
শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ থেমে গেল ‘নিউজিল্যান্ড চমক’। সুপার টেনে একের পর এক শক্তিধর দলকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল কিউইরা। সেমিতে এসে সেই তারাই ইংলিশ আগ্রাসনের কাছে ধরাশায়ী। ৭ উইকেটের বিশাল জয়ে প্রথম দল হিসেবে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড। কিসের ধুন্ধুমার, কিসের উত্তাপ, ইয়ন মরগানদের পাওয়ার ক্রিকেটের কাছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা যে পাত্তাই পেল না! দিল্লীতে প্রতিপক্ষকে ১৫৩ রানে থামিয়ে দিয়ে প্রথম কাজটা করেন ইংলিশ বোলাররা। দুরন্ত ব্যাটিংয়ে তাতে সাফল্যের প্রলেপ বোলান জেসন রয় (৪৪ বলে ৭৮) - জো রুট (২২ বলে ২৭*) ও জস বাটলার (১৭ বলে ৩২*)। ১১ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ম্যাচসেরা রয়। ফল ২ ওভার ৫ বল আগেই ‘খেল খতম’। আজ ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালজয়ী দলের বিপক্ষে রবিবারের গ্র্যান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংলিশা।
ব্যাটিং পাওয়ার পর উইলিয়ামসন বলেছিলেন, টসে জিতলেও তিনি ব্যাটিংই নিতেন! হয়ত লড়াইয়ের শুরুতেই প্রতিপক্ষের ওপর একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করতে চেয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক। নাকি সত্যি তাই ভেবেছিলেন? উত্তরটা সরল নয়। অন্তত নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং দেখে সেটিই বলতে হবে। ১১তম ওভারে ১ উইকেটে ৯১, ১২তম ওভারে ১ শ’র ল্যান্ডমার্কে পা রাখতে মাত্র দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পরও ১৫৩Ñএ থেমে যাওয়ার দায় ব্যাটসম্যানদের। ঘুড়িয়ে বললে শেষদিকে অসাধরণ বোলিং করেছে ইংলিশরা। ক্রমশ ‘টেল হান্টার’ হয়ে ওঠা বেন স্টোকস ম্যাচের আগে বলেছিলেন ‘ডেথ ওভার’ বোলিং উপভোগ করছেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে বল হাতে আরও একবার সেটি উপস্থাপন করলেন বেন। জর্ডান-স্টোকসে নাভিশ্বাস নিউজিল্যান্ড শেষ ৪ ওভার থেকে তুলতে পেরেছে মাত্র ৩০ রানÑ হারিয়েছে ৫ উইকেট! অবিশ্বাস্য বৈকি।
ফিরোজ শাহ কোটলার ধীরগতির উইকেটেও মারাত্মক সব ইয়র্কার আর সেøায়ারে কিউই ব্যাটসম্যানদের তটস্থ করেছেন দুজনে। ১৮তম ওভারে পর পর দুই বলে লুক রনকি ও কোরি এ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন স্টোকস। কোনমতে ঠেকিয়ে তাকে বঞ্চিত করেছেন গ্রান্ট ইলিয়ট। ১৯তম ওভারে ৯ রান দেন জর্ডান। তবে স্টোকসের শেষ ওভারটি ছিল সত্যি অসাধারণ। মাত্র ৩ রান দেন ডানহাতি পেসার। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার ৪-০-২৬-৩। ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে কিউইদের সংগ্রহ সম্মানজনক অবস্থানে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান কলিন মুনরোর। ৩২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৬ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন ২৯ বছরের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ উইলিয়ামসনের। ২৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় এ রান করেন অধিনায়ক। ২৩ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ রান করে ফেরেন এ্যান্ডারসন। তারকা ওপেনার মার্টিন গাপটিলের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। এ পর্যন্ত ২০১০ সালে একবারই টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংলিশরা। এই প্রথম আবার সেমিতে, অতঃপর ফাইনালে মরগান বাহিনী।