নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ১৬ জুন ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধে দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুজাহিদের আপীলের রায়ে খুশি ফরিদপুরবাসী। তবে নিজেদের গ্রামের গণহত্যার সর্বোচ্চ বিচার না হওয়ায় খুশি হতে পারেনি ফরিদপুর সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের বকচর গ্রামে নিহতদের স্বজন ও সাক্ষীরা। এ রায়ে সন্তোষ জানিয়ে ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। বিতরণ করা হয়েছে মিষ্টি, পোড়ানো হয়েছে মুজাহিদের কুশপুতুল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাত নম্বর অভিযোগ হিসেবে অন্তর্ভুুক্ত করা হয় মাচ্চর ইউনিয়নের বকচর গ্রামের গণহত্যা। ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এ গণহত্যার দায়ে মুজাহিদকে মৃত্যুদ- দিয়েছিল। মঙ্গলবার আপীলের রায়ে এ গণহত্যার রায় মৃত্যুদ- পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন করা হয়। বকচর গণহত্যার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা চিত্ত সাহা ওরফে শক্তি। তিনি বলেন, আপীলে এ গণহত্যার ব্যাপারে মৃত্যদ- বহাল রাখাই উচিত ছিল। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারিনি।
বকচরের গণত্যার সময় ঝর্ণা সাহাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। ঝর্ণা সাহার খালাত ভাই গোপাল সাহা রায় পরিবর্তন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, আমরা এ রায়ে বিস্মিত, হতবাক।
ফরিদপুর শহরের রথখোলা এলাকার মৃত রমেশ চন্দ্র নাথের ছেলে রণজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটকে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদ- দেয় ট্রাইব্যুনাল। আপীলে সে রায় বহাল রাখা হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রণজিৎ নাথ জানান, আজ আমার আনন্দের আর সীমা নেই। আমার আশা পূরণ হয়েছে। এলাকার লোকজনও খুশি, আনন্দিত। তিনি এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি করেন।
এদিকে আপীলের রায় ঘোষণার পর ফরিদপুরে প্রথম আনন্দ মিছিল বের করে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মাহমুদ ওরফে শামীম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিলটি সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে মুজিব সড়ক হয়ে থানা রোডে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
সোয়া ১১টার দিকে ‘যুদ্ধাপরাধী রাজাকার মুজাহিদের রায় হলো, ফরিদপুরবাসী খুশী হলো’ ব্যানার নিয়ে আনন্দ মিছিল বের করে জেলা আওয়ামী লীগ। মিছিলটি আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে মুজিব সড়ক হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। এ সময় বক্তব্য দেন ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন ওরফে বাবর। তিনি ‘স্বাধীনতাবিরোধী কুখ্যাত দালালের ফাঁসির রায় বহাল থাকায়’ দ্রুত এ রায় কার্যকরের দাবি জানান। পরে প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে মুজাহিদের কুশপুতুল পোড়ানো হয় এবং মিষ্টি বিতরণ করা হয়।