
ছবি : সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামে কৃষি জমি থেকে উদ্ধারকৃত একটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাত ৭টা ৫৬ মিনিটে এ বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রামটির অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মারা গেছে তিনটি গরু।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের মসজিদের পাশে হানিফের কৃষি জমিতে আইল তৈরির সময় মাটির নিচে ধরা পড়ে একটি বস্তু। স্থানীয়রা প্রথমে এটিকে সীমানা পিলার মনে করলেও পরে পুলিশ এসে নিশ্চিত করে এটি একটি পুরনো অবিস্ফোরিত মর্টার শেল।
ঘটনাটি জানার পর মঙ্গলবার বিকেল থেকে কাজ শুরু করে পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিট। রাত পৌনে ৮টার দিকে মর্টার শেলটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। কিন্তু বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে থাকা দোকানঘরও উড়ে যায়। স্থানীয় চা দোকানি আব্দুর রশিদ জানান, “বিস্ফোরণের পর আমার দোকানের প্রায় সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। আশপাশের অন্তত ৫০টি বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি গরু-বাছুরও মারা গেছে।”
ঘটনার সময় আশেপাশের এলাকা ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে বলে জানান চার কিলোমিটার দূরে থাকা বালুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা, বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা চড়াও হন পুলিশ এবং সংবাদকর্মীদের ওপর।বিস্ফোরণের ফলে সেলিম, হারেস, রশিদ, রফিজ, রেনু মিস্ত্রী, ফরিদ হোসেন, আব্দুল হান্নান, মানিক মিয়া, জলিল, মুক্তার হোসেন, আব্দুল গাফফার, সেলিম মিয়া ও বারেকসহ অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশিক নামে এক কৃষকের গোয়ালে থাকা তিনটি গরুও বিস্ফোরণে মারা যায়।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, সেনাবাহিনীও ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।”
এই বিস্ফোরণ গ্রামীণ জনপদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন তুলছে— এমন ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান কেন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চালানো হলো?
আঁখি