
সমিতির পাঁচ শতাধিক ভুক্তভোগীর সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দাবিতে মানববন্ধন
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় ‘গ্রাম মানবিক উন্নয়ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’র বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ও সঞ্চয়ের টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। রবিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার উত্তর জামশা এলাকায় সমিতির পাঁচ শতাধিক ভুক্তভোগী তাদের সঞ্চয়ের প্রায় ৬০ কোটি টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য এই মানববন্ধন করেন। এরপর প্রতারণার অভিযোগে সমবায় সমিতির পরিচালকের বাড়ি ঘেরাও করে গ্রাহকরা। এ সময় সমিতির পরিচালককে না পেয়ে বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ভুক্তভোগীরা। সমিতির মধ্যে কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাও জড়িত জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা সবাই পলাতক।
ভুক্তভোগী আসলাম খান বলেন, প্রবাসে থাকা অবস্থায় এবং ছুটিতে এসে ব্যাংকে ও পোস্ট অফিসের ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পে ৪৮ লাখ টাকা জমা করি। এরপর সরকার ব্যাংক ড্রাফট ও সঞ্চয়পত্র রিনিউ বন্ধের ঘোষণা দিলে, সেখান থেকে সব টাকা তুলে নিয়ে আসি। পরে গ্রাম মানবিক উন্নয়ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির আমজাদ খান, গাজী কামরুজ্জামান, মানিক মিয়া উজ্জল ও হাবিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করি। ২০২৩ সালে ৬ মাসের জন্য তাদের সমিতিতে ৪৮ লাখ টাকা জমা রাখি। এখনো আমার টাকা দেয় নাই।
ফাতেমা জানান, বছর দুই আগে বাড়ির গরু-বাছুর সব বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা সমিতিতে সঞ্চয় করি। এরপর আমার কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসার জন্য বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেই। ভারতে যাওয়ায় সময় বেশি টাকা লাগবে বলে নিরাপত্তার জন্য তাদের সমিতিতে অল্প কিছুদিনের জন্য টাকা রাখি। এখনো পর্যন্ত আমার টাকা ফেরত দেয় নাই।
আরেক ভুক্তভোগী শাহেনা খাতুন বলেন, স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় ওই সমবায় সমিতিতে টাকা সঞ্চয় করতে থাকি। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমার স্বামীর হার্টের সমস্যা হলে দেশে ফিরে আসে। পরে ধারদেনা করে কিছুদিন স্বামীর চিকিৎসা করাই। এরপর স্বামীর চিকিৎসার জন্য সমিতিতে টাকা চাইলে, তারা কোনো টাকা না দিয়ে উল্টো আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার স্বামী মারা যায়। তবে এ বিষয়ে গ্রাম মানবিক উন্নয়ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সঙ্গে জড়িতদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের প্রভাবে সমিতির লোকজন গ্রাহকদের তোয়াক্কা না করে গ্রাহকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দেই দিচ্ছি করে সুযোগ বুঝে লাপাত্তা হয়ে যায়।
প্যানেল