ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

নাঙ্গলকোটে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

বেলাল হোসেন রিয়াজ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

নাঙ্গলকোটে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

ছবি: প্রতিকী

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও  শ্রমিক মিলছেনা। চলতি বোরো আবাদ ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি হলেও শ্রমিক সংকটে ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় চাষিরা। নাঙ্গলকোট উপজেলার অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। এখন ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। কিন্তু অতিরিক্ত মজুরি ও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তারা।


রংপুর থেকে নাঙ্গলকোটে ধান কাটতে আসা শ্রমিক জাহিদ বলেন, ‘গত বছর ধান ভালো থাকায় আমরা মাঠ থেকে কেটে ছিলাম ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে। তারপর ও আমাদের পুষিয়েছে। কিন্তু এবারে ঝড়বৃষ্টিতে ধান হেলে পড়ায় কাটতে বেশি সময় লাগছে। এ কারণে ৮ -৯ হাজার টাকা বিঘা ধান কেটে ও পোষাচ্ছে না।

 

তিনি আরো বলেন, আগে যেখানে একবিঘা জমির ধান কাটতে ৬ -৭ জন লাগতো সেখানে এখন ১১-১২ জন শ্রমিক লাগছে। আগে আমরা যারা একসঙ্গে ধান কাটতাম তাদের অনেকেই গার্মেন্টসে কাজে গিয়েছে। এ কারণে লোকের সংকট রয়েছে। সেই সঙ্গে চাল-ডাল-তেলের দাম বাড়ায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের খরচ বেড়ে গেছে।’


উপজেলার পাটোয়ার গ্রামের কৃষক তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘মাঠের ধান সব পেকে গেছে। এদিকে বিভিন্ন জায়গায় ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। তাই দ্রুত মাঠ থেকে ধান কেটে নিতে পারলেই বাঁচি। কিন্তু প্রতিবছর বাইরে থেকে ধানকাটার শ্রমিক আসলেও এবার আসেনি। এতে ধান কাটা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কিছু শ্রমিক পাওয়া গেলেও তারা একবিঘা জমির ধান কাটতে ৮-১০ হাজার টাকা চাচ্ছেন। বোরো আবাদে পানি থেকে শুরু করে সবকিছু কিনতে হয়। তাতে করে বোরো ধান আবাদে যে খরচ, সব টাকা যদি ওদেরকেই দিতে হয়, তাহলে আমরা কী খাবো?’


আদ্রা ইউপির শাকতলী গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, গত পাঁচ দিন থেকে শ্রমিকের জন্য নাঙ্গলকোট এ আর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যেখানে শ্রমিকদের হাট বসে সেখানে ঘোরাঘুরি করছি। কিন্তু কোন লোক পাচ্ছি না। শ্রমিকের অভাবে কাটতে না পেরে আমার ১৪-১৫ বিঘা জমির ধান বাতাসে হেলে পড়েছে। কিন্তু ধানকাটার শ্রমিকের বাড়তি মূল্যের কারণে চাষাবাদ করে লাভবান হতে পারছি না। বর্তমানে একবিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকা করে। এর ওপর মাড়াই খরচ তো রয়েছে।’


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় হাজার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। আমরা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে কিছু ধান কাটার মেশিন আনার চেষ্টা করছি। প্রতিবছর রংপুর থেকে অনেক শ্রমিক আসে। এ বছর তুলনামূলক শ্রমিক কম আসছে। কিছু দিনের মধ্যে এ সংকট কেটে যাবে।

রবিউল হাসান

×