ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

শাহজালালে কাস্টমসের লকার থেকে সোনা চুরি

কিনারা হয়নি ২০ মাসেও এবার তদন্তে দুদক

নিয়াজ আহমেদ লাবু

প্রকাশিত: ০০:০২, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

কিনারা হয়নি ২০ মাসেও এবার তদন্তে দুদক

শাহজালালে কাস্টমসের লকার থেকে সোনা চুরি

চারটি বড় রাষ্ট্রীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও ব্যর্থ। ২০ মাসেও কূল কিনারা করতে পারেনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের লকার থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি সোনা চুরি বা গায়েবের ঘটনার মামলাটি। অবশেষে থলের বিড়াল বের করতে চাঞ্চল্যকর এই মামলার ফাইলটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে রহস্য উদ্ঘাটনের মাঠে নেমেছে দুদক। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। এতে কিছু নতুন তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পর কমিশনের অনুমোদনক্রমে টিম গঠন করে অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এনবিআর ও ঢাকা কাস্টম হাউসের পৃথক তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন নথিপত্র তলব করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, সরকারি লকার থেকে সোনা চুরি হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। মঙ্গলবার সোনা চুরির মামলার দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তর করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, চার মাস আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের সুরক্ষিত লকার থেকে ৬১ কেজি সোনা চুরি বা গায়েবের ঘটনাটি ফাঁস হয়েছিল। সেটি গোপন রেখেছিল সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে প্রাথমিক হিসাবে সাড়ে ৫৫ কেজি সোনা চুরি হয়েছে বলে জানান ঢাকা কাস্টম কর্মকর্তা।

এই চুরির ঘটনায় জড়িত কাস্টমস বিভাগের নিম্নস্তরের কিছু কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসার আগে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি থামকে যায়। এতে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় কাস্টম বিভাগের রহস্যময় ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তা। আর পেছনে রয়ে যায়  গোপনে সোনা চুরির  ও চোরকারবারিদের নাম। 
যদিও এরই মধ্যে ঢাকা কাস্টমস, এনবিআর, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির পর পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও রাষ্ট্রীয় গোপন বিভাগ কস্টমস বিভাগের লোকারের সোনা চুরির ঘটনা কোনো কূল কিনারা করতে পারেনি। সংশ্লি­ষ্টরা জানান, কাস্টমসের ওপরের স্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া দিনের পর দিন এমন অপকর্ম হতে পারে না।
এবার সেই থলের বিড়াল বের করার জন্য মাঠে নেমেছে  দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মহাচোরদের মুখোশ উন্মোচনে তদন্ত টিম গঠন করেছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এনবিআর ও ঢাকা কাস্টম হাউসের পৃথক তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন নথিপত্র তলব করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ঘটনা বের করতে চায় দুদক।  
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের লকার থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনাটি বড় অপরাধ। এটি সরকারি সম্পদ। তাই এটা দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ। সেই বিবেচনায় দুদক অনুসন্ধান শুরু করেছে। অনুসন্ধান টিম দুদকের আইন ও বিধি অনুসরণ করে অনুসন্ধান শেষে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে এর আগে গতবছর থেকে দুদক রাষ্ট্রের সুরক্ষিত কোষাগার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের লকার থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি সোনা চুরির ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক। তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সোনা চুরির মামলাটি তদন্ত হাতে পাননি সংস্থাটি। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে কাস্টমস লকারে ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ধাপেই ঘাটতি দেখা গেছে। ওই লকারের আশপাশের সিসি ক্যামেরা নষ্ট ছিল।

