
ছবি : সংগৃহীত
১৯৮৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ঘোষিত প্রতিটি জাতীয় বেতন স্কেলে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেডের বিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সুবিধার আওতায় একজন স্থায়ী সরকারি কর্মচারী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত একই পদে কর্মরত থাকলে পদোন্নতি ছাড়াই বেতনক্রমে উন্নীত হওয়ার সুযোগ পেতেন। তবে, ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের মাধ্যমে এই পূর্ববর্তী বিধান বাতিল করে দেওয়া হয়। স্কেলটির প্যারাগ্রাফ ৬-এর মাধ্যমে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেডের নিয়মগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং প্যারাগ্রাফ ৭-এর মাধ্যমে “উচ্চতর গ্রেড” নামে একটি নতুন প্রভিশন চালু করা হয়।
উচ্চতর গ্রেডের আওতায় বলা হয়, কোনো স্থায়ী সরকারি কর্মচারী যদি একই পদে পদোন্নতি ছাড়াই ১০ বছর চাকরি করেন, তবে ১১তম বছরে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হবেন। আবার সেই একই পদে পরবর্তী ৬ বছর চাকরি করলে, তিনি আরও এক ধাপ উন্নীত হবেন। তবে, এই সুবিধা থেকে দুই শ্রেণির কর্মচারীকে বাইরে রাখা হয়, যারা ইতোমধ্যে জাতীয় বেতন স্কেলের চতুর্থ গ্রেডে রয়েছেন এবং যারা পূর্বে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড নামে পরিচিত দুইটি সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
২০১৬ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে, যেখানে বলা হয়, পূর্বে যেই কর্মচারীরা টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড নামে যেকোনো একটি সুবিধা পেয়েছেন, তারা আরেকটি সুবিধা পাবেন না। এটি মূল আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায়, এই পরিপত্রের বৈধতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। হাইকোর্টে দায়ের করা রিট পিটিশনে যুক্তি তুলে ধরা হয় যে, ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের মূল বিধানে যাদের দুইটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড ছিল, তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু যারা একটি পেয়েছেন, তাদেরকে দ্বিতীয়টি না দেওয়ার বিষয়ে কোনো বিধান ছিল না। হাইকোর্ট এই পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং রায়ে বলে, যারা পূর্বে একটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, তারা দ্বিতীয়টিও পাওয়ার অধিকার রাখেন।
সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং আপিল বিভাগে শুনানি শেষে বিচারপতিরা রায় প্রদান করেন। রায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের পরিপত্রের সংশ্লিষ্ট ধারা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় আংশিক সংশোধন করে পুনরায় বহাল রাখা হয়। এই রায়ের ফলে, এখন থেকে কেউ যদি পূর্বে একটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড নিয়ে থাকেন, তবুও তিনি দ্বিতীয়টি পাওয়ার জন্য আইনগতভাবে বাধাহীন থাকবেন।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে প্রজাতন্ত্র এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ১৫ লক্ষ কর্মচারীর জন্য দুইটি উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির আইনগত পথ উন্মুক্ত হলো, যা জাতীয় বেতন স্কেল প্রযোজ্য সকলের জন্য একটি যুগান্তকারী উন্নয়ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সূত্র:https://youtu.be/WxU0YqZgnxY?si=aRVLN1uQs4mH566J
আঁখি