ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

বোয়ালমারীতে একটি বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম, দেড় শত বছর পর হলো কষ্টের অবসান

এন কে বি নয়ন, বোয়ালমারী, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

বোয়ালমারীতে একটি বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম, দেড় শত বছর পর হলো কষ্টের অবসান

ছবি: জনকণ্ঠ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর (স্থানীয়ভাবে বেষ্টপুর নামেও পরিচিত) ওই গ্রামে ছলে মোল্যার একটি পরিবার বসবাস করে। পূর্বে আরও বসতি থাকলেও সকলে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে রাস্তা না থাকায়। ওই পরিবারটি গত দেড় শো বছর যাবত বসবাস করে আসছে। বর্ষাকালে নৌকা,ডুঙ্গা,কখনো গামছা পড়ে পানি ঝাপিয়ে বাজার করতে যেতে হতো। 

প্রায় দেড় শত বছর ধরে রাস্তাবিহীন দুর্ভোগ পোহানো এই গ্রামের পরিবারটি ও আশপাশের গ্রামের মানুষ এবার পেয়েছে একটি মাটির রাস্তা। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় গ্রামের অভ্যন্তরে নির্মিত এই নতুন রাস্তা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং উৎসাহী গ্রামবাসী।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউএনও তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, “এই রাস্তা শুধু মাটি দিয়ে নির্মাণ নয়,এটি একটি ইতিহাসের অংশ। দেড় শত বছর ধরে যোগাযোগের জন্য যে কষ্ট মানুষ করেছে, আজ সেই কষ্টের অবসান ঘটল। এ রাস্তা গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

স্থানীয় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া বলেন, বিষ্ণুপুর মৌজায়, বিষ্ণুপুর গ্রামে একটি পরিবারই বসবাস করছে “এই রাস্তাটি ছিল ওই পরিবারসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষের স্বপ্ন। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম—আজ আমরা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরেছি। এটা আমার জন্য গর্বের।” তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর সহযোগিতায় রাস্তাটি করতে পারলাম।

অনুষ্ঠান শেষে আশে পাশের গ্রামবাসী আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বলছিলেন, “আমরা কখনো ভাবিনি জীবদ্দশায় এই রাস্তা দেখতে পাব। আজকে তা বাস্তব। এই রাস্তা আমাদের স্বপ্নের রাস্তা।”

মো. ফারুক মোল্যা জানান, আগে বর্ষাকালে গ্রামের মানুষ নৌকা দিয়ে চলাচল করতেন। জরুরি সময়েও রোগী বহনে কিংবা স্কুলে যাওয়া শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। নতুন এই রাস্তা এই গ্রাম ও আশপাশের গ্রামবাসীর জন্য যেন নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

উল্লেখ্য, প্রায় পনে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাচা রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা ও ত্রাণমন্ত্রনালয় আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে (কাবিখা) সরকারি অর্থায়নে রাস্তার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
 

সায়মা ইসলাম

×