
ছবি: জনকণ্ঠ
জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা চিকাজানী ইউনিয়নে যমুনা নদী তীব্র ভাঙনে, ফসলি জমি বসতভিটা প্রতিনিয়ত গ্রাস করে নিঃস্ব করেছে শত শত মানুষকে। নদী ভাঙনের শব্দে ঘুম আসে না রাতে, আতঙ্কে কাটে দিন। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন যমুনা পাড়ের বাসিন্দারা। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশত বসত বাড়ীসহ ফসলি জমি।
আর ভাঙন হুমকিতে রয়েছে চর ডাকাতিয়া গ্রামের একমাত্র চর ডাকাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ, ক্লিনিক, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। জরুরিভাবে কিছু জিওব্যাগ দিয়ে ডাম্পিং করা হলেও টিকেনি একদিনও। তবে নদী ভাঙন রোধে কাজ করে যাচ্ছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড
২০১১ সাল থেকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার খোলাবাড়ি, হাজারী, মাগুরিহাট, খানপাড়া ও মাঝিপাড়াসহ প্রায় অর্ধশত গ্রাম নদী গর্ভে চলে গেছে এভাবেই। তাই চরডাকাতিয়া এলাকার ভাঙন এখন নতুন কিছু নয়। যমুনার এই রুপ দেখে অভস্ত নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তবে অসময়ের ভাঙনে কয়েকগুন দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয় তাদের।
এবছর ১ মাস ধরে উপজেলার খোলাবাড়ি থেকে চর ডাকাতিয়া হয়ে বড়খাল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙন চলছে। জিও ব্যাগ ফেলেও কাজে না আসায় অবশিষ্ট বসতভিটা, মসজিদ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কিছু স্থাপনা নদীর গর্ভে দ্রুত বিলীনের শঙ্কায় রয়েছে।
নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া সহ সড়কের পাশে দু’চালায় অশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। এছাড়া ফসলি জমি হারিয়ে কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে নদী ভাঙনের পরিবারগুলো ।
ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে টাকিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল, এলজিইডি সড়ক, খানপাড়া জামে মসজিদ, খানপাড়া ঈদগাহ মাঠ, নূরানি কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা, কয়েকটি মাদ্রাসা মসজিদসহ কোটি কোটি টাকার গ্রামীন অবকাঠামো ।
চর ডাকাতিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবু হানিফ বলেন, একসময় আমাদের আবাদি জমি ও বসতভিটা সবই ছিল। সর্বনাশা যমুনার ভাঙনে সব বিলীন হয়ে গেছে। এখন অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকি। দিনমজুরি করে দিনযাপন করছি। এখন অসময়ে ভাঙন শুরু হয়েছে, মাথা গোঁজার শেষ জায়গাটুকুও বুঝি শেষ হয়ে যায়।
যমুনা নদী পাড়ের বাসিন্দা রুমান বলেন,দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙন চলছে। যমুনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে খানপাড়া আদর্শ গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়াও খানপাড়া, মাঝিপাড়া, কাজলাপাড়ার একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব গ্রামের লোকজন জীবিকার তাগিদে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলে গেছে।
জামালপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নকিবুজ্জামান খান জানান, জরুরিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে তীব্র ভাঙন ঠেকাতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়াও নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।
শহীদ