
ছবি: জনকণ্ঠ
বাউফলে একটি গার্ডার সেতু নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার, ডিজাইনে ত্রুটি ও খালের মাঝখানে অ্যাবাটমেন্ট ওয়াল স্থাপন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩-২০২৪ ইং অর্থবছরে উপজেলার সূর্যমণি ইউনিয়নের খন্দকার বাড়ি সংলগ্ন নুরাইনপুর-রামনগর খালের উপর দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়। এক সপ্তাহ আগে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কে ট্রেডার্স নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণ কাজ করেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতু নির্মাণের সময় নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। সঠিক উচ্চতায় সেতু নির্মাণ করা হয়নি। পশ্চিম পাশের অ্যাবাটমেন্ট ওয়াল প্রায় ২৫ ফুট সরিয়ে খালের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হয়নি। ডিজাইন পরিবর্তন করে সেতু নির্মাণ করায় ওই খালে নৌ চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
আবদুর রহিম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘আগে এখানে সঠিক উচ্চতার একটি সেতু ছিল। যথানিয়মে আগের সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক না করায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতেন পথচারীরা। পুরানো সেতু ভেঙে এখন রাস্তা বরাবর নিচু করে নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দুর্ঘটনা কমলেও সেতুর নিচ দিয়ে ভবিষ্যতে নৌকা বা ট্রলার যাতায়াত করতে পারবে না। বর্তমানে যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, এর চেয়ে আগের সেতুটিই ভালো ছিল।’
আব্দুল মোতালেব নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘সেতু নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। এই সেতু নির্মাণে সরকারের অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি। পশ্চিম পাশের অ্যাবাটমেন্ট ওয়াল খালের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। আর পূর্ব পাশের অ্যাবাটমেন্ট খালপাড় থেকে প্রায় ২৫ ফুট দূরে স্থাপন করা হয়েছে। ফলে বর্ষা এলেই অ্যাপ্রোচের মাটি ধসে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকাদার বেশি লাভের আশায় পাইলিংয়ে প্রচুর চুরি করেছেন। তাই একটি অ্যাবাটমেন্ট সরিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। কাজে অনিয়ম করার সময় আমরা ঠিকাদারের লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।’
নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কে ট্রেডার্স-এর প্রতিনিধি রেদোয়ান মাকসুদ রিপন বলেন, ‘সিডিউল অনুযায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।’
প্রকল্পটি তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাইদুল মোরশেদ মুরাদ বলেন, ‘কাজে অনিয়ম বা ত্রুটি হয়নি। আমাদের সেতু সর্বোচ্চ ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের হয়। খালটি আঁকাবাঁকা হওয়ায় দেখলে মনে হয় অ্যাবাটমেন্ট ওয়াল মাঝ বরাবর হয়েছে। তাছাড়া এলাকাবাসীর দাবির মুখে সেতুর উচ্চতা কমানো হয়েছে।’
কামরুজ্জামান/ সুরাইয়া