
ছবি: জনকণ্ঠ
ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবৈধ শিসা কারখানা গুলো আবার চালু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের করেরগাঁও এলাকায় চলছে শিসা ও ব্যাটারি তৈরির কারখানা। ফলে কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও রাসায়নিক পদার্থে এলাকাবাসী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
আজ ( ১৮ এপ্রিল ) শুক্রবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের করেরগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বন্ধ শিসা কারখানাগুলো পরিচালিত হচ্ছে। তেগুড়িয়া ইউনিয়নের আব্দুলাহপুরের করেরগাঁও এলাকার শিসা কারখানাগুলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কয়েক মাস আগে অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করে দেয়। সেই বন্ধ শিসা কারখানাগুলোই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুনরায় তাদের শিসা গলানোর কাজ চলমান রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘কারখানাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই শিসা পোড়ানো হচ্ছে। এতে করে আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ক্ষেতের ধানের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি গাছপালা ও সবজির ক্ষতি হচ্ছে। অনেকের শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক নানান জটিলতা দেখা দিচ্ছে ।
শিসা কারখানাগুলো বেশ কয়েকবার বন্ধ করলেও এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় এখন আবার চালু করেছে। এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় তারা সুযোগ বুঝে কারখানা পরিচালনা করছে। কেউ কিছু বলার সাহস পায়না। তাদের ক্ষমতার কাছে এলাকার মানুষ অসহায়। কেউ কিছু বললে তাকে বিভিন্ন চাপের মুখে পড়তে হয়। এ জন্য কেউ কিছু বলে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি দোকানি বলেন, ‘ভাই কি বলবো এই শিসা কারখানাগুলোর সাথে বড় বড় নেতারা জড়িত। আগে আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত ছিল। এখন বিএনপির নেতারা জড়িত। সবাইকে তারা টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়। আমরা যতটুকু জানি শিসা কারখানা করতে হলে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি লাগে। আমাদের এলাকায় অনুমতি ছাড়া শিসা কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। এলাকার পরিবেশ রক্ষার্থে এ সব শিসা কারখানা দ্রুত বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ৫ বছর ধরে শিসা গলানোর কারখানা চলছে। কোনো প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে শিসা কারখানা চালাচ্ছে। মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবার চালু করে ফেলে। কি বলবো এখন আমাদের একটাই দাবি, এ কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রিনাত ফৌজিয়া মুঠোফোনে জানান, ‘পরিবেশ দূষণ করে এমন কোনো কারখানা কেরানীগঞ্জে চলতে দেওয়া হবে না। শিসা কারখানাসহ পরিবেশ দূষণ করে এমন সকল কারখানার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে। অবৈধ শিসা কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সুরাইয়া