ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সাত বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা 

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সাত বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ

ছবি: জনকণ্ঠ

ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে দীর্ঘ দিনেও শেষ হয়নি গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ। দীর্ঘ ৭ বছর কচ্ছপের গতিতে নির্মাণাধীন ভবনটির কাজ শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। 

 

নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলা ও গাফিলতি থাকায় এই একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ হয়ে আছে বলে অভিভাবক ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। তবে কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন করে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গাইবান্ধা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। 

 

জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে, গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বর্ধন কুঠি এলাকায়  ১৫ কোটি ৪৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকা ব্যয়ে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ শুরু করে। ৩ একর জমির উপর ৫ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ও ৪ তলা প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ৭ জুনে কার্যাদেশ প্রদান করে, মেসার্স এসিএল এন্ড এইচ সিও জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। কার্যাদেশে উল্লেখ করা হয় ৫শ’ ৪০ দিন অর্থাৎ ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এই নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। কিন্ত, কচ্ছপ গতিতে নির্মাণ কাজ চালিয়ে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যায়।  

 

ঠিকাদারের এমন উদাসীনতায়, উপজেলার একমাত্র সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘ প্রায় ৭ বছরেও শেষ হয়নি। এতে কারিগরি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার ছেলে-মেয়েরা। পাশাপাশি এ অবস্থায় প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় বিল্ডিংয়ের বিমের রড, খোয়াসহ অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও বিমের বাইরে থাকা অতিরিক্ত রড রোদ-বৃষ্টিতে মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। 

 

বর্ধন কুঠি এলাকার আবুল মিয়া বলেন, ‘সরকার কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্ব দিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এর নির্মাণ কাজ থেমে রয়েছে। একই সাথে নির্মাণ কাজ শুরু করে পার্শ্ববর্তী সাঘাটা উপজেলায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অথচ গোবিন্দগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ভবনটি নির্মাণ কাজ ৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত যদি এই নির্মাণ কাজ শুরু করা না হয়, পরবর্তীতে এই বিমের ওপর আবারো কাজ শুরু করলে ভবনটি টেকসই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।’

 

মাগুরা কেশবপুর গ্রামের, জামিলা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ হওয়ায় পর থেকে নষ্ট হচ্ছে খোয়া, রড, বালুসহ মূল্যবান নির্মাণ সামগ্রী। আবার রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে রডসহ অনেক মূল্যবান সামগ্রী।’

  

বর্ধণ কুঠি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ বলেন, ‘সঠিক তদারকির অভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ দায়ী। তিনি সকল জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালুর দাবি জানান।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী, বেলাল হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য একাধিকবার নোটিশ করলেও কাজ শেষ করেনি। এ কারণে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন করে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’ 

 


 

মনজুর/ সুরাইয়া

×