
একদিকে হাওরে চলছে ফসল কাটার উৎসব, অন্যদিকে কেউ কেউ কাটা ধান মাড়াই করছেন। অনেকে আবার খলায় ধান শুকাচ্ছেন। কৃষকদের শ্রমে-ঘামে উৎপাদিত নতুন ধানের ম-ম গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাওরাঞ্চলে এমন দৃশ্যই কেবল চোখে পড়ে। বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। চাষিদের চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক। তবে এর মধ্যে আছে উদ্বেগও।
আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) থেকে সপ্তাহব্যাপী উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কথা। এমন পূর্বাভাসে উপজেলার কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তাই হাওরে জমির ধান পেকে গেলে দ্রুত সেগুলো কাটার জন্য উপজেলা প্রশাসন, কৃষি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলার ভরাম হাওরের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে।যেকারণে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। রোজ এক মন ধানের বিনিময়ে ও লোক পাওয়া যাচ্ছেনা। আর হারভেষ্টারও (ধান কাটার মেশিন) বিঘা প্রতি নিচ্ছে ২০০০ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা করে। পাশাপাশি মাড়াই মেশিন দিয়েও ধান ভাঙানো করছেন কেউ কেউ। মালেক বলেন, ১০-১৫ দিন সময় পেলে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
চাপাতির হাওরের কৃষক রমেশ দাস বলেন, আকাশে যে মেঘের অবস্থা বিরাজ করছে তাতে করে শিলা-বৃষ্টির আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। সেই সাথে উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে আজ থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে, দ্রুত ধান কাটা শেষ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় আছি বলে জানান এই কৃষক।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সনজীব সরকার বলেন, দিরাইয়ে এ বছর ৩০ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। এসময় তিনি বলেন, যেহেতু বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে, তাই সতর্ক হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে, কেউ যেন আতঙ্কিত না হন। তাঁদের পরামর্শ হচ্ছে কৃষকেরা যেন পাকা ধান জমিতে না রাখেন, দ্রুত কেটে ফেলেন। এবার অন্য বছরের তুলনায় সার্বিক পরিস্থিতি এখনো ভালো আছে। তিনি প্রত্যাশা করেন, কৃষকেরা তাঁদের শ্রমে-ঘামে ফলানো সোনার ধান নির্বিঘ্নে গোলায় তুলতে পারবেন ।
সজিব