ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

এক নজরে আইএস

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫

এক নজরে আইএস

আইএস বিষয়ে সিএনএন একটি টাইমলাইন প্রকাশ করেছে। তাতে উগ্র জঙ্গী সংগঠনটির কর্মকা- ও ভয়াবহতা এক নজরে তুলে আনা হয়েছে। দীর্ঘ ওই টাইমলাইনে বলা হয়েছে, আল কায়েদার খ-াংশের একটি রূপ হিসাবে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক আইএসের আবির্ভাব ঘটে। ইরাক ও সিরিয়ার বাইরে বিশ্বব্যাপী ইসলামী শাসন বা খেলাফত প্রতিষ্ঠাই মূল লক্ষ্য। অষ্টাদশ শতকের ইসলামী শাসন ব্যবস্থা শরীয়াহ আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ডজনের বেশি লোককে একই সঙ্গে হত্যার দৃশ্য ভিডিও করে তারা প্রচার শুরু করে। প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি ও ধর্মীয় মৌলবাদীতাকে উস্কে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতো আধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করছে আইএস। ২০১৪ সালে আইএস ভূমধ্যসাগর থেকে দক্ষিণ বাগদাদ পর্যন্ত সিরিয়া ও ইরাকের ৩৪ হাজার বর্গমাইলেরও বেশি এলাকা দখল করে নেয়। তবে ২০১৫ সালের এপ্রিলে পেন্টাগন ঘোষণা দেয় যে, আইএস দখলকৃত স্থানের এক- চতুর্থাংশ উদ্ধার করা গেছে। তেল উত্তোলন, চোরাচালান, অপহরণের পর ক্ষতিপূরণ আদায়, চুরি করা হস্তশিল্প ও নৃতাত্ত্বিক সামগ্রী বিক্রি, চাঁদাবাজি এবং ফসল দখল করে আয় করে আইএস। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের পতন ও হত্যার পর তার সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য আইএসে যোগদান করে। বর্তমানে আইএসের নেতা হচ্ছেন আবু বকর আল-বাগদাদী। যাকে আবু দুয়াও নামেও ডাকা হয়। বর্তমানে তিনি সিরিয়ায় তাদের দখলকৃত এলাকায় অবস্থান করছেন। ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী ২০০৪ সালে বাগদাদীকে আটক করে এবং ক্যাম্প বাক্কায় কয়েক মাস আটকে রাখে। ওই সময় তাকে ততটা গুরুত্বপূর্ণ ভাবেনি যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৪ সালেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। আইএসআইএস ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের ঘোষণা দেয়ার পর তিনি আল-খলিফা ইব্রাহিম নামে আত্মপ্রকাশ করেন এবং এ নামেই তাকেই অনুসরণ করেন তার অনুগতরা। এক নজরে ২০০৪ : আবু মুসাব আল-জারকাওয়ি আল কায়েদা ইন ইরাক (আকি) প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ : জারকাওয়ির অধীনে আল কায়েদা ইরাকে শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা করে। ২০০৬ সালের ৭ জুন : যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণে জারকাওয়ি নিহত হন। তার জায়গায় আকির নতুন নেতৃত্ব নেন আবু আইয়ুব আল-মাসরি, যিনি আবু হামজা আল-মুহাজের নামেও পরিচিত। ২০০৬ সালের অক্টোবর : আকি নেতা মাসরি ইসলামিক স্টেট অব ইরাক (আইএসআই) সৃষ্টি করেন এবং এর নেতা হিসাবে আবু ওমর আল-বাগদাদীর নাম ঘোষণা করেন। ২০১০ সালের এপ্রিল : যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের যৌথ অপারেশনে আবু ওমর ও মাসরি নিহত হওয়ার পর আইএসআইয়ের নতুন নেতা হন আবু বকর আল-বাগদাদী। ২০১৩ সালের এপ্রিল : আইএসআই ঘোষণা দেয় তারা সিরিয়ায় আল কায়েদা সমর্থিত জাবহাত আল-নুসরা বা আল নুসরা ফ্রন্টকে একত্রিত করে নিয়েছে। আল