
ছবি : সংগৃহীত
গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের দুই বিতর্কিত কর্মকর্তা মিথিলা ফারজানা ও অপর্ণা পালের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বেআইনিভাবে সাধারণ পাসপোর্টে পরিবর্তনের ঘটনাটি আলোচিত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হয়, যা তাদের কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের পথ সুগম করে দেয়। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক ডিএম সালাউদ্দিন আহমেদ উক্ত দুই কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারবর্গের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করে সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যুর জন্য ফাইল প্রস্তুত করেন। তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাৎক্ষণিকভাবে এই ফাইল অনুমোদন করেন। লক্ষণীয় যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গ্রহণের আগেই এই সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট নতুন সরকার কর্তৃক তাদের নিয়োগ বাতিল করা হলে তারা কানাডায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। মিথিলা ফারজানা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ৭১ টিভির সাবেক হেড অফ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউন্সিলর পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অন্যদিকে অপর্ণা পাল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন এবং ২০১১ সাল থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ছিলেন।
এই ঘটনায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অস্বাভাবিক গতিতে তাদের পাসপোর্ট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত। সাধারণ পাসপোর্ট পাওয়ার পর তারা কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন যা গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে। নিয়োগ বাতিলের চিঠি পাওয়ার আগেই তারা কর্মস্থল ত্যাগ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন, যা দায়িত্বে অবহেলারই ইঙ্গিতবাহী। এই ঘটনাটি রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে এখানে স্পষ্টতই জবাবদিহিতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এই ঘটনার গভীর তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
সূত্র:https://youtu.be/P6CRegPlg_w?si=pJR9k7KHZQhR_d3f
আঁখি