
ওসি মো. রওশন আলী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি কয়েকটি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তবে ভিন্ন এক চিত্র উঠে এসেছে পরিসংখ্যান ও স্থানীয় জনগণের মতামতে।
সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বর ২০২৪ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত বিজয়নগর থানা এলাকায় ৭১টি নিয়মিত মাদক মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮৫ জন আসামিকে। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৪৫০ কেজিরও বেশি গাঁজা, ৭৯২০ পিস ইয়াবা, ১৩৩১ বোতল স্কোপ সিরাপ এবং ৫৫৬ বোতল ফেনসিডিল।
৫ আগস্টের পর সরকার পতনের পরবর্তী সময়েও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওসি রওশন আলীর নেতৃত্বে গ্রেপ্তার করা হয় ৪৫ জন কুখ্যাত অপরাধীকে। এতে মাদক সিন্ডিকেট, চোরা চালান, গরু পাচার এবং ডাকাত চক্রে বড় ধাক্কা লাগে বলে জানায় স্থানীয় জনগণ।
তবে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে নেওয়া কঠোর অবস্থানই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। বিভিন্ন সূত্র বলছে, কিছু প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী ও কুচক্রী মহল ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে তাকে বদলি করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, “ওসি রওশন আলী একজন নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার। বিজয়নগর থানার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। একটি চক্র মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে তার বদলি চাচ্ছে।”
ডেন্টিস্ট মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, “বিজয়নগর সীমান্ত একসময় মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। কিন্তু এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে। আমরা আমাদের ওসিকে আবার ফিরে পেতে চাই।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় সংগঠক খাইরুল ইসলাম বলেন, “ওসি রওশন আলীর মতো কঠোর অফিসারদের দরকার আছে আমাদের। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত চললেও জনগণ তাঁর পাশে আছে।”
মাদক বিরোধী অভিযানের বিষয়ে ওসি রওশন আলীর বলেন, বিগত যে কোনো সময়ের থেকে বিজয়নগর থানায় মাদক উদ্ধারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছি। মাদকের সাথে কোন কম্প্রোমাইজ নেই। মাদক একটা জাতিকে ধ্বংস করে, তাই আমার পক্ষ থেকে মাদক ব্যবসা মাদক সেবী ও মাদকের আশ্রয়দাতা কে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরো জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জীবন দিতে পারি, কিন্তু কর্তব্য থেকে কখনো পিছপা হয় নি আর হবোও না।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মতে, বিজয়নগরে বাস্তবিক অর্থে মাদক নির্মূলে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তাই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আশিক