
ছবি: জনকণ্ঠ
চলতি বোরো মৌসুমে পাকা বোরো ধান কাটতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ক্ষেতের ফসল পাকলেও এবছর আশাতীত ফলন পাবেন না বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন জেলার শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত আগৈলঝাড়া উপজেলার কৃষকরা।
সরজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোরো মৌসুমের শুরু থেকে ধান পাকা পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি না হলেও পাকা ফসল কাটার সময় বৈশাখের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিনই কাল বৈশাখের ছোবলের সাথে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টির সাথে শিলা বৃষ্টিতে কৃষক পাকা বোরো ধান কাটা নিয়ে মহা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।
ইতিমধ্যে বৃষ্টির পানিতে ধানের ক্ষেতে পানি জমেছে। কাটা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।
কৃষক প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ‘এবছর পুরা সেচ মৌসুমে এক ফোটাও বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের ছড়া আকারে অনেক ছোট হয়েছে। পাশাপাশি ধানের শিষ কাটা (ছত্রাক) রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক ফসলের ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। শিষ কাটা রোগের কারণে ধানের শস্য পরিপক্ব হয়নি।’
চাষীরা জানিয়েছেন, শিষ কাটা রোগের কারণে তাদের জমিতে ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। বোরো ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো সুফল মেলেনি। কোথাও কোথাও ধানের পুরো ক্ষেত তীব্র খরার সাথে রোগের কারণে পুড়ে যাওয়ায় কোনো ফসল হয়নি।
আবার ফসলের ক্ষেতে বৈশাখি ঝড়ের ছোবলে পাকা, আধা পাকা ধান গাছ মাটিতে পড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিকরা ঝড়ে পড়ে যাওয়া এলোমেলো ধান কাটতে অনীহা প্রকাশ করছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, পিযুষ রায় বলেন, ‘চলতি বছর নয় হাজার চারশ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চাষাবাদ বেশী হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ মেট্রিক টন। যা চাল হিসেবে সাড়ে তিন বা চার মেট্রিক টন।
ধান চাষ ও ফলনে আগৈলঝাড়া উপজেলায় চাহিদার চেয়ে বরাবর খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে জানিয়ে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা ও ছত্রাকের আক্রমণ এবং বর্তমানে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখি ঝড়ে কৃষকের কিছু ধান ও ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। ফলে এ বছর উৎপাদন গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।
সুরাইয়া