ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

এএসপি ও পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ 

প্রকাশিত: ০০:২৪, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

এএসপি ও পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ

ছবি: জনকণ্ঠ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমান সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমান এবং একই থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় জুডিশিয়াল তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম।

তিনি জানান, মামলার তদন্ত করবেন ময়মনসিংহের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন। তদন্তের মেয়াদ বিচারকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।

এর আগে ১৭ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান ও এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। একইদিন বিচারক এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলা (২৭৭/২৫) হিসেবে নথিভুক্ত করেন।

এদিকে, মো. মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত এএসপি এবং মো. মাজহারুল ইসলাম পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তবে তার বর্তমান কর্মস্থল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর গ্রামের মৃত শাহেদ আলীর ছেলে।

বাদীর ভাতিজা এবং নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন আহমেদ বলেন, "আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। মামলায় মূল আসামি নজরুল ইসলামের নাম কেটে অন্যজনের নাম লেখা হয়। দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলামের নাম সরিয়েছেন, যা তদন্তে প্রমাণিত হবে।"

মামলার আইনজীবী শাহজাহান কবির সাজু বলেন, "গিয়াস উদ্দিনের করা মামলায় ১ নম্বর আসামির নাম কেটে দেওয়া হয়েছে, যা আদালতের নির্দেশ অমান্য। আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।"

মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর কথাকাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ হয়। প্রতিপক্ষের আঘাতে শফিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হন।

পরিবারের সদস্যরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পর পুনরায় অসুস্থ হলে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাসায় নেওয়ার কিছুদিন পর ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি তিনি মারা যান।

ঘটনার পর নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা গ্রহণ করেননি। পরে তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত মামলাটি থানায় এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

তবে ওসি মিজানুর রহমান এজাহার না নিয়ে এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের মাধ্যমে বাদীকে ভুল বুঝিয়ে সই নেন। পরবর্তীতে জানা যায়, মূল মামলার আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে ভাতিজা আবদুর রশিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শহীদ

×