ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

প্রত্যেকটি খুন ও গুমের বিচার করতে হবে: সামুয়েল আহমেদ লেনিন

কামরুজ্জামান বাচ্চু, নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ০০:৫২, ২০ এপ্রিল ২০২৫

প্রত্যেকটি খুন ও গুমের বিচার করতে হবে: সামুয়েল আহমেদ লেনিন

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের  প্রত্যেকটি গুম ও খুনের বিচার করতে হবে। এই গুম ও খুনের বিচার না হলে ভূক্তভোগী পরিবারগুলো ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দৈনিক জনকণ্ঠের কাছে দেয়া একান্ত স্বাক্ষাতকারের এ কথা বলেন, বাউফল উপজেলা বিএনপির কনিষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সামুয়েল আহমেদ লেনিন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন,সংস্কার হচ্ছে একটি চলমান প্রক্রিয়া। সময়ের সাথে সাথে জেনারেশনের পরিবর্তনে সংস্কারের বিষয়টাও চলমান থাকে। আমরা সবসময়ই সংস্কারের পক্ষে। ছাত্র জনতা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রত্যাশা এই সংস্কার। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার বলছেন সংস্কার যেহেতু একটি চলমান প্রক্রিয়া সেক্ষেত্রে মৌলিক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে এই সংস্কারের চলমান ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে, এই সংস্কারের চলমান ধারাকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে হবে।

জুলাই আন্দোলনের প্রত্যাশা সম্পূর্ণরূপে পূরণ হয়নি। এখনো ফ্যাসিস্ট এবং তার দোসরদের ষড়যন্ত্র চলমান আছে, দেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত আছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি গণতান্ত্রিক সরকারের প্রয়োজনীতা আমরা অনুভব করছি। এজন্য মৌলিক কিছু সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত একটি নির্বাচন আমরা দাবি করছি।

বাউফলে বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং নিয়ে লেনিন বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একটি গণতান্ত্রিক দল। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতিদ্বন্দিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেই প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে স্বৈরশাসকের যাতা কলে পিষ্ট হয়ে এবং বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আজকে বাউফলে বিএনপি একক শক্তিশালী একটি অবস্থান তৈরি করেছে।

নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণে আপনি হয়তো ভাগে ভাগে কর্মসূচি হতে দেখেছেন কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন সবার নেতা সেই এক ও অভিন্ন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং একজন তারেক রহমান এবং সবার প্রতীক প্রানের  ধানের শীষ। আমি মনে করি নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা পেরিয়ে দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা আস্থাশীল এবং ধানের শীষ প্রতীক এর ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে কোন দ্বিধা বিভক্তি নাই, আমরা আপোষহীন, আমরা ঐক্যবদ্ধ।

তারপরেও আমরা আপনার ভাষায় এই গ্রুপিং নিরসনে কাজ করছি। আমরা কাজ করছি গ্রুপিং এর নামে যেন কোন নোংরামি আমাদের দলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতে না পারে, আমাদের রাজনীতিকে কলুষিত করতে না পারে। তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সকল বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা জোরালোভাবে কাজ করে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ দেখবেন, বাউফলে তারেক রহমনের সিদ্ধান্ত  এবং ধানের শীষের ক্ষেত্রে আমরা এক ও অভিন্ন। তারপরেও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি আমাদের মধ্যেও আছে। আমি মনে করি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী ত্যাগী, নির্যাতিত, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এবং রাজপথের পরীক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো পুনর্গঠন করলে এবং একটি গ্রহণযোগ্য, সবার অংশগ্রহণমূলক সম্মেলনের মাধ্যমে, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় উপজেলা বিএনপির কমিটি হলে আমি মনে করি এই গ্রুপিং থাকবে না। 

বাউফল বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম সৈয়দ আহমদ প্রসংগে লেনিন বলেন, আমার পিতা আলহাজ্ব সৈয়দ আহমেদ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বাউফল উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন, বাউফল সরকারি  কলেজের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন।

একটি বিষয় খেয়াল করবেন, আমার বাবা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদত বরণ পর্যন্ত খুবই স্বল্পকালীন সময়ে চেষ্টা করেছেন বিএনপিকে সুসংগঠিত করার জন্য। একটি নতুন দল, হাতে খুব অল্প সময় তারপরও চেষ্টা করেছেন। এরপরই স্বৈরশাসক হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের সুদীর্ঘ ১০ বছরের শাসন, কারাবরণ সব মিলিয়ে আমি মনে করি যতটুকু সময় রাজনীতি করার জন্য পেয়েছেন বিএনপিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন।

সামুয়েল আহমেদ লেনিন ইংরেজিতে অনার্স এবং এমবিএ শেষ করেই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য মরহুম ডক্টর আর এ গনি স্যারের এপিএস হিসাবে কাজ করেন এবং ২০১৬ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে ছিলেন। এর মাঝে ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিসের সামনে থেকে ডঃ আর এ গনিসহ গ্রেপ্তার হন। ডক্টর গনি  মারা মারা যাওয়ার পর তিনি জাতীয় স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্যা বেগম সেলিমা রহমানের সাথে কিছু সময় কাজ করেন।

অবৈধ উপজেলা নির্বাচনের সময় তার বাড়ির গেটে "ভোট চাহিয়া লজ্জা দিবেন না" শ্লোগান সেটে দিয়ে সারা বাংলাদেশে ভাইরাল হয়েছেন। 

ছাত্র-জনতা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হয়েছেন, ২০ দিন জেলে ছিলেন। পাঁচ আগস্ট পরবর্তী  বিএনপির জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

×