
নাঙ্গালকোট : উপজেলার বাইয়ারা বাজার থেকে মান্দ্রা বাজারের সড়কটি চলাচলের অযোগ্য
নাঙ্গলকোটে বাইয়ারা বাজার থেকে মান্দ্রা বাজারের সড়কটি বেহাল। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাঙ্গলকোটের দক্ষিণ অঞ্চলের ৪টি ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের নাম বাইয়ারা মান্দ্রা সড়ক। সড়কটিতে পা বাড়ালেই ছোট-বড় খানা-খন্দকের হাতছানি চোখে পড়ে। সড়কের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে খানা-খন্দক নেই। সড়কটি যাতায়াতে একেবারেই অনুপযোগী হওয়ায় ছোট-বড় যানবাহনসহ পথচারীদের সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে সড়কটি এলাকাবাসীর নিকট মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সড়কটি দেখার কেউ নেই।
বাইয়ারা বাজারের ব্যবসায়ী সামছুল আলম বলেন, সড়কটির বেহাল দশায় সড়কটি দিয়ে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিশেষ করে বাজারে মান্দ্রা বাজারের দিকে যেতে বড় ধরনের একাধিক খানা-খন্দকের কারণে সড়কটি দিয়ে এলাকাবাসীর যাতায়াত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এলজিইডির নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুর রহমান সিকদার বলেন, এ রাস্তাটির টেন্ডার হয়েছিল এবং কাজও শুরু হয়েছে। ঠিকাদারের অনিয়মের কারণে টেন্ডারটি বাতিল করা হবে। পরবর্তীতে টেন্ডার হলে পুনরায় কাজ শুরু হবে।
তাড়াশে ঠিকাদার উধাও
সংবাদদাতা তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, তাড়াশে একটি রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ না করে তিন বছর ধরে ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাস্তা পাকাকরণের ৬০ ভাগ কাজ করে, দুই বছর আগে বিল তুলে নিয়ে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ায় রাস্তা দিয়ে প্রাত্যহিক চলাচলকারীরা বিপাকে পড়েছেন। রাস্তার খোয়া উঠে ইতোমধ্যেই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বারবার তাগাদা দিয়ে ঠিকাদারের সাড়া না পেয়ে কার্যাদেশ বাতিল করেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক। এ প্রসঙ্গে নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, এলজিইডি কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ঠিকাদার পুকুর চুরির সুযোগ পেয়েছে। ঐতিহাসিক নওগাঁয় হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী (র.) মাজার ও একটি সাপ্তাহিক হাট রয়েছে। সে কারণে এ রাস্তাটি অধিক জনগুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাস্তবে উন্নয়ন না হয়ে দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, প্রকল্পের পিডি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। ঠিকাদার প্যালাসাইডিং, বক্স কাটিং, সাববেজ, এজিং, সেন্ট ফিলিং ও ডব্লিউবিএম সম্পন্ন করেছে। সে অনুযায়ী আমরা বিল পাঠিয়েছি। দীর্ঘদিন তাগাদা দিয়ে কোনো সাড়া না পাওয়ায় ইতোমধ্যে চুক্তিপত্র বাতিল করা হয়েছে।
উখিয়ায় ৯ মাস ধরে
রাস্তার কাজ বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর সড়কের কাজ শুরু হলেও ৫ আগস্টের পর থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদার। ফলে বন্ধ রয়েছে সড়কের কাজ। এতে আবারও দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। উখিয়া গয়ালমারা-আমতলী সড়কটি গত ৯ মাস ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঠিকাদার একরাম সংস্কারের নামে পুরনো সড়কটি খুঁড়ে বালু, কংক্রিট (খোয়া) ফেলে রেখে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকার কারণে সেসব খোয়াও সরে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে পথচারী ও গাড়ির চালকরা জানান, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে ৪ হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু রাস্তা অযোগ্যের কারণে কোনো গাড়ি এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে চাইছে না। ফলে হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে এই দীর্ঘপথ। এতে পাঁয়ে ইটের খোয়ার কোনার ব্যথা, জোতা নষ্টসহ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পরিচ্ছন্ন পোশাকে একবার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেই সেটি ব্যবহার উপযোগী থাকে না। মাথা ঢেকে আর মুখে মাস্ক পরে চলাচল করতে হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, রাস্তার এই করুণ দশায় দুর্ভোগে আছি। রাস্তায় বের হলে শরীর এবং পোশাকের রং ধুলাবালিতে পরিবর্তন হয়ে যায়। রাস্তার দুই পাশে বসবাসরত বাড়িঘর ও গাছপালা ধুলার আবরণে চেনার উপায় নেই। ধুলার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রুকুনুজ্জামান খান বলেন, এই ঠিকাদারকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে। কাজ করতেছে বলেও আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কাজের বেলায় তাকে পাওয়া যায় না।
তালতলীতে কাজে ধীরগতি
সংবাদদাতা তালতলী, বরগুনা থেকে জানান, দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে তালতলী উপজেলার বগীরহাট-তালতলীর বাঁধঘাট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ। সড়কটি উপজেলার ও জেলার প্রবেশদ্বার। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে হাজারো জনসাধারণকে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় বৃদ্ধ, শিশুসহ গাড়ি, আলফা, মোটরসাইকেল চালকদের যাতায়াত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। উপজেলা এলজিইডি’র অবহেলার কারণে প্রথম ধাপে এই প্রকল্পের সময় পার হলেও ২৫ শতাংশ কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বশিল উদ্দিন বলেন, প্রকৌশলীদের কোনো অবহেলা নেই। আমাদের বিভিন্ন সময়ে চিঠি দিয়ে যাচ্ছে কাজ করার জন্য। শুরুর দিকে স্থানীয়ভাবে কিছু মেগাডাম দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো একটু খারাপ ছিল। পরে পটুয়াখালী থেকে ভাল মেগাডাম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সরকার পতনের জন্যও আমাদের কাজের কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে আমাদের কোনো অবহেলা নেই। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণেই এই কাজের ধীরগতি হয়েছে। তিরি আরও বলেন, ঐ ঠিকাদার কাজের শুরুর দিকে কিছু নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, আমার নিজের কাছেও একাধিক অভিযোগ এসেছে। ওখানে দুইজন শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। চিকিৎসা নিচ্ছে বরিশাল। আমি এ বিষয়ে জেলা মিটিংয়ে বার বার বলেছি। ওই দপ্তরের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হবে কাজ দ্রুত করার জন্য, নয়ত তার লাইসেন্স বাতিলের জন্য বলা হবে। তিনি আরও বলেন, এই সড়ক দিয়ে আমিও জেলায় মিটিংয়ে যাই।
প্যানেল