
বনানীতে সোমবার ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চালকদের বিক্ষোভের ছবি
রাজধানীর বনানী-১১ ব্রিজের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালকরা। সোমবার দুপুরে সড়ক অবরোধ করলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনের ছবি বা ভিডিও যারাই তুলতে যান, তাদেরই ধাওয়া করে মারধর করেন তারা। পরে ওই এলাকায় থানা পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। বিকেলে কয়েক মিনিটের মাথায় সেনাবাহিনী অন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
রিক্সা চালানোর দাবিতে তারা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। সোমবারও সড়ক অবরোধ করেন এবং গুলশান লেকে প্যাডেলচালিত দুটি রিকশা ফেলে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালকেরা। একটি রিক্সা ফেলে দেওয়া হয়েছে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজ থেকে। আরেকটি রিক্সা ফেলে দেওয়া হয়েছে ব্রিজের পাশ থেকে।
বিক্ষুব্ধ ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালকেরা বলছিলেন, তারা ব্যাটারিচালিত রিক্সা চালাতে না পারলে অন্যরাও (প্যাডেলচালিত রিক্সা) চালাতে পারবেন না। তাই তারা প্যাডেলচালিত দুটি রিক্সা গুলশান লেকে ফেলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালকেরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। তারা প্যাডেলচালিত রিক্সা চলাচলে বাধা দিচ্ছিলেন।
বনানী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে গুলশান সোসাইটি ঘোষণা করে ওই এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু সোসাইটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি রিক্সাচালকরা। তারা গত কয়েকদিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় রিক্সা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। সোমবার সকালে সোসাইটির লোকজন গুলশানের শেষ মাথায় এবং বনানী এলাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা আটক করছিল। এতে চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে যান। তারা বনানী ১১ নম্বর এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় যারা আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও তুলতে আসেন, তাদের লাঠিপেটা করেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালকরা দুই থেকে তিনজন মোটরসাইকেল চালককে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন।
বনানী থানার পরিদর্শক মেহেদী হাসান বলেন, গুলশান সোসাইটির লোকজন বনানীতে এসে রিক্সাচালকদের বাধা দেন। এই নিয়ে চালকদের মধ্যে খুব উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা বলেন, বনানী থেকে তাদের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি, তাহলে গুলশান সোসাইটির লোকজন কেন এখানে এসে বাধা দেবে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বাকবিত-া হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এ বিষয়ে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোফিজুল ইসলাম বলেন, গুলশানের সড়কে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও গুলশান সোসাইটি। এর প্রতিবাদেই রিক্সাচালকরা আন্দোলনে নেমেছেন।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, সড়ক অবরোধের ফলে ওই এলাকা এবং আশপাশের সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষজন ক্ষিপ্ত হন। একটা পর্যায়ে সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়কে অবস্থান নিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করছেন। বিকেলে সেনাবাহিনী আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিক্সা চলাচল করছে, যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। এমনকি, অনেক পুরানো প্যাডেল রিক্সাও এখন মোটর ও ব্যাটারি বসিয়ে অটোরিক্সায় রূপান্তর হচ্ছে।