
পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড় বিঘাইতে মা রিজিয়া বেগম (৫৫) কে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় পুত্র মোঃ খোকন হাওলাদার ইউসুকে গ্রেফতার করেছে পটুয়াখালী পুলিশ। ২৬ এপ্রিল রাত ১১ টায় গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিআইসি গেইট এর বিপরীত পাশে আল-বারাকা বাস কাউন্টারের সামনে ময়মনসিংহ রোডের উপর থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার দুপুরে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ১০ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৯ টার মধ্যে কোন এক সময় নিজ ঘরে নামাজরত অবস্থায় রিজিয়া বেগমকে হত্যা করা হয়। এ সময় স্বামী খালেক হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন না। এ ঘটনায় রিজিয়া বেগমের ভাই বাদী হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামালা নং-১৫/১২৬, তারিখ: ১১-০৩-২৫।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পটুয়াখালী পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। মামলা দায়েরের পর রিজিয়া বেগমকে নৃশংসভাবে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য পটুয়াখালী জেলা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৬ এপ্রিল রাত ১১ টায় গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিআইসি গেইট এর বিপরীত পাশে আল-বারাকা বাস কাউন্টারের সামনে ময়মনসিংহ রোডের উপর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ খোকন হাওলাদার ইউসুফের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, তার মায়ের সাথে অন্য পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত একাধিক অবৈধ সম্পর্ক, তার আপন বোনকে ১৭ দিনের মাথায় নিজ মা কর্তৃক বিষ প্রয়োগ করে হত্যা, তার বাবাকে কারনে অকারনে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং সংসারে সবসময় অশান্তি থাকায় তিনি তার মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ০৯-০৩-২০২৫ তারিখ রাতে তিনি গাজীপুর থেকে বাসযোগে রওনা করে সকালে পটুয়াখালী পৌঁছান। দুপুরে হেতালিয়া বাঁধঘাট মসজিদে ঘুমান। ঘুম থেকে উঠে মাগরিবের আগে খাটাসিয়া বাজারে পৌছে সেখানকার মসজিদে ইফতার করে। ইফতার শেষে তার বাড়ির পিছনে বিলে (ফসলের মাঠ) পৌঁছে তার বাবার সাথে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হন যে তার বাবা বাসায় নেই। সে বাসার দরজা খোলা পেয়ে বাসায় ঢুকে তার মা ভিকটিম রিজিয়া বেগমকে খাটের উপরে জায়নামাজে বসে তারাবির নামাজের প্রস্তুতিকালে কাঠের ভারী তক্তা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ভিকটিম রিজিয়া বেগম তা ফিরাতে গেলে তার হাতে পড়ে হাত ভেঙ্গে যায়। তারপর উপর্যুপরি মাথায় ও মুখমন্ডলে একাধিক আঘাত করলে ভিকটিম বিছানায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। এরপর আসামি বাসায় থাকা দা দিয়ে তার মায়ের স্পর্শকাতর স্থানে একাধিক কোপ দেয়। আসামি ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি খোকন আদালতে সোপর্দ করা হলে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে নিজ মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সে ব্যপারে তদন্ত চলছে।
আবীর