বাগদাদী বলে এই গ্রুপটি এখন থেকে ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এ্যান্ড দি লেভেন্ট (আইএসআইএস) নামে চলবে। তবে আল-নুসরা ফ্রন্ট নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জাওলানি তাদেরকে আইএসআইএসের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি : নুসরা ফ্রন্ট ও আইএসআইএসের মধ্যে অন্তর্যুদ্ধের পর আল কায়েদা আইএসআইএসের প্রতি তাদের সমর্থন জানায়। ২০১৪ সালের মে : সিরিয়া থেকে আইএসআইএস ১৪০ জন কুর্দি শিশুকে অপহরণ করে। তাদের উগ্রপন্থী ধর্মীয় মতবাদে দীক্ষা নিতে বাধ্য করে। ২০১৪ সালের জুন : ৯ থেকে ১০ জুন আইএসআইএস মসুল বিমানবন্দর, টিভি স্টেশন ও সরকারী অফিস দখলে নেয় এবং এক হাজার বন্দীকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেয়। ১০ থেকে ১১ জনু মসুল ও তিরকিত পুরোপুরি দখলে নিয়ে নেয়। ২০ জুন জাতিসংঘ ঘোষণা দেয় যে, ১০ লাখেরও বেশি ইরাকীকে বাস্তুচ্যুত করেছে আইএসআইএস। ২১ জুন সিরিয়ার সীমান্ত শহর আল-কায়িমসহ তিনটি ইরাকী শহরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এই জঙ্গী সংগঠনটি। ২৮ জুন ইরাকের কুর্দিস্তান শরণার্থীদের সীমান্ত অতিক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২৯ জুন আইএসআইএস সব রাষ্ট্রে ইসলামী শাসন বা খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। ওইদিন আল-বাগদাদী নিজেকে বিশ্বের আনুমানিক ১৫০ কোটি মুসলিমদের শাসক বা কর্তৃপক্ষ হিসেবে ঘোষণা দেন। আইএসআইএসের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ইসলামিক স্টেট বা আইএস। ৩০ জুন জাতিসংঘ ঘোষণা দেয় ১২ লাখ ইরাকী জোরপূর্বক তাদের ঘর-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পেন্টাগন ঘোষণা দেয়, যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, বিমানবন্দর ও ইরাকী জনগণকে রক্ষায় আরও ৩শ’ ট্রুপ পাঠাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের মোট ট্রুপের সংখ্যা দাঁড়াল ৮শতে। ২০১৪ সালের জুলাই : আইএসআইএস সিরিয়ার সবচেয়ে বড় তেলখনি দখলে নেয়। একটি হোম প্রদেশের একটি গ্যাসক্ষেত্রে ১২ জন কর্মীকে হত্যা করে তা দখলে নেয়। জঙ্গীরা সিরিয়াদের ইজর শহর থেকে ইরাকের সীমান্ত পর্যন্ত ৯০ মাইল এলাকা দখল করে নেয়। খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে মসুলে প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় স্থাপনা জোনাহ টম্বকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। ২০১৪ সালের আগস্ট : ৬ আগস্ট আইএসআইএস ইরাকে ক্ষুদ্র সম্প্রদায় ইয়াজিদি গোষ্ঠী অধ্যুষিত শহর সিনজার দখলে নেয়। তারা ওই সময় ৫শ’ ইয়াজিদি পুরুষকে হত্যা করে, ৭০ জন শিশু পিপাসায় মৃত্যুবরণ করে। আর নারীদের যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়। ৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আইএসআইএসের ওপর বিমান হামলা করে। পাল্টা হামলা করে আইএসআইএসও। ১৯ আগস্ট আইএস ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করে। সেখানে দেখানো হয় মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলেকে কিভাবে শিরñেদ করা হচ্ছে। এই সাংবাদিক ২০১২ সালে সিরিয়া থেকে নিখোঁজ হন। তারা আরেক মার্কিন সাংবাদিককেও শিরñেদ করবে বলে হুমকি দেয়। অনুমান করা হয়েছিল তাদের হাতে হয়ত সাংবাদিক স্টিভেন সটলোফ বন্দী আছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর : ২ সেপ্টেম্বর আইএস আরেক ভিডিও প্রচার করে তাতে মাকিন সাংবাদিক স্টিভেন সটলোফের শিরñেদ দেখানো হয়। যেই ব্যক্তি শিরñেদ করেছিল সে ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজী বলছিল। ১১ সেপ্টেম্বর সিআইএ ঘোষণা দেয়, আইএসের জন্য আগের তুলনায় তিনগুণ যোদ্ধা যুক্ত হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর আইএস নিজস্ব ওয়েবসাইটে ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী ডেভিড হেইনেসের শিরোñেদের ভিডিও প্রদর্শন করে। এটা ছিল এক মাসে তিনজন পশ্চিমা ব্যক্তিকে হত্যা। ওই সময় ভিডিওতে অপর ব্রিটিশ নাগরিক অ্যালান হেনিংকে দেখানো হয় এবং হুমকি দেয়া হয় যে শীঘ্রই তাকেও হত্যা করা হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আইএসের ওপর আবারও বিমান হামলা চালায়। ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর : আইএস এ্যালান হেনিংয়ের শিরোচ্ছেদের ভিডিও প্রচার করে এবং পরবর্তী হত্যার জন্য মার্কিন ত্রানকর্মী পিটার কাসিগ ডিন আবদুল-রহমান কাসিগ নামে পরিচিত তাকে ভিডিওতে দেখায়। ২০১৪ সালের নবেম্বর: ৩ নবেম্বর ইরাকী সরকার জানায়, ক্ষুদ্র সম্প্রদায় আলবু মিনরের ৩২২ জনকে হত্যা করেছে। ১৪ নবেম্বর জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন জানায় আইএস যুদ্ধাপরাধ করছে এবং তারা মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। ১৬ নবেম্বর মার্কিন ত্রাণকর্মী পিটার কাসিগের শিরোñেদের ভিডিও প্রকাশ করে আইএস। ২০১৫ সালের জানুয়ারি : ১৭ জানুয়ারি ইরাকের কুর্দিস্তানের এক কর্মকর্তা জানান, আইএস ২৫০ জন ইয়াজিদিকে ছেড়ে দিয়েছে যাদের বেশিরভাগই শিশু এবং বয়স্ক। ২০ জানুয়ারি আইএস অপহৃত দুই জাপানি নাগরিক কেনিজ গতো এবং হারুনা ইয়াকুয়ার মুক্তির বিনিময়ে জাপান সরকারের কাছে ২শ’ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করে। ২২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, এ পর্যন্ত তাদের বিমান হামলায় ৬ হাজার আইএস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এখনও আইএসের ৯ থেকে ১৮ হাজার যোদ্ধা রয়েছে এবং হাজার হাজার অনুসারী রয়েছে। ২৪ জানুয়ারি আইএস একটি অনলাইন ভিডিও প্রচার করে যাতে দেখানো হয়, দুই জাপানী নাগরিকের একজন কেনিজ গতো অপর নাগরিক হারুনা ইয়াকুয়ার শিরোñেদের ছবি ধরে আছে। ভিডিওতে বলা হয়, জর্দানে বন্দী শীর্ষ জঙ্গী সাজিদা আল-রিশায়িকে মুক্তি দিলে তারা কেনিজ গতোকে ছেড়ে দেবে। ৩১ জানুয়ারি কেনিজ গতোর শিরোñেদের ভিডিও প্রচার করা হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি : ৩ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে আইএস ভিডিও ও স্থিরচিত্র প্রকাশ করে যাতে দেখানো হয়, জর্দানের সামরিক পাইলট মোয়াথ আল-কাসাবেহকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ৫ ফেব্রুয়ারি জর্দান সিরিয়ার ওপর বিমান হামলা চালায়। আইএসের রাজধানী রাক্কা, তাদের প্রশিক্ষণ স্থান ও অস্ত্র মজুদের জায়গার ওপর হামলা চালানো হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি আইএস এক অনলাইন পোস্টে দাবি করে, জর্দানের বিমান হামলায় ধসে পড়া ভবনে মার্কিন নাগরিক কায়লা জিন মুলার মারা গেছেন। ১০ ফেব্রুয়ারি কায়লার পরিবার আইএস থেকে