
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তিস্তা নিয়ে বহু রাজনীতি হয়েছে। তিস্তা নিয়ে বিএনপির রাজনীতি হলো যেটা করলে এ দেশের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। এ এলাকার মানুষ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে। এই নদীকে ঘিরে প্রায় তিন কোটি মানুষের ভয়াবহতা ও উপকারিতা ছুঁয়ে যায়। আগামীদিনে বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পেলে খাল খনন কর্মসূচি আমরা যে কোনো মূল্যে শুরু করব করতে হবে আমাদেরকে।
তিনি মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে কেন্দ্রীয় বিএনপির আয়োজনে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, তিস্তা আমাদের অন্যতম প্রায়োরিটি প্রজেক্ট। একইসঙ্গে নদী শাসন বা খনন এটি আমাদেরকে করতে হবে বিভিন্ন কারণেই করতে হয়। তিস্তার পানি মানুষের সমস্যা, কখনো কম পানি কখনো বেশি পানি। এখানকার মানুষের পানির সমস্যা। এটিকে আমাদের একটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যাতে বন্যার ভয়াবহতা থেকে এলাকার মানুষকে রক্ষা করতে পারি।
কৃষক যেন সময়মতো তার প্রয়োজনে পানি পায় এজন্য এ কাজটি আমাদের করতে হবে। আমাদেরকে এ কাজটি করতে হবে কারণ যাতে আমরা পানি ধরে রাখতে পারি। কৃষক শুষ্ক মৌসুমে এই পানি যেন ব্যবহার করতে পারে সেজন্য উদ্যোগ নেবে বিএনপি।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ আয়তনে বড় দেশ না হলেও জনসংখ্যার ভিত্তিতে অনেক বড়। লালমনিরহাটের যেমন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, তেমনি কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়াতেও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। এই বৈচিত্র্যই আমাদের ঐতিহ্য। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখনই দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে, দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
আমরা জানি, গত ১৭ বছর বহু সংস্কৃতিকর্মী কষ্টে জীবনযাপন করেছেন, চিকিৎসার অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময় অনেক সংস্কৃতি কর্মীকে সহায়তা করা হয়েছিল। আমাদের সামগ্রিক চিন্তার মধ্যে রয়েছে এই সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়া। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও সংস্কৃতি ও খেলাধুলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিশুদের বাধ্যতামূলকভাবে এই কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে যাতে তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে বিকশিত হতে পারে।
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে দেশের জনগণের স্বার্থে আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে তারেক রহমান কুড়িগ্রামে বলেছেন, রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। এ দায়িত্ব নিতে হবে জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের।
তিনি বলেন, আমরা সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। কেন না আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের সঙ্গে কমিটমেন্ট করেছি। আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আপনাদেরকে অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। যে কোনো মূল্যে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা জনসমর্থনবিরোধী কাজ করবে তাদের সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের অর্জন বৃথা হয়ে যাবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিট ভার্চুয়ালি কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পত্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন- দেশের জন্য, মানুষের জন্য দেশের মানুষের স্বার্থে দেশের ভালো কিছুর জন্য কেউ কোনো ভালো প্রস্তাব নিয়ে আসলে আমরা তা গ্রহণ করব। এ কারণেই ৩১ দফা প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ দেশের শুধু বেকার সমস্যা নয় সারা পৃথিবীতেই এই সমস্যা। আমরা সরকারে এলে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান করব। এ দেশ ২০ কোটি মানুষে দেশ। এই কোটি মানুষের দেশে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের প্রত্যেককে স্ব স্ব অবস্থান থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আজকে আমি ৩১ দফা আপনাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমার দায়িত্ব পালন করতে আমি সক্ষম হয়েছি। এখন এ দায়িত্ব আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আপনারা এলাকায় গ্রামে গ্রামে ইউনিয়নে ইউনিয়নে ঘরে ঘরে মানুষের কাছে দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেবেন। ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন বর্ণের মানুষ বলতে কিছু নেই আমরা সবাই বাংলাদেশী।
একই দলের হোক অন্য দলের হোক প্রত্যেকের পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। প্রত্যেকটি মানুষের আমাদের সমর্থন প্রয়োজন। আমরা যদি প্রত্যেক মানুষের কাছে সমর্থন অর্জনে সক্ষম হই তাহলে শক্তিশালী হবে আমাদের ৩১ দফার কর্মসূচি। এর আগে তিনি ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মী প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা শুনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উত্তর দেন।