
ছবিঃ সংগৃহীত
রেলের ভাষাটা একটু ভিন্ন। যেটা চালাবো না বা চলছে না, সেটাকে আমরা অকেজো ঘোষণা করি। তখন সেটাকে আমরা নিলামে বিক্রি করার চিন্তা করি। এবার বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের আটটি ট্রেনের ইঞ্জিন কেজি দরে ভাঙরি হিসেবে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল নির্ধারিত ফরমে সিডিউল জমা দেয়ার শেষ তারিখ। এখন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যার মূল্য বেশী হবে তার হাতে তুলে দেয়া হবে ভাঙরি হিসাবে আটটি লোকমোটিভ (ইঞ্জিন)।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিক্রয় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি হিসাবে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমাঞ্চল রেলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক প্রকৌঃ এস এম, রাশেদ ইবনে আকবার স্বাক্ষরিত ওই নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। রেলের যান্ত্রিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে দেশে আসতে শুরু করে নতুন ইঞ্জিন। ২০২৩ সালের মধ্যে ৩০টি নতুন ইঞ্জিন আসে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ২২টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮টি নতুন ইঞ্জিন যুক্ত হয়। নতুন ইঞ্জিন আসার পর এসব ট্রেনের আগের ৩০টি ইঞ্জিনের মধ্যে এখন চলছে মাত্র ৬টি। বাকি ২৪টির মধ্যে ৯টি বিভিন্ন কারণে চলাচলের অনুপযোগী। বাকি ১৫টি ইঞ্জিন সামান্য সংস্কার করলেই এগুলো দিয়ে ট্রেন চালানো যেতো। অথচ এগুলো চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও ঈশ্বরদী এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর লোকোশেডে ফেলে রাখা হয়।
যান্ত্রিক বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, নতুন ইঞ্জিন যুক্ত হওয়ার আগে এসব ইঞ্জিন দিয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে আন্ত:নগর ট্রেন চলেছে। পুরোনো এসব ইঞ্জিন এখনো চলাচলের উপযোগী। এই জন্য সামন্য সংস্কার করা প্রয়োজন। সংস্কারের অভাবে পাঁচ বছর ধরে ইঞ্জিনগুলো ফেলে রাখা হয়। অথচ সংস্কার করে এসব ইঞ্জিন দিয়ে ১৫টি নতুন ট্রেন বা বন্ধ থাকা ট্রেনগুলো চালানো যেত। সূত্রমতে এই ১৫টি ইঞ্জিন যদি নতুন আমদানি করতে হয়, তাহলে ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। সর্বশেষ ৩০টি ইঞ্জিন দেশে আনা হয় ৯০০ কোটি টাকা খরচ করে।
নিলামের বিজ্ঞপ্তিতে দেখানো হয় ৮টি অকেজো ইঞ্জিনের আনুমানিক ওজন ৬শত ২৭ দশমিক ৩ মেট্রিক (৬২৭.০৩)। যা ইশ্বরদী ও পার্বতীপুর লোকশেড এবং ডিজেল ওয়ার্কসপে রয়েছে। সেই সাথে খুলনা ইয়ার্ডে পড়ে থাকা তিনটি অকেজো যাত্রীবাহী রেলকোচ নিলাপে তোলা হয়।
এছাড়া ওই নিলামে সৈয়দপুর স্টোর ডিপো ও চিলাহাটি, সৈয়দপুর, লালমনিরহাট, খুলনা পার্বতীপুর ইয়ার্ড এবং ভেড়ামারা, চুয়াডাঙ্গা, মোবারকগঞ্জ, যশোর স্টেশনে পড়ে থাকা রেলের লোহালক্কর হিসাবে আরও বেশকিছু মিশ্র মালামালের লোহা যন্ত্রাংশ নিলামে উঠানো হয়। সব মিলে ৯টি আইটেমে এসবের মোট ওজন দেখানো হয় ২ হাজার ৭১৭ দশমিক ৩২৯ মেট্রিক টন। যারা নির্দিষ্ট ফরমে দরপত্র ফেলেছেন তাদের পরম সংগ্রহ করতে হয় ১ হাজার টাকা করে। তবে কতজন নিলামে অংশ নিয়েছে তা প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগ মতে গত ১৬ এপ্রিল দুপুর ১২টায় রাজশাহীতে দরপত্র খোলা হয়েছিল। অনেকের অভিযোগ লোহার ওজন নিয়েও ঘাপলা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে কল রিসিভ করেনি।
আসিফ