
সরকারি অর্থায়নে এভাবে খাল দখল করে করা হয়েছে বাউন্ডারি ওয়াল
কলাপাড়া পৌর শহরের পূর্বদিকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বাদুড়তলীর স্লুইস খালটি পৌর শহর ছাড়াও বাদুড়তলী, মধ্যটিয়াখালী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। পৌর শহরের একাংশসহ টিয়াখালী ইউনিয়নের চারটি গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে এই খালটি একমাত্র পথ। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির বাদুড়তলী পয়েন্টে রয়েছে স্লুইস। যা পানি ওঠানামার কাজে ব্যবহৃত হয়।
ইতিপূর্বে খালটির মাঝখান দিয়ে কয়েকটি বাঁধ দেওয়ায় পানির প্রবাহ কমে দুই পাড়ে পলি পড়ে কিছুটা ভরাট হয়ে গেছে। এরসঙ্গে একশ্রেণির সমাজশত্রু মাটি ফেলে ভরাট করে দখল করে একের পর এক স্থাপনা তোলে। এভাবে শত শত স্থাপনা তোলা হয়েছে। এই দখল প্রক্রিয়া চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
খালপাড়ের বাসিন্দা শিক্ষক ফোরকানুল ইসলাম সিকদার জানান, এখানে খালের প্রস্থ অনুসারে একটি গার্ডার ব্রিজ করলে খালটির পানি চলাচলে সমস্যা হতো না। স্থানীয় সচেতন মানুষের মন্তব্য যারা রক্ষক তারাই যদি ভক্ষকের কাজ করেন তাহলে পরিবেশ-প্রতিবেশ টিকবে না। একইভাবে কলাপাড়া পৌর শহরের ঠিক মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত খালটির চিঙ্গুরিয়া এলাকায় খালের এক-তৃতীয়াংশ দখল করে গোরস্থানের দেওয়াল করা হয়েছে। কলাপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এমন পরিবেশ বিনাশী কর্মকা- করেছে। জোয়ারের সময় পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
এখন খালটি এ কারণে ওই অংশে মৃতপ্রায় অবস্থা হয়েছে। পরিবেশ কর্মী আমরা কলাপাড়াবাসী সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, বিগত সরকারের সময় পৌরবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনস্বার্থবিরোধী বেশকিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যা কোনোমতেই ঠিক হয়নি। একই দৃশ্য কুয়াকাটায়। কুয়াকাটা পৌরসভার ভবনের পাশ দিয়ে প্রবহমান কচ্ছপখালী-নবিনপুর খালের পাড় দখল করে দেওয়াল করা হয়েছে। ওই খালটির পানির প্রবাহ না থাকলে পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনের পথ আটকে যাবে। যাদের খাল রক্ষার কথা তারাই সরকারি অর্থায়নে খাল দখল করে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করায় দখলদাররা যেন দখলে আরও উৎসাহ পাচ্ছেন।
পরিবেশ কর্মী কেএম বাচ্চু জানান, খালটির দখল-দূষণ বন্ধে যাদের প্রধান দায়িত্ব তারাই পরিবেশের সর্বনাশ করেছে। এসব যারা করেছে বা করছে তাদের ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগে অ্যাকশনে যাওয়া দরকার। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, খালের দখল-দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত এক বছরে কলাপাড়ায় অন্তত ১২টি খালের প্রায় ৬০টি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। খালের মাটি কাটাসহ দখল বন্ধে মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে। এ ছাড়া কলাপাড়া-কুয়াকাটা পৌরসভার খালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।