কাস্টমসের লকারে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন নিরীক্ষা কর্মকর্তা থাকার কথা, যিনি প্রতি মাসে নিরীক্ষা প্রতিবেদন কমিশনারের কাছে পেশ করবেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিরীক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব ও প্রতিবেদন নিয়ে অসংগতি ছিল। অপরদিকে  কাস্টমস লকারে এত পরিমাণ সোনা থাকাটাও বড় সন্দেহজনক। ৫৫ থেকে ৬২ কেজি সোনা চুরি হওয়া ছাড়াও অন্তত ১০০ কেজির বেশি সোনা লকারে মজুত ছিল। সোনা চুরির ঘটনার পর বাকি মজুতকৃত সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে লকারে ১৫০ কেজি সোনা ছিল। এতদিন রাষ্ট্রের সুরক্ষিত এই কোষাগারে বিশাল এই সোনা মজুত ছিল। তা নিয়ে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, সুরক্ষিত কোষাগারটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই কোষাগারের  আশপাশের অনেকের যাতায়াত ছিল। কেন কোষাগারটি বেহাল ছিল? কেন নজরদারি ছিল না? তা নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কার কার গাফিলতি রয়েছে, দুদকের অনুসন্ধানে সেসব গুরুত্বপূণ অংশগুলো দেখা হচ্ছে।

এর পেছনে কোনো শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করেছে কিনা, সেটাও খুঁজে বের করা হবে। ২০২৪ সালে পিবিআই এই মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে কাস্টমস গুদামে নানা অসংগতি পান। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলাটি মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করে।
সোনা চুরি মামলার তদন্তে দুদক ॥ দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি সোনা চুরির মামলার দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার মামলাটি হস্তান্তরের পর দুদক অনুসন্ধান টিম কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর আগে সংস্থাটি এই গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি তদন্ত করছিলেন। 
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের গুদামে থাকা লকার থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় ঢাকা কাস্টমস  বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করে।
ওই সময় ঢাকা শুল্ক বিভাগের তৎকালীন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। থানা পুলিশ, ডিবির পর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় মামলাটি এখন অনুসন্ধান করবে দুদক।
মামলায় যা ছিল ॥ বিমানবন্দরের কাস্টমস লকার থেকে সোনা চুরির ঘটনায় ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। যদিও ওই সময় কারও নাম উল্লে­খ করা হয়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সোনা চুরির বিষয়টি ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম কর্মকর্তা মাসুদ রানার নজরে আসে। পরবর্তীতে গুদামে রাখা মূল্যবান বস্তু চুরি হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়। যাচাইকালে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময় আটক হওয়া ডিএমের (ডিটেনশন মেমো) ৫৫.৫১ কেজি সোনার বার ও অলংকার লকার ভাঙা আলমারিতে পাওয়া যাচ্ছে না।

চুরি হওয়া সোনার বর্তমান বাজারমূল্য ৪৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে উদ্ধার হওয়া ৪৮টি ডিএম বার, যার ওজন ৮.০২ কেজি এবং ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ে আটক ৩৮৯টি ডিএম বার, যার মোট ওজন ৪৭.৪৯ কেজি, আলমারির লকার ভেঙে চুরি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়নি। ২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে পরের দিন সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কে বা কারা বর্ণিত সোনার বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি করেছে।

ঢাকা কাস্টমসের করা ফৌজদারি মামলাটি প্রথমে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করে। এ সময় ডিবি পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, আকতার শেখ এবং সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার, রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও আফজাল হোসেন। তারা বিভিন্ন পর্যায়ে গুদামের দায়িত্ব পালন করতেন।
বড় অগ্রগতি ছাড়াই মামলাটি ডিবি থেকে গত ২০ সেপ্টেম্বর তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। পিবিআই দায়িত্ব পাওয়ার পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
সেদিন কি ঘটেছিল ॥ ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১২টা থেকে পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের সোনার বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি হয়। ওইদিন সকাল ৯টার দিকে অফিসিয়ালি ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও গুদামের দায়িত্বে থাকা রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ রানা শুল্ক বিভাগের একজন যুগ্ম কমিশনারকে গুদামের মূল্যবান পণ্যসামগ্রী রাখার একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙার বিষয়টি অবহিত করেন।

এমন সংবাদ পেয়ে ঢাকা শুল্ক বিভাগের কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও যুগ্ম কমিশনার ওই গুদাম পরিদর্শন করেন। তারা গুদামের একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙা দেখেন। গুদামের পূর্বপাশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের বাতাস যে অংশ দিয়ে বের হয়, সেখানকার টিনের কিছুটা অংশ কাটাও দেখতে পান তারা।

