ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

“এই পুকুরটা আমাদের সবকিছু!” মানববন্ধনে গ্রামবাসীর কান্না

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

“এই পুকুরটা আমাদের সবকিছু!” মানববন্ধনে গ্রামবাসীর কান্না

ছবি: জনকণ্ঠ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার হিন্দু-অধ্যুষিত আমিরাবাদ গ্রামের দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত খাস পুকুরটি মাছ চাষের জন্য সরকারিভাবে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় নারী-পুরুষেরা।

বুধবার সকাল ১১টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনে শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় গৌরি রাণী, নন্দ কুমার সাহা, সঞ্জীব কুমার হাওলাদার, খুকুমণি হাওলাদার, উর্মি হাওলাদার ও শোভা রানী হাওলাদার বক্তব্য দেন।

তারা বলেন, জগৎ মেম্বার বাড়ির সামনের শতবর্ষী পুকুরটি আমাদের বংশপরম্পরায় ব্যবহার হয়ে আসছে। আশপাশের খালবিলের পানি লবণাক্ত হওয়ায় রান্নাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে গ্রামের মানুষ এ পুকুরের পানিই ব্যবহার করেন। পুকুর পাড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গৌড় গোবিন্দ সেবাশ্রম অবস্থিত। পূজা-পার্বণে আগত ভক্তরাও এ পুকুরের পানি ব্যবহার করে থাকেন।

বয়োবৃদ্ধা পুষ্প রাণী বলেন, “পুকুরপাড়ে আমার স্বামীসহ তিন পুরুষের সমাধিস্থল রয়েছে। এর আগে কখনো এই পুকুর ইজারা দেওয়া হয়নি। এবার প্রথমবারের মতো ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবহারযোগ্য পানি পাওয়া যাবে না এবং চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।”

মানববন্ধনকারীরা বলেন, পুকুরটির সামাজিক, ধর্মীয় এবং ব্যবহারিক গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ইজারা দেওয়া হলে হিন্দু পরিবারের ওপর অপূরণীয় ক্ষতি হবে। তাই অবিলম্বে ইজারা প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানান তারা।

পুষ্প রাণী আরও জানান, তারা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। গ্রামের মানুষ এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সরকারের প্রতি পুকুরটি ইজারা না দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসীন সাদেক বলেন, “বিষয়টি মাননীয় জেলা প্রশাসক ও ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সরকারি বিধি অনুযায়ী খাস পুকুর ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

শহীদ

×