
ছবি: জনকন্ঠ
কক্সবাজার অঞ্চলের মহেশখালী-কুতুবদিয়াসহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের দাম আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় কৃষক ও লবণ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশাল জনগোষ্ঠী চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও লবণ শিল্পকে রক্ষার দাবিতে আজ দুপুরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমানের সাথে সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ।
বৈঠকে সাবেক এমপি ফরিদ চাহিদার অতিরিক্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল লবণ চীন থেকে আমদানি বন্ধের দাবি জানান। একইসঙ্গে, ভারতের চোরাইপথে অবৈধভাবে লবণ প্রবেশ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু অসাধু লবণ মিল মালিকের সিন্ডিকেট বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে লবণের প্রকৃত মূল্য নষ্ট করছে, যার কারণে লবণ চাষিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে লবণচাষিদের পাশে দাঁড়াতে এবং শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে জরুরি উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে সচিবের কাছে স্মারকলিপিও প্রদান করেন সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ।
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার অঞ্চলে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লবণের উৎপাদন বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত আমদানি এবং সীমান্তপথে অবৈধ লবণ প্রবেশের কারণে বাজারে দরপতন ঘটেছে। বর্তমানে প্রতি মণ লবণের মূল্য উৎপাদন খরচের নিচে নেমে গেছে, যা চাষিদের আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্প বড় সংকটে পড়বে এবং হাজার হাজার কৃষক পরিবার চরম দুর্দশায় নিপতিত হবে।
আলোচনায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান আশ্বস্ত করে বলেন, “আজ বিকেল ৪টায় শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠকে লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতসহ এই সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, মাঠ পর্যায়ে চাষিদের স্বার্থরক্ষা এবং দেশের লবণ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠকে সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং মাঠ পর্যায়ের লবণ চাষিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত চাষিরা তাঁদের হতাশা ও দুর্ভোগের বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছ থেকে দ্রুত কার্যকর সমাধানের দাবি জানান।
রবিউল হাসান