পরে তারা গুদামের দায়িত্বে থাকা চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চারজন সিপাহিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরা হচ্ছে- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ রানা, সাইফুল ইসলাম শাহেদ, শহিদুল ইসলাম ও আকতার শেখ। চার সিপাহি হচ্ছে- রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার।
তাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক কোনো উত্তর পাননি তারা। কী পরিমাণ সোনা ও অন্যান্য পণ্য চুরি হয়েছে, তা বের করার জন্য পরিদর্শনে আসা ওই তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মৌখিক নির্দেশনা দেন। সেদিন দিনভর বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে ইনভেনটরি শেষে ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম সোনা চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপরই দেশজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পরে এই চুরির ঘটনা তদন্তের জন্য কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করে ঢাকা কাস্টম হাউস। যারা ২০২২ সালের ২ নভেম্বর এনবিআরের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা কাস্টমসের তদন্ত প্রতিবেদন যুগ্ম কমিশনার মিনহাজ উদ্দীন জানান, প্রতিবেদন এনবিআরে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এনবিআরে যোগাযোগ করলে ভালো হয়।
যা আছে প্রতিবেদনে ॥ বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের নিজস্ব ইনভেনটরিতে বেহাত হওয়া সোনার পরিমাণ ছিল ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম। তদন্ত প্রতিবেদনে বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ কেজি। ঘটনায় দুজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন সিপাহির দায়িত্ব অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার।

তারা ওই গুদামে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও কাস্টমসের মামলার সূত্র ধরে চার কর্মকর্তাকে ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হচ্ছে- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম সাহেদ, মোঃ শহীদুল ইসলাম, মাসুম রানা ও আকরাম শেখ।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে নানা অসংগতি ও গাফিলতির কথা বলা হলেও সুনির্দিষ্টভাবে বড় কোনো কর্মকর্তা কিংবা অন্য কোনো প্রভাবশালী মহলের কোনো তথ্য ছিল না।  তবে তদন্ত প্রতিবেদনে  সিসি ক্যামেরার স্বল্পতা, নিয়মিত নিরীক্ষা প্রতিবেদন না পাওয়া, মজুত হওয়া স্বর্ণ সময় মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে না পাঠানো এবং জনবল সংকটের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সুরক্ষিত এই কস্টমস লকার থেকে বিশাল এই স্বর্ণ চুরির ঘটনা কস্টমস হাউসে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে গুদামের লকারের নানা কাহিনী।

গুরুত্বপূর্ণ গুদামটি অরক্ষিত ছিল। গুদাম ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ধাপেই অসংগতি ছিল। নিরাপত্তার তেমন বালাই ছিল না। অথচ এই গুদামে কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ রক্ষিত ছিল। আর যখন সোনা চুরির ঘটনাটি ঘটে, তখন কোনো নিরীক্ষা কর্মকর্তা ছিল না। অথচ গুদামে একজন নিরীক্ষক থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যিনি প্রতিমাসে নিরীক্ষা প্রতিবেদন কমিশনারের কাছে পেশ করবেন, অন্যদিকে কমিশনার প্রতি ছয় মাসের নিরীক্ষা প্রতিবেদন এনবিআরে দাখিল করবেন।
সূত্রগুলো জানায়, সাধারণত যাত্রীর কাছ থেকে আটক হওয়া সোনা, যেগুলো ফেরতযোগ্য; সেগুলো যথাযথ কারণ দেখিয়ে সর্বোচ্চ ২০-২৫ দিন গুদামে রাখার এখতিয়ার রয়েছে। কিন্তু যেগুলো মামলা সংশ্লি­ষ্ট কিংবা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা, ওই সোনা কোনো যুক্তিতেই কাস্টমসের লকারে রাখা যাবে না।

অবশ্যই সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দিতে হবে। কিন্তু ঢাকা কাস্টমসের ইনভেনটরিতে দেখা গেছে, চুরি হওয়ার পরও কাস্টমসের লকারে ১০০ কেজির মতো সোনা পাওয়া যায়। যা চুরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। অর্থাৎ গুদাম ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ধাপে গাফিলতি ছিল, এটা নিশ্চিত।

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার