ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

দুর্গাপুরে সূর্যমুখী চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন জালাল উদ্দীন

নিজস্ব সংবাদদাতা দুর্গাপুর, নেত্রকোনা

প্রকাশিত: ০০:২৪, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

দুর্গাপুরে সূর্যমুখী চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন জালাল উদ্দীন

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের পাইকুড়া গ্রামে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক মো. জালাল উদ্দীন। ১২ কাঠা জমিতে তিনি প্রথম সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যেই গাছে ফুল ধরেছে। বীজ গুলোও হয়েছে বেশ বড় বড় থোকায়। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে অনেক কৃষক সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চলে আসেন জালাল উদ্দীনের বাড়ি। 

এ নিয়ে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জালাল উদ্দীনের বাড়ীর পাশেই রয়েছে তার সব্জি ক্ষেত। ওই ক্ষেতে বিভিন্ন রকমের সব্জি আবাদ করে থাকেন তিনি। গত ৩ মাস আগে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখী বীজ ও চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ পান। সুর্যমুখী তেলের গুনাগুন এবং চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় ১২ কাঠা জমিতে শুরু করেছেন সুর্যমুখী চাষ।

একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হয়। সুর্যমুখীতে প্রতি কাঠায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ করা যায়। অন্য কোনো ফসলে এতো অল্প সময়ে এতো লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। এই চিন্তা থেকে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেন জালাল উদ্দীন।

কৃষক জালাল উদ্দীন জানান, গত ৩ মাস আগে আমি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখী ও সরিষা বীজ সংগ্রহ করেছি। চাষের জন্য সারও পেয়েছি। অল্প সময় এবং কম পরিশ্রমে ফসল উৎপাদন ও ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে প্রাথমিক ভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু করছি। প্রতি কাঠা জমিতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভবান হতে পারবো। যদি অত্র অঞ্চলে বীজ ভাঙ্গানোর মেশিন থাকতো, তাহলে সুর্যমুখী চাষে আরো উৎসাহ পেতো কৃষকগণ।

উপজেলা কৃষি অফিসার নীপা বিশ্বাস বলেন, সূর্যমুখী বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা যায়। সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতেই সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই বীজে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে সূর্যমুখী বীজ গুলো এক হাজার টাকা কেজি হিসেবে কিনে নিয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, অত্র উপজেলায় যদি কৃষকের সংখ্যা যদি বাড়ে, তাহলে এই উপজেলাতেই সুর্যমুখী বীজ থেকে তেল ভাঙ্গানোর জন্য মেশিন স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে তৈরী হবে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। এলাকাতে ঘুচবে বেকারত্বের সংখ্যা। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বাহিরেও রপ্তানী করা যাবে পুষ্টিতে ভরপুর সূর্যমুখী তেল।

রাজু

×