
নামেই কুয়াকাটা ২০ শয্যার হাসপাতাল। চারজন জুনিয়র কনসালটেন্ট, একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও একজন মেডিকেল অফিসারসহ ছয় জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও এখানে বর্তমানে কোন চিকিসক কর্মরত নেই। সিনিয়র স্টাফ নার্স রয়েছে পাঁচ জন। এছাড়া একজন ওয়ার্ড বয়, একজন ল্যাবরেটরী এটেনডেন্ট, একজন আয়া, একজন অফিস সহায়ক, একজন কুক, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাগজপত্রে কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে আবার একজন ওয়ার্ড বয় প্রেষণে কলাপাড়ায় আর ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট প্রেষণে সিভিল সার্জন অফিস পটুয়াখালীতে কর্মরত রয়েছেন।
চিকিৎসকসহ এই হাসপাতালটিতে মোট ১৭ জন পদায়ন করার কথা থাকলেও ১২টি পদ খালি রয়েছে। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার দিয়ে কখনো কখনো জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বহিঃর্বিভাগ চালানো হচ্ছে। তাও জোড়াতালি দিয়ে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় চিকিৎসা সেবার এমন বেহাল দশায় এখানে আগত পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসীন্দা আশরাফ আলী জানান, এই হাসপাতালটি চালুর পর থেকে আজ অবধি পুর্ণাঙ্গভাবে লোকবল পদায়ন করা হয়নি। ফলে এখানকার পুলিশি থানা মহিপুর, লতাচাপলী ও কুয়াকাটা পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ তাদের চিকিসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১০ সালের পহেলা জুলাই কুয়াকাটার ২০ শয্যার হাসপাতালে আফরোজা আকবর নামের একজন চিকিৎসক পদায়ন করা হয়। তিনি যোগদানের পর থেকেই চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। কিন্তু ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে ওই চিকিৎসক লাপাত্তা হয়ে গেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তার বিরদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন বলে তখন জানা গেছে।
হাসপাতালটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকেই হাসপাতালটিতে কখনো দুইজন, কখনো এক জন চিকিৎসক দিয়ে নামেই চিকিৎসা সেবা চালু ছিল। সবশেষ কর্মরত থাকা একমাত্র চিকিৎসক মুমসাত সায়েম পুনম দুই মাসের একটি কোর্সে অংশগ্রণের জন্য গত ১৭ এপ্রিল কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই চিকিৎসক শূণ্য হয়ে যায় হাসপাতালটি। এই হাসপাতালটি চালুর পর থেকে কখনো সম্পুর্ণ লোকবল পদায়ন করে পূর্ণাঙ্গভাবে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়নি। ফলে পর্যটন এলাকার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়নি।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পর্যটন এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক পদায়ন করে পুর্ণাঙ্গভাবে চালু করা দরকার। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ জেএইচ খান লেলিন জানান, কুয়াকাটাসহ কলাপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল সংকটে দ্রুত চিকিৎসক পদায়নের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করানো হয়েছে। তবে কুয়াকাটা হাসপাতালের জরুরি ও বহিঃর্বিভাগ সচল রাখতে একজন উপসহকারী মেডিকাল অফিসারকে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রিফাত