ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

সীতাকুন্ডে ফসলহানির আতঙ্ক

সংস্কারের অভাবে অকেজো আট স্লুইসগেট

সংবাদদাতা, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সংস্কারের অভাবে অকেজো আট স্লুইসগেট

.

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত ৮টি স্লুইসগেট। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে অকেজো স্লুইসগেটগুলো কাজে আসছে না উপজেলার কৃষকদের। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির মাধ্যমে ফসলহানির শঙ্কায় আতঙ্কিত রয়েছেন উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার কৃষক। তবে উপজেলার অকেজো স্লইসগেটগুলো সংস্কারে করণীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী এস এম তারেক।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড আশির দশকের শেষ দিকে চাষাবাদের প্রয়োজনে উপকূলীয় এলাকায় এসব স্লুইসগেট স্থাপন করেছিল। ওই সময় এলাকার খালগুলো প্রতিবছর খনন করা হতো। নব্বই দশক পর্যন্ত এসব স্লুইসগেট রক্ষণাবেক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব পালন করলেও পরবর্তীকালে নিয়োজিত জনবল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর পর থেকে স্লুইসগেটগুলো হয়ে পড়ে অভিভাবকহীন ও পরিত্যক্ত।
সাগরের জোয়ারের পানি যাতে স্লুইসগেট অতিক্রম করে খাল দিয়ে লোকালয়ে আসতে না পারে, সে জন্য প্রত্যেকটি খালের মুখে জোয়ার নিয়ন্ত্রক স্থাপন করার কথা থাকলেও কোনোটিতে এসব স্থাপন করা হয়নি। প্রায় প্রতিটি স্লুইসগেট এখন লোহা চোরদের টার্গেট। যে যেভাবে পারছে লোহার পাত চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এ ,ছাড়া অকেজো এসব স্লুইসগেটের নিচের অংশ মাটিসহ অন্যান্য আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সীতাকুন্ডের কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, মুরাদপুর, বাড়বকুন্ড,  সৈয়দপুর ও বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসনে নির্মিত স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো রয়েছে। ফলে গত বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ রোপা আমন খেতে পচন ধরায় ফলন কম হয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই যদি অকেজো স্লুইসগেটগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করা না হয় তাহলে গত মৌসুমের মতো এবারও রোপা আমন ও আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ জানান, প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে স্লুইসগেটগুলো অকেজো থাকায় সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছে এলাকার স্থানীয় কৃষকরা। জলাবদ্ধতার কারণে অনেক কৃষক চাষ করতে পারে না। স্লুইসগেটগুলো সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীন মনোভাবের কারণে প্রতিবছর এ ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী এস এম তারেক জানান, সীতাকুন্ডের ৮টি স্লুইসগেট সংস্কারের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পয়োজন তা আমাদের নেই। তবে অকেজো এসব স্লুইসগেট সংস্কার ও নতুন স্লুইসগেট নির্মাণের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে অকেজো হয়ে পড়া স্লুইসগেটগুলো পুনরায় মেরামত করে চালু করব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম জানান, সংস্কারের অভাবে অকেজো উপজেলার ৮টি স্লুইসগেট পুনঃসংস্কারে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় খাল খনন শুরু হয়েছে।

প্যানেল

×