ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

ধসে পড়ার শঙ্কায় স্কুলগামী শত শত শিশুসহ পর্যটকরা

কুয়াকাটায় এলজিইডির ডাকবাংলো কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনের জীর্ণদশা

আট বছরেও অপসারণ হয়নি

নিজস্ব সংবাদদতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫

কুয়াকাটায় এলজিইডির ডাকবাংলো কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনের জীর্ণদশা

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়ন্ত্রণাধীন কুয়াকাটার ডাকবাংলো কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনের এখন চরম জীর্ণদশা। বহুতল এ ভবনটির মূল পিলারে ফাটল ধরেছে। পিলারের রড বেরিয়ে গেছে। রডে মরিচা ধরে গেছে। প্রতিনিয়ত পিলার ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে।  ভবনটির পাশ দিয়ে সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে ভবনটিতে ঝাঁকুনি খায়। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাংলো কাম সাইক্লোন শেল্টারটি ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। এ ভবনটির পাশেই লতচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। ফলে শত শত শিশুদের চলাচলে চরম ঝুঁকি রয়েছে। জীর্ণদশার তিনতলা এই ভবনটি এখন পর্যটকসহ প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। ভবনটি অপসারণ করার দাবি শিশু শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষকসহ স্থানীয়দের।

কুয়াকাটার কেরানিপাড়ার বাসিন্দা রাখাইন বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এমং তালুকদার জানান, তার বাবা প্রয়াত বাচিং তালুকদারের দান করা জমিতে ওই সময় সাইক্লোন শেল্টার কাম প্রাইমারি স্কুল করা হয়।

তিনি বলেন,  ‘সম্ভবত-৭৪-৭৫ সালের দিকে এই ভবনটি নির্মাণ করে সাইক্লোন শেল্টার ও প্রাইমারি স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।’ পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এটিকে ডাক বাংলোতে পরিণত করে। এভবনটি ঘেঁষে পূর্বদিকে প্রাইমারি স্কুলের একতলা ভবন রয়েছে। রয়েছে শিশুদের খেলাধুলার মাঠ ও চলাচলের সড়ক। ফলে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পর্যটকসহ স্কুলে আসা শিশুরা ধসে পড়া পলেস্তারা আঘাতে গুরুতর জখম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

কোমলমতি শিশুরা জানায়, তারা ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটির পাশেই মাঠে এখন আর কেউ খেলাধুলা করতে পারছে না। ভবনের পলেস্তারা ধসে পড়ে আহত হওয়ার ভয়ে থাকছে সবাই। ভবনটি অপসারণ করার দাবি শিশুদের। অভিভাবকরাও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, এই স্কুলের দুইদিকে ঘেরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ডাকবাংলোটি। ৭-৮ বছর ধরে ভবনটির ভগ্নদশা। তাই সবসময় ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে সারাক্ষণ ভয়ে থাকতে হয়। তারা শিশুদের সতর্ক করেছেন। এমনকি ভবনঘেষা খোলার মাঠটি পর্যন্ত শিশুরা ব্যবহার করতে পারছে না। বড় ধনের দুর্ঘটনা এড়াতে জীর্ণদশার ভবনটি  অপসারণের দাবি তার। বহুবার বিষয়টি এলজিইডিকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইয়াসীন সাদেক জানান, বিষয়টি নিয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। উপজেলার মাসিক সভায় তিনি বিষয়টি উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেছেন।

এলজিইডির কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভবনটি অপসারণের প্রস্তাব ইতিপূর্বে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে যথাসম্ভব দ্রুত এটি অপসারণের চেষ্টা চলছে। উপজেলার পরবর্তী সভায় বিষয়টি তোলা হবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন তিনি।

সজিব

×