ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

আফজালের ‘ঢাকা এ্যাটাক’

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৬

আফজালের ‘ঢাকা এ্যাটাক’

রাজধানীর তেজগাঁও কোকস্টুডিও জুড়ে পিনপতন নীরবতা। ‘ছবি তোলা নিষেধ’ সংক্রান্ত ঘোষণা আঁটা দেয়ালে দেয়ালে। ভেতরে বড়সড় সেট। এতোগুলো মানুষ, তবু কোনো কথা নেই। প্রত্যেকেই ব্যস্ত কাজে। মগ্ন। আফজাল হোসেনও। ক্যামেরা ফ্রেম এপাশ ওপাশ প্যান হয়ে বারবার তার চেহারায় স্থির হচ্ছে। তার চোখে স্বচ্ছ কাঁচের চশমা, গায়ে পুলিশের পোশাক। নির্লিপ্ত চোখমুখ। কোন কথা বলছেন না। তবে ঠোঁটদু’টো তার বিড়বিড় করে চলেছে সারাক্ষণ। চিত্রনাট্যে চোখ বুলিয়ে দেখা গেলো, সংলাপ এতো বড় নয়! তবু আফজাল ঠোঁটস্থ রাখতে চান। চরিত্রের মধ্যে ডুবে আছেন একেবারেই। এতো তার সিরিয়াসনেস! ‘কেন হবে না! পুরো শহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়ভার তো তার কাঁধেই। অনেক চাপ!’ ছবির গল্পের যোগসূত্র টেনে রসিকতা করে বলেন দীপংকর দীপন। আফজাল হোসেন নতুন যে ছবিতে অভিনয় করছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নামে, সেটি পরিচালনা করছেন দীপন। ক’দিন আগে ‘অনেকদিন পর আফজাল হোসেনকে চলচ্চিত্রে দেখা যাচ্ছে’ এমন আনন্দের সংবাদটি তিনিই জানিয়েছিলেন। ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এ আফজাল হোসেনের চরিত্রের ব্যপ্তি অতো বড় নয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ ভীষণ। ডিএমপি কমিশনার তিনি! ছবির গল্পে যখন ঢাকা শহর ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন, কন্ট্রোলরুমে বসে আফজাল হোসেন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ছবিতে তো আপনি খুব বেশি অভিনয় করেন না। ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এ কী মনে করে? ‘গল্প ভালো, চরিত্র ভালো’-এমন সব মুখস্ত বুলি না আওড়ে আফজাল নির্বিধায় জানিয়ে দেন, অনেকটা অনুরোধে। বিভিন্নজন তাকে অনুরোধ করেছেন, তিনি থাকলে ভালো হয়- অনুরোধ ফেলতে পারেননি। রাজি হয়েছেন। তবে তার মানে এটা নয় যে, গল্পটি তার পছন্দের নয়। প্রথমদিন ছবিটির শ্যূটিংয়ে তার মনোযোগ দেখে, আগ্রহ দেখে বোঝাই গেলো, চরিত্রটি তার বেশ পছন্দের। শুধু চলচ্চিত্র কেন- নাটকেও আজকাল আফজাল হোসেনকে খুব বেশি দেখা যায় না। প্রতি ঈদে চ্যানেল আইয়ের ‘ছোটকাকু’ সিরিজ পরিচালনা করেন, মাঝেমধ্যে নির্দেশনা দেন বিজ্ঞাপনচিত্রের। আর খুব ভালো গল্প পেলে, টিভি নাটকে। খানিকটা অভিমান থেকেই কী? হয়তো বা তাই। অনন্ত ‘এখন আর আমার অভিনয়ের প্রতি অতো আগ্রহ নেই, যেটা একটা সময় তাগিদ ছিলো‘- তার এ কথা থেকেই ধরে নেয়া যায়, বেশ অভিমান জমে আছে তার মধ্যে। কেন? কী নিয়ে? চারপাশে মারাত্মকভাবে সাংস্কৃতিক পচন চলছে। বইয়ের দোকান উঠে যায়, জমজমাট হয় খাবারের দোকান। ভালো গান, ভালো ছবি চলে না। এক ধরণের সস্তা চটুল বিনোদন গ্রাস করে নিচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে। ভালো ছবি বানিয়ে দেখানোর জায়গা নেই। সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে একেক করে। এ বিষয়গুলো খুব বেশি ভাবায় আফজাল হোসেনকে। তবে তার বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে তরুণদের ওপর। আশা করেন, এরাই সমাজকে বদলে দেবে একদিন। সুবাতাস বইবে ফের।
×