ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

সংস্কার ছাড়া আমরাও নির্বাচন চাই না, স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণকে স্বস্তির মধ্যে আনতে হবে: নুরুল হক নুর

শাহ জালাল, সোনারগাঁও সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ   

প্রকাশিত: ০০:৪৭, ২৩ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০০:৪৭, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সংস্কার ছাড়া আমরাও নির্বাচন চাই না, স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণকে স্বস্তির মধ্যে আনতে হবে: নুরুল হক নুর

ছবিঃ সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণ কে স্বস্তির মধ্যে আনতে হবে, নয়তো দ্রুত নির্বাচন দেন। সংস্কার ছাড়া আমরাও নির্বাচন চাইনা। এই সরকারে প্রধান দুটি কাজ হলো সংস্কার ও গণহত্যার বিচার করা। আমাদের পরিষ্কার কথা সংস্কার এবং বিচার দুটোই সমান্তরালে চলবে। 

তিনি মঙ্গলবার ( ২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাচঁপুরে গন্ধি পরিষদের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহ-সভাপতি রতন হাজীর মৃত্যুতে সমবেদনা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। 

দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কির সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, নারায়নগঞ্জ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিবুল্লাহ প্রমূখ।  

তিনি আরও বলেন, দুই বারের বেশি যদি একটি লোক প্রধানমন্ত্রী থাকে তাহলে আমরা মনে করি শেখ হাসিনার মত ফ্যাসিস্ট হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সকল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু তে রাখা হয়ছে। রাষ্ট্রপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও মিলাদ মাহফিল আর কবর জিয়ারত ছাড়া কোন কাজ করতে পারে না। আমরা এখানে বলছি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য দরকার। সংসদে যেন একক দলের অধিপত্যে না থাকে।

একক দল মাত্র দুই তিন শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে জনগণের রাষ্ট্রের উপর কোনে ব্যবস্হা যাতে চাপিয়ে দিতে না পারে, সেই জন্য আমরা বলছি ভারসাম্যপূর্ণ সংসদের জন্য আনুপাতিক হারে নির্বাচন কিংবা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে আমরা যেতে পারি। এখন আমরা গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে থেকে ২০২১ সালে জাতির কাছে তুলে ধরেছি। আমরা চাইলেই তো হবে না। এই কারণে বিষয়টি জাতীয় সংস্কার ঐক্যমত কমিশনের কাছে জোর দিয়ে জানাচ্ছি।

দুনিয়ায় কোন বিষয় সব মানুষ একমত হয় না। শেষ পর্যন্ত বিচারের ভার দু’এক জনের কাছে থাকে। সংস্কার কমিশনের কাছে কিন্তু বিচারের ভার দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে বিষয় গুলোতে ঐক্যমত হয়েছে কিংবা আরো যেটা প্রয়োজন সে বিষয় গুলো সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় সনদ প্রণীত করা দরকার। 

যেখানে সকল রাজনৈতিক দলগুলো অঙ্গীকার করবে আমরা সংংস্কার কাজকে সমর্থন করছি। ঐটার ভিত্তিতে সংস্কার কাজগুলো বাস্তবায়ন হবে। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সেই নিরাপদ, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। এটাই আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গি বর্তমান সমাজ ও সরকারের প্রতি। 

ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমরা মনে করি যদি ফ্যাসিবাদ কাঠামোর পরিবর্তন করা না যায়, যদি কিছু কাজের সংস্কার করা লাগে, রাষ্ট্রের মালিক যদি কোন কাজের সংস্কার না করে যায়, তাহলে আগের মত যেই লাউ সেই কদু সেভাবেই চলবে। এখন নির্বাচিত সরকার নাই, জাতীয় ঐক্যমত্য তোমাদের ভিত্তিতে সকল রাজনীতিক দল-মত নির্বিশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে সম্প্রীতিক সময়ের জন্য। সে সরকার একটি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন সংস্কার কাঠামো তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্য কমিশন দলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

আমরা বলছি সকল দলকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে কিছু সংস্কার করা যেতে পারে। প্রশাসনের জন্য যদি কোন বিধি-বিধান না তৈরি করা হয় তাহলে সেই প্রশাসন তো আগের মতই কাজ করবে। আমরা পিসির শক্তি যদি বন্ধ করতে না পারি আমরা যে নির্বাচনে প্রত্যাশা করছি সেটা কিন্তু হবে না। বর্তমানে স্থানীয় সরকারের কোন প্রতিনিধি নাই, জনগণ মারাত্মক ভোগান্তিতে আছে। দ্রুত নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপ থাকা দরকার। তা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি সংশয় সন্দেহ তৈরি হয় তাহলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তরায় তৈরি হবে।

ইমরান

আরো পড়ুন  

×