
একসময় ছিলেন নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় চরম প্রভাবশালী ছাত্রনেতা। তার নাম শুনলেই থমকে যেত দোকানপাট, সাধারণ মানুষ সাহস পেত না চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার। অথচ সেই রাজকীয় প্রভাব আজ বিলীন—ঢাকা কলেজের মুক্তমঞ্চে এক গাছের ছায়াতলে নিঃস্ব, ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি হিসেবে কাটে তার দিনরাত।
তিনি মোস্তফা কামাল রাজু—ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের (পলাশ-ফিরোজ কমিটি) সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯৯৮-৯৯ সেশনের শিক্ষার্থী, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
ছাত্রজীবনে রাজু ছিলেন দীর্ঘদেহী, সুদর্শন এবং রাজনৈতিক নেতাদের নজরকাড়া এক মুখ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি জড়িয়ে পড়েন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে। রিকশাচালক থেকে বড় ব্যবসায়ী—কেউই বাদ যেত না তার ত্রাসের হাত থেকে। অভিযোগ রয়েছে, ফুটপাত, দোকান এমনকি ভিক্ষুকদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করতেন তিনি।
ঢাকা কলেজের নাইট গার্ড শাহ আলম বলেন, “রাজু সবসময় দুই কোমরে পিস্তল নিয়ে চলতো। পুরো নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা তার নামেই কাঁপত। কেউ তার মুখের উপর ‘না’ বলতে পারতো না।”
অন্য এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “তাকে কেউ কিছু বলার সাহস করতো না। ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল সে। অথচ শুনেছি তার পারিবারিক পটভূমি ভালো ছিল।”
আজ সেই রাজু নি:স্ব, মানসিক ভারসাম্যহীন। দিন কাটে মুক্তমঞ্চে, খাবার জোটে মানুষজনের কাছে হাত পেতে। কখনো টাকাও চান। কেউ কেউ বলেন, ‘সময়ের প্রতিশোধ’, কেউ বলেন ‘অভিশাপের ফল’।
চায়ের দোকানদার রাজ্জাক বলেন, “একসময় সে নর্থ হলের টেন্ডারও জোর করে দখল করেছিল। এখন সে মুক্তমঞ্চে গাঁজা খায়। এসবই মানুষের উপর অন্যায় করার ফল।”
তবে তার এই অবস্থানকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উদ্বেগও তৈরি হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী মনে করেন, “তৃতীয় পক্ষ হয়তো তাকে ক্যাম্পাসে ব্যবহার করতে পারে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য।” তাই দ্রুত তাকে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নুসরাত