
দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পর অবশেষে চাকরি পেয়েছেন ফরিদপুরের মাস্টার্স পাস করা রিকশাচালক জুলহাস ব্যাপারী।
গত ৬ এপ্রিল ‘অভিজ্ঞতা ও সুপারিশের অভাব, অনার্স-মাস্টার্স শেষে জীবিকার তাগিদে চালাচ্ছেন রিকশা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পর ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। প্রতিবেদনে জুলহাসের জীবনসংগ্রামের করুণ চিত্র উঠে আসে।
সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে জুলহাসের জন্য চাকরির প্রস্তাব আসে। ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব পিয়ালের মাধ্যমে বিশিষ্ট এনজিও ব্যক্তিত্ব ফরিদপুর ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (এফডিএ) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম জুলহাসকে চাকরির প্রস্তাব দেন। সব দিক বিবেচনায় জুলহাস এফডিএ-তে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার (২৭ এপ্রিল) প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এফডিএতে যোগ দেন। দুপুর ১২টায় তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব পিয়াল, এফডিএর নির্বাহী পরিচালক আবু ছাহের আলম, আশিকুল ইসলাম পাভেলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
জুলহাসের সংবাদটি ফরিদপুরসহ দেশের নানা প্রান্তে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, সমাজসেবক ও অটো টেক্স গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান, বিএনপি নেত্রী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, শিল্পপতি চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ, মানবাধিকার কর্মী তাহমিনা ইকবাল লাকীসহ অনেকেই জুলহাসের পাশে দাঁড়ান এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সহায়তা করেন।
চাকরিতে যোগদানের পর আবেগাপ্লুত জুলহাস বলেন, "আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে পাশে দাঁড়িয়েছেন সংবাদকর্মী ও কিছু মানবিক হৃদয়। এই প্রতিবেদন প্রকাশ না হলে আজও হয়তো রিকশার প্যাডেল ঘুরাতাম।"
জুলহাসের বৃদ্ধ বাবা-মাও ছেলের চাকরির খবর শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেক কষ্টের সাক্ষী এই পরিবারটির জীবনে সংবাদটি যেন এক নতুন আশার আলো নিয়ে আসে। তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি, যাঁরা জুলহাসের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
নুসরাত