্তি বীজ ও টিএলএস বিতরণের পরিমাণ প্রতি বছর বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
জরাব ঠরংরড়হ ভড়ৎ ইধহমষধফবংয: ২০৫০ ধহফ ইবুড়হফ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান প্রবন্ধকার ও ব্রির পরিচালক প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা ড. মোঃ শাহজাহান কবীরের মতে, ‘শুধুমাত্র ভাল জাত উদ্ভাবন নয়, কৃষকের কাছে এসব জাত পৌঁছানো ও বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে একটি জাত উদ্ভাবন করতে প্রায় ১৫ বছর সময় লাগে এবং সেটি কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় করতে লেগে যায় আরও প্রায় ১৩-১৯ বছর। এ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার লক্ষ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।’
তাই শুধু প্রযুক্তি উদ্ভাবন নয়- সেগুলো কৃষক পর্যায়ে চড়িয়ে দিতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। ব্রির প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত কৃষকসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং বিভিন্ন সংস্থার ৭৬ হাজারেরও বেশি বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, সম্প্রসারণ কর্মী ও কৃষককে আধুনিক ধান চাষের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান কর হয়েছে যা একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। আধুনিক ধানের চাষ, ধান চাষের সমস্যা, মাঠে ধানের রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার, ধান চাষীর বন্ধু, ধান চাষে কৃষকের প্রাথমিক জ্ঞান প্রভৃতি সম্প্রসারণমূলক প্রকাশনার ১২ লাখ কপি বিতরণ করা হয়েছে। রাইস নলেজ ব্যাংকের মাধ্যমে আধুনিক ধান চাষ সম্পর্কিত প্রযুক্তির বিস্তার, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নতুন প্রযুক্তির তথ্য প্রচার কৃষি যোগাযোগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অতএব, ২০৫০ সাল বা তার পরেও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ধান গবেষণায় অর্জিত ইনোভেশন ও পরিকল্পনা কাজে লাগাতে হবে। তবেই কেবল কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।