পাওয়া মরদেহের ছবি দেখে নিশ্চিত করে যে তিনি নিহত হয়েছেন। ১১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আইএসআইএসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক বাহিনী ব্যবহারের বিষয়টি কংগ্রেসে উত্থাপন করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ার একটি সৈকতে ২১ জন মিসরীয় খ্রিস্টানকে শিরñেদের ভিডিও প্রচার করে আইএস। ১৬ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ায় আইএসের অবস্থানগুলোতে যুদ্ধ বিমান হামলা চালায় মিসর। ২০ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ার গোব্বায় আত্মঘাতী গাড়ি বোমায় ৩০ জন নিহত ও ৪০ জনেরও বেশি আহত হয়। আইএসের লিবিয়া শাখা উইলায়াত আল-বারকা ওই হামলার দায় স্বীকার করে। ২২ ফেব্রুয়ারি ২১ জন কুর্দি যোদ্ধাকে খাঁচায় বন্দী অবস্থায় ইরাকের রাস্তায় টেনে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও প্রচার করে আইএস। ভিডিওর শেষ দৃশ্য পর্যন্ত কুর্দি যোদ্ধাদের জীবিত দেখা গেছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমা অপহৃতদের শিরñেদকারী ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজী বলা ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইমওয়াজি। কুয়েতি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ। ওইদিন আইএস মসুলের জাদুঘরে প্রতœতাত্ত্বিক নির্দশনগুলো ধ্বংসের ভিডিও প্রচার করে। ২০১৫ সালের মার্চ : ১ মার্চ আইএস উত্তর সিরিয়া থেকে অপহৃত ২২০ জনের মধ্যে ১৯ জন খ্রিস্টানকে মুক্তি দেয়। ৪ মার্চ আইএসআইএস একটি ছবি প্রকাশ করে যাতে দেখা যায় একজনকে উঁচু ভবন থেকে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। হোমোসেক্সের অভিযোগে নিজেদের ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে আইএস। ৭ মার্চ নাইজেরিয়াভিত্তিক উগ্র জঙ্গী সংগঠন বোকো হারামের নেতা আবু বকর শেকু এক অডিও বার্তায় আইএসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে একতা প্রকাশ করে। ১২ মার্চ আইএসের এক মুখপাত্র অডিও বার্তায় জানায়, খেলাফত পশ্চিম আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। আইএসআইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদী বোকো হারামকে জোটে নিতে রাজি হয়েছেন। একই দিনে ইরাকী সেনারা তিরকিতের বেশিরভাগ আইএসের দখল থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। আইএস রামাদির উত্তরে ইরাকের সেনাসদর বোমায় গুঁড়িয়ে দেয়। এতে কমপক্ষে ৪০ জন ইরাকী সেনা নিহত হয়। ২০১৫ সালের এপ্রিল : ৮ এপ্রিল আইএসআইএস ২শ’ ইয়াজিদি নারী ও শিশুদের মুক্তি দেয় যাদের বেশিরভাগই অসুস্থ ও বয়স্ক। ১৯ এপ্রিল লিবিয়ার বিভিন্ন স্থানে ৩০ ইথিওপিয় নাগরিকের শিরñেদের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ২০১৫ সালে মে : ১৬ মে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে আইএসের এক নেতা ও তার স্ত্রী নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ওই অভিযানে আইএসের অবকাঠামো ও যোগাযোগ নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ১৭ মে আইএস ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর রামাদিতে তাদের নিয়ন্ত্রণ আবার প্রতিষ্ঠা করে। ২১ মে সিরিয়ার মরুভূমিতে দুই হাজার বছরের পুরনো শহর পালমায়রাতে আইএস নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৫ সালের জুন : ১ জুন মার্কিন জেনারেল হক কারলিসলে জানান, মার্কিন সেনাবাহিনী জঙ্গীদের ধরতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। অনেক আইএস সদস্য সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে। সেখান থেকে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে হামলা চালানো হয়েছে এবং বেশকিছু স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। ১৪ জুন ইরাকে শিয়া সম্প্রদায়ের মিলিশিয়া গ্রুপের সদর দফতরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো কিশোর তালহা আসমলের পরিচয় বের করা হয়। ১৭ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক তালহা মার্চে ইংল্যান্ড থেকে আইএসে যোগ দেয়। ওই হামলায় ১১ জন নিহত হয়। হামলার আগে তালহার ছবি পোস্ট করে আইএস। ১৯ জুন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সন্ত্রাসবাদের ওপর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে আইএসকে আল কায়েদার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ, নৃশংস ও মানবতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২৬ জুন তিউনিশিয়ায় সমুদ্র উপকূলবর্তী এক হোটেলে একজন বন্দুকধারী ৩৮ জনকে হত্যা করে এবং একই দিনে কুয়েতের একটি মসজিদে বোমা হামলায় ২৭ জন নিহত হয়। দুটি হামলারই দায় স্বীকার করে আইএস। ২০১৫ সালের জুলাই : ১ জুলাই আইএস মিসরের ৫টি সামরিক চেকপয়েন্টে একই সময়ে হামলা চালিয়ে ১৭ সেনাকে হত্যা করে। আহত হয় ৩০ জন। ওই হামলায় মিসরীয় সেনাদের হাতে আইএসের একশ’ যোদ্ধা নিহত হয়। ইরাকী নাগরিকরা ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনের জন্য কেনাকাটা করছিলেন। সে সময় আইএস মার্কেটে বরফের ট্রাক তুলে দিয়ে ১২০ জনকে হত্যা করে। আহত হন ১৬০ জনেরও বেশি। এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, বছরের প্রথম ছয়মাসে আইএস ৯ দশমিক ৪ শতাংশ স্থানে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে প্রায় ৩২ হাজার বর্গমাইলের ওপর। ২০১৫ সালের আগস্ট : সিরিয়ার পালমায়ারায় দুই হাজার বছরের পুরনো মন্দির বালস্বামী পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলে আইএস। ইউনেস্কো এটাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে। ২০১৫ সালের নবেম্বর : ১২ নবেম্বর পেন্টাগন ঘোষণা দেয় যে, সেই ব্রিটিশ উচ্চারণের ইংরেজী বলা জঙ্গী মোহাম্মদ ইমওয়াজি ওরফে জিহাদী জন রিমোট কন্ট্রোল ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছে। ইমওয়াজি যে গাড়িতে ছিল সেই গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়। ওইদিন দক্ষিণ বৈরুতের বুর্জ আল-বারাজনেহ জেলাতে দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জন নিহত এবং শত শত আহত হয়। ওই হামলায় দায় স্বীকার করে আইএস জানায়, হামলার জন্য দু’দিন আগে তারা সিরিয়া থেকে লেবাননে অবস্থান করছিল। ১৩ নবেম্বর দু’দিন যুদ্ধের পর ইরাকের কুর্দিস সেনাবাহিনী আইএসআইএসের দখল থেকে সিনজার শহর মুক্ত করে বিজয় ঘোষণা করে। ওই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেয়। ওইদিন প্যারিসে ভয়াবহ হামলা চালায় আইএসআইএস। তিনটি সশস্ত্র দল একই সময়ে প্যারিসের ছয়টি স্থানে হামলা চালিয়ে ১২৯ জনকে হত্যা করে। আহত হন শত শত।
×