
নব্বই দশকে নির্মাণ করা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তপাড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন ভবনগুলোর পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। বিশেষ করে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রয়েছে আতঙ্কে।
এমন এক ঘটনা ঘটেছে ওই উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানি ইউনিয়নের দণি সোনাখুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এতে এক শিক্ষিকা গুরুতর আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তিনি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। আহত শিক্ষিকার নাম রেহানা পারভীন (৩২)। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা জানায় গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ওই স্কুলের অফিস করে ছাদের পলেস্তারা ভেঙ্গে পরে। সে সময় ওই শিক্ষিতা অফিস ঘরে অবস্থান করছিলেন। এতে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলে প্রথমে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থান্তরিত করা হয়।
এর আগেও ওই বিদ্যালয়সহ তিস্তাপাড়ের বেশ কিছু স্কুলের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছিল। তবে ওই সময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল। এ ছাড়া স্কুল ভবন জুড়ে সামনের অংশে ফাটলও দেখা যায়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর টিনশেড ভবনে কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর (এলজিইডি) চার কক্ষবিশিষ্ট একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্মানের সময় বালু বেশি সিমেন্ট কম থাকায় ৩০ বছরেই স্কুলের ভবনগুলো ব্যবহারে অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। বাড়ছে ঝুঁকি। অথচ নির্মানের সময় বলা হয়েছিল ১০০ বছরেও বিদ্যালয়ের কোন ক্ষতি হবে না।
বর্তমানে “বিদ্যালয়ের এমন অবস্থায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদে পাঠদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। দ্রুত যদি সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ না করা হয়, তাহলে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।” এ ঘটনায় শিক্ষক-অভিভাবক মহলে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে সহকারি শিক্ষিকা রেহানা পারভীনের মাথায় পড়ে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, আমরা খুব শিগগিরই ওই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব। পরিদর্শনের পর ঝুঁকিপূর্ণ দুটিকে আপাতত অফিস ও পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান তিস্তাপাড়ে যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেগুলোর একটি তালিকা করা হচ্ছে।
আবীর